promotional_ad

বিশ্বকাপ দল পরিচিতিঃ ইংল্যান্ড

সংগৃহীত
promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


ক্রিকেটের শেষ কথা ইংল্যান্ড বললে ভুল হবে না। ষোড়শ শতাব্দীর শেষ থেকেই ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলা চলে আসছে। আঠারো শতাব্দীতে এসে ক্রিকেট ইংল্যান্ডের জাতীয় খেলা পরিনত হয়। এরপরের দুইশ বছরে ক্রিকেট ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে।


১৮৭৭ সালে ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া প্রথম দুই দল হিসেবে টেস্ট ক্রিকেট খেলে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা... এই তিন দেশ মিলে ১৯০৯ সালে ইমপেরিয়াল ক্রিকেট কনফারেন্স (বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) গঠন করে। ক্রিকেটের সবচেয়ে কুলিন দেশ ইংল্যান্ড বর্তমানে আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দল। টেস্টে চতুর্থ ও টি-টুয়েন্টিতে দ্বিতীয় সেরা দল ইংল্যান্ড। 


কিন্তু ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের কাছে বিশ্বকাপ যেন অমোঘ রহস্য। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটের জন্ম ইংল্যান্ডে, কিন্তু বিশ্বকাপ শিরোপা এখন পর্যন্ত অধরাই রয়ে গেছে। অথচ প্রথম পাঁচটি বিশ্বকাপে দুইবার সেমিফাইনাল ও তিনবার ফাইনাল খেলেছে ইংলিশরা। ২০১০ সালে ছোট ফরম্যাটের ক্রিকেট টি-টুয়েন্টির শিরোপা জয় করলেও ওয়ানডের শিরোপার দেখা পায়নি ইংল্যান্ড।


২০১৫ সালের বিশ্বকাপে এসে ইংল্যান্ড ক্রিকেট অধঃপতনের তলানি খুঁজে পায়। দীর্ঘ সময় ধরে সাদা বলের ক্রিকেটকে প্রাধান্য দিয়ে আসা ইংল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে হেরে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পরে। হয়তো ইংলিশ ক্রিকেটকে পথে ফেরানোর জন্য এমন ফলাফলই আদর্শ ছিল। কারণ ২০১৫ সালের ব্যর্থতা ইংল্যান্ড ক্রিকেটের কর্তা ব্যক্তিদের জাগ্রত করতে সাহায্য করেছে।


ঘুম ভাঙ্গা ইংলিশরা নিজেদের খেলায় আমুল পরিবর্তন এনে গত চার বছরে পেছনের সব ইংল্যান্ড দলকে ছাপিয়ে বিশ্বসেরা দলে পরিনত হয়েছে। অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতায় পারফর্ম করে আসা ইংল্যান্ড অল্প সময়ের ব্যবধানে নিজেদের শিরোপা জয়ের অন্যতম হিসেবে গড়ে তুলেছে। ইয়ন মরগানের ইংল্যান্ড নিজেদের আঙ্গিনায় বিশ্বকাপ জেতার এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না।


জেসন রয়ঃ ২৮ বছর বয়সী ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় টপ অর্ডারে ইংল্যান্ডের অন্যতম ভরসার নাম। বাড়ন্ত স্ট্রাইক রেটের সাথে ধারাবাহিকতার মিশ্রণ রয়কে ভয়ঙ্কর ওপেনিং ব্যাটসম্যানে পরিনত করেছে। ৭৫ ম্যাচ খেলে প্রায় ৪০ গড় ও ১০৫ স্ট্রাইক রেটে ২৮২৪ রানের মালিক জেসন রয় ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ মিশনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের একজন। সাম্প্রতিক ফর্মও রয়ের পক্ষে কথা বলছে।


