কেমন ছিল আগের পাঁচ ফাইনাল?

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
শুক্রবার পর্দা নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) ষষ্ঠ আসরের। এবারের আসরে ফাইনালে মুখোমুখি হবে শিরোপা প্রত্যাশী দুই দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবং ঢাকা ডাইনামাইটস। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
এবারের আসর ছাড়া এর আগে বিপিএলে আরও ৫টি আসর হয়েছে। যার মধ্যে ৪ বার একাই অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা জিতেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। আর ১বার শিরোপা জিতেছেন সাকিব আল হাসান।
দল হিসেবে সবচেয়ে বেশী শিরোপা জয়ের রেকর্ডটি অবশ্য ঢাকা ফ্র্যাঞ্চাইজির অধীনে। ২টি ভিন্ন নামে খেলে ৩বার ট্রফি জিতেছে তাঁরা। ১ বার করে শিরোপা ঘরে তুলেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবং রংপুর রাইডার্স।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের সবার প্রথম আসরটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১২ সালে ২৯শে ফেব্রুয়ারি। সেবার ফাইনালে ব্র্যাড হজের বরিশাল বার্নার্সকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স।
অধিনায়ক ব্র্যাড হজের ৭০ রানের উপর ভর করে ৭ উইকেটে ১৪০ রান স্কোরবোর্ডে তুলেছিল বার্নার্সরা। জবাবে ইমরান নাজিরের ৪৩ বলে ৭৫ এবং এনামুল হক বিজয়ের ৪৯ রানের উপর ভর করে ৮ উইকেট হাতে রেখেই মাত্র ১৫.৪ ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ঢাকা।
সেবার ঢাকার হয়ে বিপিএল খেলেছিলেন শহীদ আফ্রিদি, ইমরান নাজির, সাঈদ আজমলরা। বরিশালের দলে ছিলেন আহমেদ শেহজাদ-ব্র্যাড হজরা। দুর্দান্ত পারফর্ম করে খুলনা রয়্যালসের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান হয়েছিলেন টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়।

দ্বিতীয় আসরে মাশরাফি'র পাশাপাশি সাকিব আল হাসানকেও দলে টেনেছিল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। দ্বিতীয় আসরেও মাশরাফির নেতৃত্বে ফাইনাল খেলেছিল দলটি, প্রতিপক্ষ ছিল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের চিটাগাং কিংস।
এনামুল হক বিজয়ের ৫৮ এবং সাকিব আল হাসানের ৪১ রানের উপর ভর করে চিটাগাংকে ১৭৩ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় ঢাকা। জবাবে মাত্র ১২৯ রানেই গুটিয়ে যায় রিয়াদ বাহিনী। টানা দ্বিতীয় বার শিরোপা জয়ের স্বাদ পায় ঢাকা।
দিনটি ছিল ১৯ই ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সাল। সেবার ঢাকার হয়ে বিপিএল খেলেছিলেন কাইরন পোলার্ড, তিলকারত্নে দিলশানের মত তারকারা। কিংসদের দলে ছিলেন জেসন রয়, রবি বোপারারা। দ্বিতীয় আসরেও টুর্নামেন্ট সেরা হন সাকিব।
তৃতীয় আসর শুরু হয়েছিল এর দুই বছর পর। বিপিএলে আগের আসরে মোহাম্মদ আশরাফুলদের ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারিকে পেছনে ফেলে ২০১৫ সালে নতুন নামে যাত্রা শুরু করে ঢাকা। কুমিল্লা নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে নাম লিখায় বিপিএলে। যেখানে মাশরাফিকে অধিনায়ক হিসেবে দলে নেয় তাঁরা। আর দলকে এক বিন্দুও হতাশ করেন নি তিনি।
অধিনায়ক হিসেবে নিজের হ্যাট্রিক শিরোপা জয়ের পাশাপাশি এবং কুমিল্লাকে তাঁদের প্রথম আসরেই শিরোপা এনে দেন তিনি। ১৫ই ডিসেম্বর ২০১৫, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলসকে ৩ উইকেটে হারায় কুমিল্লা।
প্রথমে ব্যাট করে রিয়াদের ৪৮ এবং শাহরিয়ার নাফিসের ৪৪ রানের উপর ভর করে ৪ উইকেটে ১৫৬ রানের পুঁজি পায় বরিশাল। ব্যাট করতে নেমে ইমরুল কায়েসের ৫৩ এবং অলক কাপালির অপরজিত ৩৯ রানের উপর ভর করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কুমিল্লা।
সেবার বরিশালের দলে ছিলেন মোহাম্মদ সামি-কেভন কুপাররা আর কুমিল্লায় ছিলেন আহমেদ শেহজাদ, আসার জাইদি, ড্যারেন স্টিভেন্সের মত ক্রিকেটাররা। এবারের আসরে প্রথম বিদেশী ক্রিকেটার হিসেবে টুর্নামেন্ট সেরার খেতাব জয় করেন আসার জাইদি।
চতুর্থ আসরে ঢাকা ডাইনামাইটস শিরোপা জিতলেও নতুন কোন অধিনায়ক শিরোপা জয়ের স্বাদ পায় সেবার। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ড্যারেন স্যামির রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে ৫৬ রানের জয় পায় ঢাকা।
৯ই ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে, প্রথমে ব্যাট করে এভিন লুইসের ৪৫ এবং কুমার সাঙ্গাকারার ৩৬ রানের উপর ভর করে ৯ উইকেটে ১৫৯ রানের পুঁজি পায় ঢাকা। জবাবে মাত্র ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় রাজশাহী।
সেবার ঢাকার দলে এভিন লুইস, কুমার সাঙ্গাকারার পাশাপাশি আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভোরাও ছিলেন। রাজশাহীর হয়ে খেলেছিলেন ড্যারেন স্যামি, জেমস ফ্র্যাঙ্কলিনরা। সেবার খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নির্বাচিত হন টুর্নামেন্ট সেরা।
আর পঞ্চম আসরে আবারও শিরোপা জয়ের স্বাদ পান মাশরাফি বিন মর্তুজা। অধিনায়ক হিসেবে নিজের চতুর্থ শিরোপা ঘরে তোলেন তিনি। রংপুরকে এনে দেন তাঁদের প্রথম শিরোপা। অবশ্য সেবার রংপুরের কাপ জয়ের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল ক্রিস গেইলের।
প্লে-অফ এবং ফাইনালে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে একাই জিতিয়েছিলেন এই ক্যারিবিয়ান। তাঁর অপরাজিত ১৪৬ রানের উপর ভর করে ১ উইকেটে ২০৬ রানের পুঁজি পায় রংপুর। জবাবে মাত্র ১৪৯ রান তুলতে সক্ষম হয় ঢাকা।
সেবার রংপুরের হয়ে বিপিএল মাতিয়েছিলেন ক্রিস গেইল, জন্সন চার্লস, ব্র্যান্ডন ম্যাককালামের মত তারকারা। আর ঢাকার দলে ছিলেন কুমার সাঙ্গাকারা, কাইরন পোলার্ড, শহীদ আফ্রিদিরা। টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছিলেন ক্রিস গেইল।