জিতেও শিরোপা স্বপ্ন পূরণ হল না রুপগঞ্জের

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে আজ ডিপিএলের ম্যাচে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৮৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে নাঈম ইসলামের লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জ। তবে এই জয়ের পরও শিরোপা জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়নি তাদের। কারণ বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আজ শেখ জামালের বিপক্ষে ৯ উইকেটের বিশাল জয় দিয়ে শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে আবাহনী।
এই ম্যাচের আগে সমান ২৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে ছিল আবাহনী ও রূপগঞ্জ। তবে রুপগঞ্জের বিপক্ষে গত ম্যাচে বড় জয় পাওয়ায় রান রেটে এগিয়ে ছিল মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল।
সেকারণে আজ শেখ জামালের বিপক্ষে মাত্র একটি জয় প্রয়োজন ছিল আবাহনীর। অপরদিকে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আবাহনীর দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো রুপগঞ্জকে। শেখা জামালের বিপক্ষে তারা পরাজিত হলে তবেই শিরোপা স্বপ্ন পূরণ হতো রুপগঞ্জের।
আজকের ম্যাচটিতে রুপগঞ্জের ছুঁড়ে দেয়া ৩২৮ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪২.১ ওভারে মাত্র ২৩৯ রানে অলআউট হয় প্রাইম ব্যাংক। তবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনার আনামুল হক বিজয় এবং রুবেল মিয়ার ব্যাটে শুভ সূচনা করেছিল প্রাইম ব্যাংক।
এই দুই ব্যাটসম্যান উদ্বোধনী জুটি গড়েছিলেন ৬২ রানের। তবে এরপর ২৬ রান করে মোহাম্মদ শহিদের প্রথম শিকার হয়ে ফিরতে হয় অধিনায়ক বিজয়কে। উইকেটরক্ষক জাকের আলির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। বিজয় ফেরার পর পরই প্রাইম ব্যাংক শিবিরে শুরু হয় ব্যাটসম্যানদের আশা যাওয়ার মিছিল।
রুপগঞ্জ বোলারদের দাপুটে বোলিংয়ের সামনে এরপর নাহিদুল ইসলাম ছাড়া আর কেউই সেভাবে রান করতে পারেননি। ৫৭ বলে ৭৪ রানের ঝড়ো একটি ইনিংস খেলেছেন ২৫ বছর বয়সী ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন ওপেনার রুবেল মিয়া এবং ৩৩ রান এসেছে অলরাউন্ডার আরিফুল হকের ব্যাট থেকে। রুপগঞ্জের পক্ষে মাত্র ২২ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেছেন পেসার মোহাম্মদ শহিদ। যেখানে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন নাবিল সামাদ এবং মুক্তার আলি।
এর আগে ম্যাচটির শুরুতে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে প্রাইম ব্যাংকের সামনে ৩২৮ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জ। ব্যাট হাতে রুপগঞ্জের পক্ষে দারুণ পারফর্ম করেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। খেলেছেন ১৩০ বলে ১৩৬ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস।
তাঁর এই ইনিংসটিই মূলত দলকে বড় জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল। এরই সাথে এক ডিপিএলের আসরে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ৮০০ রানের মাইলফলকে পা রেখেছেন নাঈম। তাঁর আগে এবারের ডিপিএলে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৮০০ রানের কোটা পার করেছেন প্রাইম দোলেশ্বরের সাইফ হাসান।
এদিকে এই ম্যাচে নাঈম ছাড়াও দারুণ ব্যাট করেছেন ওপেনার মেহেদি মারুফ এবং জাতীয় দলের ক্রিকেটার মমিনুল হক। দুই ব্যাটসম্যানই পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরির দেখা। মারুফ ৫৪ এবং মমিনুল ৫২ রান করেছেন।
রুপগঞ্জ ব্যাটসম্যানদের সামনে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি প্রাইম ব্যাংকের বোলাররা। মোহর শেখ, আব্দুর রাজ্জাক, নাহিদুল ইসলাম এবং নাঈম হাসান পেয়েছেন ১টি করে উইকেট।
এদিন সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচটিতে শুরুতে টসে জিতে রুপগঞ্জকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন প্রাইম ব্যাংক অধিনায়ক আনামুল হক বিজয়। এরপর খেলতে নেমে দুই ওপেনার মারুফ এবং নাঈম ১২৯ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন।
১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মারুফকে আউট করে এই জুটি ভেঙ্গেছিলেন অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। এরপর মমিনুলকে সাথে নিয়ে ১১৪ রানের আরেকটি বিশাল জুটি গড়তে সক্ষম হন ১৯ বছর বয়সী নাঈম। ৩৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মমিনুকে সাজঘরে পাঠিয়ে জুটিটি ভাঙ্গেন নাহিদুল ইসলাম।
পরবর্তীতে নতুন ক্রিজে আসা অধিনায়ক নাঈম ইসলামের সাথে ব্যাটিং করতে থাকেন ওপেনার নাঈম। তবে তাঁর সাথে মাত্র ১৭ রানের জুটি বাঁধতে পেরেছিলেন তিনি। যদিও তাঁর আগেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে নিয়ে গিয়েছেন ভালো অবস্থানে।
২৬০ রানের মাথায় সেঞ্চুরিয়ান নাঈমকে ফিরিয়ে দিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন প্রাইম ব্যাংকের ডানহাতি স্পিনার নাঈম হাসান। পরবর্তীতে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জাকের আলি ২৭ রান করে আউট হলে অধিনায়ক নাঈমের অপরাজিত ২৪ ও মুক্তার আলির ২২ রানে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩২৭ রানের বিশাল পুঁজি দাঁড়া করায় রুপগঞ্জ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
লিজেন্ডস অফ রুপগঞ্জঃ ৩২৭/৪ (৫০ ওভার) (নাঈম-১৩৬*, মারুফ-৫৪; রাজ্জাক-১/৫৮, নাহিদুল-১/৫২)
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবঃ ২৩৯/১০ (৪২.১ ওভার) (নাহিদুল-৭৪, রুবেল-৩৭; শহিদ-৪/২২, নাবিল-২/৪১)