জো রুটঃ বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন জো রুট ইংলিশ ব্যাটিং অর্ডারের দেয়াল স্বরূপ। হার্ড হিটারে ভরপুর ইংল্যান্ড ব্যাটিং লাইন আপে ইনিংস আগলে রাখার দায়িত্ব পালন করে থাকেন ওয়ানডে ক্রিকেটে পাঁচ হাজার রানের মালিক জো রুট। ২০১৯ বিশ্বকাপ স্মরণীয় করতে হলে রুটের ব্যাটে রান আবশ্যক।



promotional_ad

জস বাটলারঃ সাদা বলের ক্রিকেটে ইংল্যান্ডকে ভয়ঙ্কর দলে পরিনত করার পেছনে বড় অবদান জস বাটলারের। লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করতে বাটলারের নামের পাশে রয়েছে ৮টি সেঞ্চুরি ও ১৮টি ফিফটি। ১২৯ ম্যাচ খেলে ৪২ গড় ও ১১৯ স্ট্রাইক রেটে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রানের মালিক বাটলার। বিশ্বকাপে উইকেটের পেছনে ও সামনে বাটলার হতে পারেন ইংল্যান্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়।


বেন স্টোকসঃ ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ ভাগ্য অনেকাংশে নির্ভর করবে অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের ফর্মের ওপর। বর্তমানে ফর্মে না থাকলেও নিজের দিনে যে কোনো প্রতিপক্ষকে একা হাতে হারাতে সক্ষম স্টোকস। ৮২ ওয়ানডেতে দুই হাজার রানের পাশাপাশি ৬৩ উইকেটের মালিক বেন স্টোকস।


আদিল রশিদঃ ইংলিশ বোলিং আক্রমণের অন্যতম সদস্য লেগ স্পিনার আদিল রশিদ। মিডেল ওভারে প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে উইকেট বের করে আনায় যথেষ্ট সফল এই বাঁহাতি স্পিনার। গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিক পারফর্মেন্স দিয়ে আসা রশিদ ৮৬ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ১৩০ উইকেট শিকার করেছেন। বিশ্বকাপে ইংলিশ পেস বোলারদের চেয়ে আদিল রশিদের পারফর্মেন্স মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।


জনি বেয়ারস্টোঃ জেসন রয়ের সাথে জনি বেয়ারস্টোর ওপেনিং জুটি বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ওপেনিং জুটি বলা যায়। আরেক বিধ্বংসী ওপেনার অ্যালেক্স হেইলসকে হটিয়ে ওপেনিংয়ে জায়গা পাকা করেছেন বেয়ারস্টো। গত দুই বছর ধরে অবিশ্বাস্য ফর্মে আছেন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেটে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১০৭, গড় ৪৭। এখন পর্যন্ত ৬৩ ম্যাচ খেলে ৭ সেঞ্চুরি ও ৯ ফিফটি হাঁকিয়েছেন তিনি।


ইয়ন মরগানঃ ইংল্যান্ড ক্রিকেটের বদলে যাওয়ার রূপকার ইয়ন মরগান। দলকে নেতৃত্ব দেয়ার সাথে পারফর্মার হিসেবেও ইংলিশ ক্রিকেটে উদাহরণ সৃষ্টি করে আসছেন মরগান। ওয়ানডে ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ২২২ ওয়ানডে খেলা মরগানের নামের পাশে প্রায় ৭ হাজার রান রয়েছে। এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে শিরোপা জয় করতে হলে বড় ভূমিকা রাখতে হবে মরগানকে।


জফরা আর্চারঃ ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ দলে জফরা আর্চারের অন্তর্ভুক্তি ইংল্যান্ডের শক্তি কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিতে বাধ্য। ইংলিশ কাউন্টির পর বিপিএল, বিগ ব্যাশ হয়ে আইপিএলে নিজেকে প্রমাণ করা এই তরুণ ফাস্ট বোলার সহজাত গতি ও নিয়ন্ত্রণ যে কোনো ব্যাটসম্যানদের রাতের ঘুম হারাম করতে বাধ্য। এখন পর্যন্ত মাত্র ৩টি ওয়ানডে খেলেছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরীক্ষিত না হলেও বিশ্ব জুড়ে টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা বিশ্বকাপের মত বড় মঞ্চে কাজে লাগাতে পারবেন তিনি।


