|| ডেস্ক রিপোর্ট ||

অলরাউন্ড পারফর্মেন্সে বিশ্বকাপে নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। প্রথমে দলের ব্যাটসম্যানদের প্রচেষ্টা এবং পরবর্তীতে বোলারদের পরিকল্পিত বোলিংয়ে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

আগে ব্যাট করে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বড় পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা। জবাবে ৫০ ওভারে আট উইকেটে ৩০৯ রানে থেমেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

বড় লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে আস্থার সঙ্গে খেলার চেষ্টা করেছেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার এইডেন মার্করাম এবং কুইন্টন ডি কক। কিন্তু ব্য??্তিগত ২৩ রানে রান রানআউট হয়ে ফিরেছেন দেখেশুনে খেলতে থাকা ডি কক।

মুশফিকের চাতুর্যপূর্ণ থ্রো তে রান নিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন তিনি। কক রান আউট হয়ে ফেরার পর জুটি গড়ার চেষ্টা করছেন ডু প্লেসিস এবং মার্করাম। ওভার প্রতি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের চাকা সচল রাখছিলেন তাঁরা। 

তারপর ৪৫ রানে ব্যাট করা মার্করামকে বোকা বানিয়ে বোল্ড করেন সাকিব। এরপরে রান রেটে নজর রেখে রান বাড়িয়েছেন অধিনায়ক ডু প্লেসিস। ফিফটিও আদায় করে নিয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত ৬২ রানে থাকা অবস্থায় তাঁকে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন টাইগার স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ।

সাকিব, মিরাজ, মোসাদ্দেক- এই তিন স্পিনারে ক্রমাগত আক্রমণ করে প্রোটিয়াদের চাপে রাখে বাংলাদেশ। দল জেতানোর দায়িত্ব এসে পড়ে ডেভিড মিলারের কাঁধে।

ভালো খেলতে খেলতে মুস্তাফিজের শিকার হয়ে ফিরেছেন মিলার (৩৮)। মিরাজের দুর্দান্ত ক্যাচে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। মিলার ফেরার পর ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন অভিজ্ঞ জেপি ডুমিনি। 

তবে তাঁর সঙ্গী ভ্যান ডার ডাসেনকে ব্যক্তিগত ৪১ রানে বিদায় করার পর ফেহলুকায়োকেও ফিরিয়েছেন পেসার সাইফুদ্দিন। ডুমিনিকে সঙ্গ দেওয়া ক্রিস মরিসকে (১০) বিদায় করেছেন মুস্তাফিজ। 

এরপর ৪৫ রান করা জেপি ডুমিনিকেও বোল্ড করেছেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। দুটি উইকেট সাইফুদ্দিনের ঝুলিতে। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মিরাজ ও সাকিব।

এর আগে ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রোটিয়া দলপতি ফাফ ডু প্লেসিস। ব্যাটিংয়ে নেমে সাবধানী শুরু করেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার।

এই দুজনে যোগ করেছেন ৬০ রান। ১৬ রান করা তামিমকে উইকেটের পেছনে ডি ককের ক্যাচ বানিয়ে আউট করেছেন অ্যান্ডিল ফেহলুকায়ো। এরপর সাকিবকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন সৌম্য।

শুরু থেকে দারুণ খেলতে থাকা সৌম্য ৩০ বলে ৪২ রান করে ক্রিস মরিসের বলে উইকেটের পেছনে ডি ককের দুর্দান্ত ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন। তৃতীয় উইকেটে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম ১৪২ রান যোগ করেন।

সাকিব-মুশফিকের ব্যাটে মাত্র ৩২ ওভারেই দলীয় দ্বিশতকে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৫৪ বলে অর্ধশতক তুলে নেয়া সাকিব ইমরান তাহিরকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরেন ৭৫ রান করে।

তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ১টি ছয় ও ৮টি চারে। সাকিবের বিদায়ের পর মুশফিককে বেশ ভালোই সঙ্গ দিচ্ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। তিনি ২১ রান করে তাহিরের দ্বিতীয় শিকার হন বোল্ড হয়ে।

সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে মুশফিক ফিরেছেন ৭৮ রান করে। ব্যাট হাতে আটটি চার মেরেছেন তিনি। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে দারুণ এক জুটি গড়ে বাংলাদেশকে তিনশ পেরুনো পুঁজি এনে দেন মোসাদ্দেক ও মাহমুদুল্লাহ।

মোসাদ্দেক ইনিংসের শেষ দিকে আউট হয়েছেন ২৬ রান করে মরিসের শিকার হয়ে। এরপর মাহমুদুল্লাহ (৪৬) ও মেহেদী হাসান মিরাজ(৫) অপরাজিত থেকে এমন পুঁজি নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, বিশ্বকাপ ইতিহাসে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। তাছাড়া, ওয়ানডে ফরম্যাটেও টাইগারদের এটি সর্বোচ্চ পুঁজি।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ-

বাংলাদেশঃ ৩৩০/৬ (৫০ ওভার)
(মুশফিক ৭৮, সাকিব ৭৫; ফেহলুকায়ো ২/৫২)
দক্ষিণ আফ্রিকাঃ ৩০৯/৮ (৫০ ওভার)
(ডু প্লেসিস ৬২, ডুমিনি ৪৫; মুস্তাফিজ ৩/৬৭)