বাংলাদেশ ৭ করলেই সেমিফাইনাল শ??ষ পাকিস্তানের

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

লর্ডসে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় পাওয়ার পাশাপাশি সেমিফাইনালে জায়গা করে নিতে হলে পাকিস্তানকে অসম্ভব কিছু একটা করতে হত। মাশরাফি বাহিনীর বিপক্ষে স্কোরবোর্ডে তুলতে হত ৫০০-৬০০ রান, জিততে হত অন্তত ৩১৬ রানে। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে এসে সরফরাজ আহমেদ জানিয়েছিলেন, 'আমাদের ৫০০ বা ৫৫০ রান করতে হবে এবং ৩১৬ রানের ব্যবধানে জিততে হবে'। কিন্তু প্রথমে ব্যাট করা দলটি স্কোরবোর্ডে তুলেছে ৩১৫ রান। সেমিফাইনালে যেতে হলে বাংলাদেশকে ৭ রানের নিচে অল আউট করতে হবে পাকিস্তানকে।
পাকিস্তান যদি ৩৫০ রানের লক্ষ্য দিত তাহলে ৩১১ রানে হারাতে হবে বাংলাদেশকে। সেক্ষেত্রে ৩৯ রানে অল-আউট করে দিতে হবে সাকিব-তামিমদের। আর যদি পাকিস্তান ৪০০ রান করতো তাহলে বাংলাদেশকে ৮৪ রানে অল-আউট করে ৩১৬ রানে জিততে হবে তাঁদের। যেহেতু তাঁরা ৩১৫ রান করেছে তাহলে ৩৯ রানের আগেই বাংলাদেশকে অল আউট করতে হবে তাঁদের। ইমাম উল হকের সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১৫ রান স্কোরবোর্ডে তোলে পাকিস্তান। ৭৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নেন পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে টস জিততেই হত পাকিস্তানকে। ভাগ্য দেবতাও সঙ্গ দিয়েছেন সরফরাজ আহমেদকে। টস ভাগ্যে জয়ী হয়ে কোন চিন্তা না করেই প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ।
ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মনোভাবে ব্যাট করতে হত পাকিস্তানকে। কিন্তু বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দেখা গিয়েছে উল্টো চিত্র। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন এবং মেহেদি হাসান মিরাজের সামনে শুরু থেকেই চাপে ছিলেন দুই ওপেনার ফখর জামান এবং ইমাম উল হক।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে এসে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থুরু এনে দেন সাইফউদ্দিন। ডানহাতি এই পেসারকে অফ সাইডে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্ট অঞ্চলে ক্যাচ দিয়ে বসেন ফখর। মেহেদি হাসান মিরাজের হাতে তালুবন্দি হওয়ার আগে ৩১ বলে ১৩ রান করেন এই ওপেনার।

ফখরকে ফিরিয়ে দিলেও আরেক ওপেনার ইমাম উল হকের সাথে জুটি গড়েন অভিজ্ঞ বাবর আজম। বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে দারুণ ব্যাটিং করে অর্ধশতক তুলে নেন দুজনই। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে সেঞ্চুরির পথে হাটতে থাকেন বাবর।
কিন্তু ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি তুলে নিতে দেননি পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। লর্ডসের মাঠে তাঁকে আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে মাত্র ৪ রানের জন্য। ব্যক্তিগত ৯৬ রানে মোহাম্মাদ সাইফউদ্দিনের বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন তিনি।
বাবর না পারলেও মোহাম্মদ হাফিজের সঙ্গে জুটি গড়ে ৯৯ বলে ক্যারিয়ারের ৭ম সেঞ্চুরি তুলে নেন ইমাম। এরপরের বলেই মুস্তাফিজুর রহমানকে লেগ সাইডে ফ্লিক করতে গিয়ে হিট আউট হয়ে বিদায় নেন তিনি। এক ওভার পরেই মেহেদি হাসান মিরাজকে সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বসেন মোহাম্মদ হাফিজ।
তখনি ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। হারিস সোহেলকে বিদায় করে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শততম উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। চোট পেয়ে সরফরাজ আহমেদ মাঠ ছেঁড়ে গেলে ওয়াহাব রিয়াজ এবং শাদাব খানও দ্রুত বিদায় নেন।
শেষের দিকে ইমাদ ওয়াসিম দলের পক্ষে একাই লড়াই চালিয়ে যান। ইমামকে শেষ ওভারে ৪৩ রানে বিদায় করে নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ। পরের বলেই শাহিন আফ্রিদিকে বিদায় করে ক্যারিয়ারে পঞ্চমবারের মত পাঁচ উইকেট তুলে নেন এই পেসার। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১৫ রানের পুঁজি পায় পাকিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
পাকিস্তানঃ ৩১৫/৯