হারের বৃত্ত ভাঙ্গতে পারবে বাংলাদেশ?

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের পর এবার জয়ের ধারায় ফেরার লক্ষ্যে মাঠে নামছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আজ মঙ্গলবার মাশরাফিদের প্রতিপক্ষ দিমুথ করুনারত্নের শ্রীলঙ্কা। ব্রিস্টলের কাউন্টি গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় অনুষ্ঠিত হবে এই ম্যাচ।
এর আগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২১ রানের জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপর অবশ্য নিউজিল্যান্ড এবং স্বাগতিক ইংল্যান্ডের কাছে টানা দুই ম্যাচে পরাজিত হয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে মাশরাফি বাহিনী।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেটে হারলেও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৬ রানের বড় হারের লজ্জায় পড়তে হয়েছিল তাদের। এবার তাই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামতে উদগ্রীব টাইগাররা। ম্যাচের আগের দিন অধিনায়ক মাশরাফিও একই কথা বলেছেন সংবাদ সম্মেলনে,
'আমি মনে করছি দল ভালো আছে। দুটি হারের পর কিছুটা হতাশ। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর। টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার আগে কিছুই নিশ্চিত বলা যাবে না। ছেলেরা জয়ের জন্য উদগ্রীব। দল বেশ ভালো আছে। আশা করছি পুরো ম্যাচ খেলতে পারবো,' বলেন কাপ্তান।
তবে এই ম্যাচের আগে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। কারণ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময় ঊরুর এক পাশে টান লেগেছিল সাকিবের। এরপর ব্যাথা না কমায় গতকাল অনুশীলন করতে দেখা যায়নি তাঁকে।
যদিও ইনজুরির স্ক্যান রিপোর্টে গুরুতর কিছু ধরা পড়েনি সাকিবের। এরপরও দলের সেরা পারফর্মারকে নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট ঝুঁকি নিতে চাইবে কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন। আর সাকিব না থাকলে বড় ধাক্কাই পেতে হবে বাংলাদেশকে।

তিন ম্যাচে এখন পর্যন্ত দুটি হাফসেঞ্চুরি এবং একটি সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সেরা রান সংগ্রহকারী ব্যাটসম্যানও সাকিব। একই সাথে বল হাতে তিনটি উইকেট শিকার করেছেন এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
শেষ পর্যন্ত সাকিব ফিট না থাকলে লিটন দাস কিংবা সাব্বির রহমানকে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে একাদশে। এছাড়াও ব্রিস্টলের উইকেটে একজন বাড়তি পেসার হিসেবে রুবেল হোসেন বা আবু জায়েদ রাহিকে খেলানোর সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। সেক্ষেত্রে বসতে হবে স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজকে।
এদিকে পরিবর্তন আসবে শ্রীলঙ্কা শিবিরেও। অনুশীলনের সময় আঙ্গুলে আঘাত পাওয়া পেসার নুয়ান প্রদীপের পরিবর্তে আজ খেলার সম্ভাবনা রয়েছে জীবন মেন্ডিসের। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে খেলেছিল লঙ্কানরা একই দল নিয়ে আজ খেলবে তারা।
উল্লেখ্য আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে দুই দল ৪৫টি ম্যাচে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬টি ম্যাচেই জিতেছে লঙ্কানরা। বাকি নয় ম্যাচের ৭টিতে জয় বাংলাদেশের। দুটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।
২০১৫ বিশ্বকাপের পর দুই দলেরই উত্থান পতন হয়েছে। শ্রীলঙ্কা তাদের দাপট অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ দল বড় বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ জিতে নিজেদের শক্তিশালী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
গত বিশ্বকাপের পর মোট ৭টি ম্যাচে একে অপরের বিপক্ষে লড়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ৩টি বাংলাদেশ ও ৩টি ম্যাচ জিতেছে শ্রীলঙ্কা। ১টি ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। সর্বশেষ এশিয়া কাপে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার লঙ্কানদের ১৩৭ রানের ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে মুশফিকুর রহিম খেলেছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রানের ইনিংস।
বিশ্বকাপের আসরে মোট তিনবার শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিটিতেই বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে লঙ্কানরা। যদিও এবারের লড়াইটা হবে সমানে সমানে। শ্রীলঙ্কা নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৬ রানে অল আউট হওয়ার পর ১০ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছিল। দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ৩৪ রানের জয় পেয়েছিল তাঁরা।
বাংলাদেশ একাদশ (সম্ভাব্য)-
তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান/ লিটন কুমার দাস/ সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মেহেদি হাসান মিরাজ/ রুবেল হোসেন, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মুস্তাফিজুর রহমান।
শ্রীলঙ্কা একাদশ (সম্ভাব্য)-
কুশল পেরেরা, দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), লাহিরু থিরিমান্নে, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, থিসারা পেরেরা, ইসুরু উদানা, জীবন মেন্ডিস, সুরঙ্গা লাকমল, লাসিথ মালিঙ্গা।