লিয়াম প্ল্যাঙ্কেটঃ ৮২ ওয়ানডে ম্যাচ খেলে ১২৪ উইকেটের মালিক লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট ইংল্যান্ড ক্রিকেটের আমুল পরিবর্তনে অন্যতম সঙ্গী। ২০০৫ সালে টেস্ট ও ওয়ানডে অভিষেক হওয়া প্ল্যাঙ্কেটের ক্যারিয়ারের পালে হাওয়া লাগে ২০১৪ সালে এসে। গত কয়েক বছর ধরে দারুণ সফল তিনি।


লিয়াম ডওসনঃ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার লিয়াম ডওসনকে শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে জায়গা দেয়া হয়। ইংলিশ জার্সিতে তিনটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও ছয়টি টি-টুয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে যথেষ্ট ধারাবাহিক এই অলরাউন্ডারকে বিশ্বকাপের ব্যবহার করতে চাইবে ইংলিশরা।



মার্ক উডঃ  ২৯ বছর বয়সী মার্ক উড বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের অন্যতম শক্তির জায়গা হতে পারে। এখন পর্যন্ত ৪১ ওয়ানডে খেলা মার্ক উডের নামের পাশে ৪৩ উইকেট রয়েছে। জফরা আর্চারের পর ইংল্যান্ড দলে একমাত্র গতিময় বোলার তিনি। বিশ্বকাপে মার্ক উডকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করতে চাইবে ইংল্যান্ড।


মইন আলিঃ মইন আলি ইংল্যান্ড ব্যাটিং লাইন আপের শক্তি ও বৈচিত্র্য দুটোই বৃদ্ধি করে আসছেন। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে মিডেল অর্ডারে এসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার সামর্থ্য রাখেন তিনি। ৯৬ ওয়ানডে খেলে ১৬৯১ ওয়ানডে রান করেছেন তিনি, স্ট্রাইক রেট ১০৩। সেঞ্চুরি আছে তিনট???। মইনের অফ স্পিনও যথেষ্ট কার্যকরী। নামের পাশে ৭৯টি ওয়ানডে উইকেট আছেন তাঁর।


টম কারানঃ তরুণ টম কারান ইংল্যান্ডের ভবিষ্যৎ তারকাদের একজন। মাত্র ১৭ ওয়ানডে খেলে ২৭ উইকেটের মালিক তিনি। ছোট্ট ক্যারিয়ারে একবার পাঁচ উইকেট ও চার উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ডেথ ওভারে স্লোয়ার বল ও ইয়র্কারে ব্যাটসম্যানকে কাবু করতে পটু কারানকে বিশ্বকাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে।


জেমস ভিন্সঃ মাত্র ১০ ওয়ানডে খেলা জেমস ভিন্স বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলের স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন। মূলত টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হলেও ইংল্যান্ড দলের নিয়মিত টপ অর্ডার ভেঙ্গে একাদশে জায়গা করে নেয়া কঠিন হবে ভিন্সের জন্য। তবে ইনজুরি বা অন্য কোনো কারণে দুয়াল খুলে যেতে পারে ভিন্সের। এখন পর্যন্ত একটি ফিফটি হাঁকিয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেটে। তবে লিস্ট এ ক্রিকেটে ভিন্সের রেকর্ড যথেষ্ট সমৃদ্ধ।


ক্রিস ওকসঃ ব্যাট বলে ইংল্যান্ডের সম্পদ বলা যায় ক্রিস ওকসকে। নতুন বলে সিম মুমমেন্টে পটু ওকসকে লোয়ার অর্ডারে দ্রুত রান তুলতেও দেখা যায়। একের ভেতর দুই সার্ভিস দেয়া ওকস এখন পর্যন্ত  ৮৮ ওয়ানডে খেলে এক হাজার রান করেছেন, উইকেট শিকার করেছেন ১২৬টি। যে কোনো দলের জন্য ওকস হবে আদর্শ আট নম্বরের ব্যাটসম্যান যে কিনা বল হাতেই আগুনঝরা স্পেল দিতে পারেন। 



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball