আত্মবিশ্বাসী উইন্ডিজের সামনে নড়বড়ে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
আজ মঙ্গলবার ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ দল। ডাবলিনের ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব মাঠে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে ৪টায়।
গত বছরের ডিসেম্বরে উইন্ডিজ ও বাংলাদেশ শেষবার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। এরপর অবশ্য উইন্ডিজ দল অনেকটাই বদলে গেছে।
শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাঁরা ৫ ম্যাচের সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র করেছে। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ১৯৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে নিজেদের শক্তি জানান দিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। স্বভাবতই বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে আত্মবিশ্বাসী উইন্ডিজদের দেখা যাবে।
ত্রিদেশীয় সিরিজের দলে বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অনেকে না খেললেও নিজেদের বেঞ্চের শক্তি দেখিয়েছে দলটি। বিশেষ করে ওপেনার শাই হোপের ফর্ম মাশরাফিদের ভাবাতে বাধ্য। এর আগে ঘরের মাঠে শাই হোপের একার সেঞ্চুরির কাছে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।
তবে বাংলাদেশকে প্রতিপক্ষ ও কন্ডিশন, দুটির সাথেই লড়াই করতে হবে। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা অবশ্য কন্ডিশন ও আয়ারল্যান্ডের ঠাণ্ডাকে অজুহাত হিসেবে দেখাতে চান না।
‘আমার কাছে মনে হয় না এই ঠান্ডা আমরা মানিয়ে নিতে পারবো। এখানে যারা থাকে তারাও ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই করে। তাই ঠান্ডার সময়ে এটা মানিয়ে নেয়ার সুযোগ নেই। মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে। ঠান্ডায় খেলা মূলত এটা অজুহাত ছাড়া আর কিছু হবে না। তাই এটাকে মানিয়ে নিয়েই খেলতে হবে।'

এছাড়া উইন্ডিজদের তুলনায় বাংলাদেশ দলের চিত্রটি পুরোপুরি ভিন্ন। তাঁরা ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে এসেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে হারের তাজা স্মৃতি নিয়ে। তবে নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ দলে ছিলেন না সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান।
ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরু থেকেই খেলবেন এই তারকা। প্রস্তুতি ম্যাচেই নিজের ব্যাটিং ঝলক দেখিয়েছেন সাকিব। খেলেছেন ৫৩ রানের ইনিংস। ব্যাটে-বলে এই অলরাউন্ডারই হয়ে উঠতে পারেন উইন্ডিজ দলের আতঙ্ক।
তবে আজকের ম্যাচে দলের ওপেনিং পজিশনে তেমন কোনো পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা নেই। তামিম ইকবালের সঙ্গে জুটি বাঁধবেন লিটন দাস। রবিবার আয়ারল্যান্ড উলভসের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি ম্যাচেও ওপেন করেছিলেন তাঁরা।
তিন নম্বরে দ্রুত রান তোলার জন্য দায়িত্ব পালন করবেন আগ্রাসী সৌম্য সরকার। নিজের প্রিয় পজিশন চার নম্বরেই খেলবেন উইকেট রক্ষক মুশফিকুর রহিম। এছাড়া সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ থাকছেন পাঁচ এবং ছয় নম্বরে।
সাত নম্বরে হার্ড হিটারের ভূমিকা পালন করতে দেখা যাবে সাব্বির রহমানকে। তবে প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যর্থ হওয়ায় এই ম্যাচে তাঁর পরিবর্তে ওয়ানডে অভিষেক হতে পারে ইয়াসির আলি চৌধুরীর। কিন্তু অভিজ্ঞতার বিচারে সাব্বিরকেই এগিয়ে রাখবে টিম ম্যানেজম্যান্ট।
উইকেট থেকে স্পিনাররা সুবিধা পেলে একাদশে থাকছেন মেহেদি হাসান মিরাজ, কিন্তু পেস বান্ধব উইকেট হলে অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনই হবেন অধিনায়কের প্রথম পছন্দ।
পেস বোলিং ইউনিটে নেতৃত্ব দিবেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, গতির ঝড় তুলবেন পেসার রুবেল হোসেন। আর বাতাস থাকলে এই ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে অভিষেক হতে পারে আবু জায়েদ রাহির। বাতাসের সাহায্যে বল সুইং করানোর ক্ষমতা আছে বলেই স্কোয়াডে রাখা হয়েছে তাঁকে।
আলো ছড়াতে পারেন যারাঃ
শেই হোপ (উইন্ডিজ): আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের উদ্বোধনী ম্যাচে ব্যাট হাতে বিধ্বংসী রূপে ছিলেন উইন্ডিজ দলের ওপেনার শেই হোপ। তিনি আইরিশদের বিপক্ষে ১৫২ বলে ১৭০ রানের ইনিংস খেলেছেন।
জন ক্যাম্পবেলকে নিয়ে গড়েছেন ৩৬৫ রানের ইনিংস। তাছাড়া, গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে হোপই ছিলেন সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। বাংলাদেশের বিপক্ষে হোপের ব্যাটিং গড় ৯৮। এই রানের ধারা মঙ্গলবারের ম্যাচেও ধরে রাখতে চাইবেন তিনি।
তামিম ইকবাল (বাংলাদেশ): ২০১৯ সালে মাত্র তিনটি ওয়ানডে খেলেছেন তামিম। তবে ব্যাট হাতে পারফর্মেন্স করতে পারননি। অবশ্য উইন্ডিজের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে তিনিই বাংলাদেশের সর্বাধিক রান সংগ্রাহক ছিলেন। চলতি বছর ফর্মে না থাকলেও, বিশ্বকাপের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজ দিয়েই ফর্মে ফিরতে চাইবেন তিনি।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশঃ তামিম ইকবাল, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান/ইয়াসির আলি চৌধুরী, মেহেদি হাসান মিরাজ/ মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মাশরাফি বিন মর্তুজা, রুবেল হোসেন, আবু জায়েদ রাহি/তাসকিন আহমেদ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সম্ভাব্য একাদশঃ জন ক্যাম্পবেল, শেই হোপ (উইকেটরক্ষক), ড্যারেন ব্রাভো, জ্যাসন হোল্ডার (অধিনায়ক), জোনাথান কার্টার, সুনীল আমব্রিস, রস্টন চেজ, অ্যাশলে নার্স, কেমার রোচ, শেল্ডন কর্টরেল, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।