রুবেল-সাইফউদ্দিনের আগুনঝরা বোলিং

ছবি: ছবিঃ ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনীঃ ২১৬/৯ রান (৫০ ওভার) জহুরুল ১২১ (১৪৭ বল)*, সাইফউদ্দিন ৫৫ (৮০ বল) আবু নাসের ৩/৩৯, হারুন মুরাদ ২/৫৪
বিকেএসপিঃ ৩৩/২ (১২ ওভার) আমিনুল ইসলাম ৮*, রাতুল খান ১৪*
রুবেল-সাইফউদ্দিনের আগুনঝরা বোলিংঃ মাঝারি পুঁজি দাঁড় করিয়েও বিকেএসপিকে চাপের মধ্যে রাখতে সক্ষম হয়েছে আবাহনী। দুই ওপেনিং বোলার সাইফউদ্দিন ও রুবেল হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে সহজে রান তুলতে সক্ষম হয়নি বিকেএসপির দুই ওপেনার রাতুল খান ও পারভেজ হাসান। ষষ্ট ওভারে রুবেলের করা ফুল লেন্থের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে সরাসরি বোল্ড হন পারভেজ। ১৯ বলে ৫ রান করেন তিনি। তিন নম্বরে নেমে টিকতে পারেননি মাহমুদুল হাসান জয়। সাইফউদ্দিনের ব্যাক অব দ্য লেন্থের বলে কট বিহাইন্ড হন মাহমুদ।
২১৬ রানে আবাহনীঃ ইনিংসের শেষ ওভারে কাভার ও থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে স্কুপ করে তিনটি চার হাঁকিয়ে আবাহনীর স্কোর ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ২১৬ রানে নিয়ে যান জহুরুল। ১৪৭ বলে ১২১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

আসা যাওয়ার মিছিলঃ এক প্রান্ত আগলে রেখে জহুরুল লড়াই করে গেলেও বাকি ব্যাটসম্যানরা তাঁকে সঙ্গ দিতে পারেনি। জাভেদ ও রুবেল হোসেন বড় শট হাঁকানোর চেষ্টায় টাইমিংয়ে গড়বড় করে ৩০ গজও পার করতে পারেননি। রান আউট হয়েছেন সানজামুল। ৪৭তম ওভারে ২০০ রান স্পর্শ করা আবাহনী ২ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে বসে।
জহুরুলের সেঞ্চুরিঃ ব্যক্তিগত ৯৫ রানের সময় রান নিতে গিয়ে রান নিয়ে পায়ের পেশিতে টান পড়ে জহুরুলের। কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ রেখে ফিজিও'র প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফের ব্যাট করে যান। এরপরের তিনটি সিঙ্গেল নিয়েছেন প্রায় হেটে হেটে। ৯৯ রানে থাকা অবস্থায় হাসান মুরাদের বাঁহাতি স্পিনকে স্কুপ করে বাউন্ডারি ছাড়া করে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জহুরুল। ১৩৩ বলে ১০টি চার ও ১টি ছয়ে লিস্ট 'এ' ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি।
জুটি ভাঙ্গলেন নওশাদঃ অর্ধশত হাঁকানো সাইফউদ্দিনের ইনিংস দীর্ঘ হতে দেননি বাঁহাতি স্পিনার নওশাদ ইকবাল। বড় শটের খোঁজে থাকা সাইফ স্টেপ আউট নওশাদের লেন্থ বলকে মাঠ ছাড়া করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন। জহুরুলের সাথে ১১২ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ৫৫ রানে লং অফ বাউন্ডারিতে থাকা মুকিদুলের তালুবন্দি হতে হয় তাঁকে।
জুটির সেঞ্চুরি, সাইফউদ্দিনের অর্ধশতকঃ শুরুতে সময় নিয়ে খেলার প্রতিদান পেয়েছেন সাইফউদ্দিন। উপরের সারির চার ব্যাটসম্যান দ্রুত বিদায় নেয়ার পর দলের বিপদে ব্যাট করতে নেমে জহুরুলের সাথে জুটি বেঁধে অসাধারণ ব্যাটিং করেন তিনি।
স্পিনারদের বাজে বলে রান তুলে চাপে ফেলেছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ বিকেএসপিকে। ৩৯তম ওভারে জুটির সেঞ্চুরি পূর্ণ করে জহুরুল ও সাইফউদ্দিন। পরের ওভারেই নওশাদ ইকবালের বলে কাভারে চার হাঁকিয়ে ৭৩ বলে অর্ধশত পূর্ণ করেন সাইফউদ্দিন। দায়িত্বশীল ইনিংসে ৬টি চারের মার ছিল।
জহুরুলের প্রতিরোধঃ ৫৩ রানে উপরের সারির চার উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া আবাহনীর হয়ে লড়াই চালিয়ে যান ওপেনার জহুরুল। সাইফউদ্দিনকে নিয়ে প্রান্ত বদল করে খেলে রানের চাকা সচল রাখেন তিনি। একই সাথে ২৯তম ওভারে এসে ৭৯ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি।
স্পিনে ধরাশায়ী মোসাদ্দেক-সাব্বিরঃ ১৩তম ওভারে এসে অফস্পিনার স্পিনারের তুহিনের বলে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন মোসাদ্দেক। ২৩ বলে ১৩ রান যোগ করে আউট হন তিনি। মোসাদ্দেকের বিদায়ে দলের বিপদে ব্যাট হাতে মাঠে নামা সাব্বির রহমানও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। হাসান মুরাদের দুর্দান্ত বাঁহাতি স্পিনে সরাসরি বোল্ড হন তিনি। মিডেল স্ট্যাম্প বরাবর পড়ে টার্ন করে বের করা যাওয়া বলে জবাব ছিল না ২ রান করা সাব্বিরের কাছে।
জহুরুল ও মোসাদ্দেকের প্রতিরোধঃ ২৪ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা আবাহনীর হাল ধরার চেষ্টা করেন ওপেনার জহুরুল ও কাপ্তান মোসাদ্দেক। ব্যাটিং নতুন বলে সুমন ও নাসেরের দুই প্রান্ত থেকে ছয় ওভারের স্পেল কোন ঝুঁকি না নিয়েই পার করেন এই দুই ডানহাতি।
জোড়া আঘাতঃ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের ফল পেতে বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বিকেএসপিকে। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে সুমন খানের বলে আমিনুল ইসলামের ক্যাচে পরিনত হন সিলভা। ১৫ বলে ৭ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। পরের ওভারেই আঘাত হানেন নতুন বলে সুমনের সঙ্গী আবু নাসের। তিন নম্বরে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে শুন্য রানে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন তিনি। ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতেও ১ রানের ব্যবধানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে আবাহনী।
সতর্ক সূচনাঃ মিরপুরের প্রথম সকালে ব্যাট করা সহজ নয়। বিকেএসপির দুই পেসার আবু নাসের ও সুমন খানের আঁটসাঁট বোলিং আবাহনীর দুই ওপেনারের শ্রীলঙ্কান কুশাল সিলভা ও জহুরুল ইসলামকে হাত খুলতে দেন নি। দুই ব্যাটসম্যানই দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করেছেন।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে আবাহনীঃ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগের (ডিপিএল) ম্যাচে গতবারের চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিকেএসপি।