সেই আর্চারেই ইংলিশদের ইতিহাস

ছবি: ছবিঃ আইসিসি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বিশ্বকাপের জন্য ঘোষিত ইংল্যান্ডের প্রাথমিক দলে জায়গা হয়নি পেসার জফরা আর্চারের। পরে অবশ্য চূড়ান্ত স্কোয়াডে ডাক পান ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে জন্ম নেয়া এই ক্রিকেটার। পুরো বিশ্বকাপে দারুণ খেলে অধিনায়কের আস্থা অর্জন করে নিয়েছিল??ন তিনি।
তাই বিশ্বকাপের ফাইনালে সুপার ওভারে বল করার দায়িত্ব বর্তায় তাঁর ওপর। সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। শিরোপা নির্ধারণী সেই ওভারে লিয়াম প্লাঙ্কেট, মার্ক উডদের চেয়ে আর্চারেই বেশি আস্থা ছিল ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগানের।
তাই তাঁর হাতেই বল তুলে দেন মরগান। সুপার ওভারে ঠিক ১৫ রান খরচ করে কিউইদের আটকে দেন এই পেসার। ম্যাচ টাই হলেও বেশি বাউন্ডারি মারার সুবাদে ম্যাচ জিতে যায় ইংল্যান্ড। এর আগে এমন স্নায়ুযুদ্ধে মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ হয়নি আর্চারের।

কারণ বিশ্বকাপের আগেই পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক হয় তাঁর। বিশ্বকাপ দলে ডাক পাওয়াই তাঁর বড় বিস্ময় ছিল। তাই সুপার ওভারে চাপ ভর করেছিল আর্চারকে। সেই উত্তেজনাতেই প্রথম বলটি ওয়াইড করেন তিনি।
প্রথম কয়েকটি বলে বেশ কিছু রানও খরচা করে ফেলেছিলেন এই পেসার। তবে শেষের দিকে ছন্দে ফিরে ম্যাচ টাই করেছেন তিনি। আর্চার জানিয়েছেন আগেই অনুমান করেছিলেন সুপার ওভারে তাঁকে বল করতে হবে। তাই মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত রেখেছিলেন তিনি।
আর্চার বলেছেন, ‘জানতাম, আমার হাতেই সুপার ওভারের দায়িত্ব এসে বর্তাবে। এবং ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে আমাকে। এমন ইতিহাস হাতছাড়া করতে কে চায়? সে জন্য মানসিকভাবে তৈরিও ছিলাম। তাই স্কোর টাই হয়ে যাওয়ার পরপরই দৌড়ে গিয়ে অধিনায়ককে আরও একবার জিজ্ঞাসা করি যে, আমাকেই শেষ ওভার করতে হবে কি না। জবাবে অধিনায়ক বলেছিলেন, হ্যা, অবশ্যই সুপার ওভার তোমাকেই করতে হবে। আর কেউ আছে কি?’
সুপার ওভারের তৃতীয় বলে আর্চারকে দারুণ এক ছয় হাঁকিয়েছিলেন কিউই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। আর তাতেই ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এরপর মাথা ঠান্ডা রেখে বল করে গেছেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল, ব্যাটসম্যানরা যেন বাউন্ডারি না মারতে পারে। সেই লক্ষ্যে দারুণ সফল হয়েছেন আর্চার। তবে শেষ বলটা ঠিক জায়গায় ফেলতে পারেননি বলে স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে আর্চার বলেন, ‘হ্যা, অবশ্যই। তবে জিমি নিশাম বলকে যখন উড়িয়ে ছয়ে পরিণত করলেন, সত্যি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখে চেষ্টা করি। লক্ষ্য একটাই। বাউন্ডারি যেন না পায় ব্যাটসম্যান। সেই লক্ষ্যে বল করতে গিয়ে শেষ বলটি অবশ্য ঠিক জায়গাতে ফেলতে পারিনি। কিন্তু সেখান থেকে ছয় মারাও সম্ভব ছিল না। যাই হোক, স্বপ্নপূরণ হল, ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলাম।’
বেন স্টোকস-আর্চারের হাত ধরে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে ক্রিকেটের জনকরা। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করে ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন ২৪ বছর বয়সী আর্চার।