নয় বছর পর উইজডেন ট্রফি জিতলো উইন্ডিজ

ছবি: গেটি ইমেজ

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
অ্যান্টিগা টেস্টে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছে স্বাগতিক উইন্ডিজ। মাত্র তিন দিনের এই জয়ে এরই মধ্যে ২-০ তে সিরিজটি নিজেদের করে নিয়েছে ক্যারিবিয়ানরা। পাশাপাশি ২০০৯ সালের পর এই প্রথম ‘দ্য উইজডেন ট্রফি’ জয়ের কীর্তি গড়েছে তারা।
স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন ৬ উইকেটে ২৭২ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিলো উইন্ডিজ। ইংলিশদের থেকে ৮৫ রানে এগিয়ে থেকে খেলতে নেমে আজ মাত্র ৩৪ রান যোগ করেছে তারা। ফলে সর্বমোট ১১৯ রানের লিড পায় স্বাগতিক দল।
জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে যথারীতি উইন্ডিজ বোলারদের তোপের মুখে পড়ে মাত্র ১৩২ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারী ইংল্যান্ড। ফলে ক্যারিবিয়ানদের সামনে লক্ষ্য নির্ধারিত হয় ১৪ রানের।
আর এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে ২.১ ওভারে কোনও উইকেট না হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় জ্যাসন হোল্ডারের দল। দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট এবং জন ক্যাম্পবেল অপরাজিত থাকেন যথাক্রমে ৫ ও ১১ রানে।
এদিন ইংলিশ শিবিরে ত্রাসের সঞ্চার করেছিলেন তিন পেসার কিমার রোচ, জ্যাসন হোল্ডার এবং আলজারি জোসেফ। তবে ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নামানোর মূল কারিগর হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে রোচ এবং অধিনায়ক হোল্ডারকে। কেননা প্রতিপক্ষের ৮টি উইকে???ই দুই পেসার ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
হোল্ডার ৪টি উইকেট নিতে খরচ করেছেন মাত্র ৪৩ রান। যেখানে রোচ ৫২ রান দিয়েছেন। ডান হাতি পেসার জোসেফও ছিলেন হন্তারকের ভূমিকায়। জো ডেনলি এবং জো রুটের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট দুটি তুলে নিতে মাত্র ১২ রান গুনেছেন তিনি।
ক্যারিবিয়ান পেসারদের তান্ডবের সামনে সর্বোচ্চ ২৪ রান করতে পেরেছিলেন শুধু ইংলিশ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জস বাটলার। এছাড়াও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ রান এসেছে ওপেনার জো ডেনলির ব্যাট থেকে। আর কেউই উল্লেখযোগ্য রান করতে পারেননি।

এর আগে টেস্টটির শুরুতে টসে জিতে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক হোল্ডার। এরপর ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৮৭ রানে অলআউট হয়েছিলো ইংল্যান্ড। জনি বেয়ারস্টো এবং মঈন আলি পেয়েছিলেন অর্ধশতকের দেখা। এছাড়াও ৩৫ রান করেছিলেন উইকেটরক্ষক বেন ফোকস।
সেই ইনিংসেও বল হাতে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছিলেন ৩০ বছর বয়সী পেসার রোচ। ৩০ রানে ৪ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি। ৪৫ রান খরচায় ৩ উইকেট তুলে নিয়ে তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছিলেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। অপরদিকে আলজারি জোসেফ ২টি এবং হোল্ডার ১টি উইকেট পেয়েছিলেন।
ইংলিশদের এই রানের জবাবে খেলতে নেমে দ্বিতীয় দিন ৬ উইকেটে ২৭২ রান নিয়ে খেলা শেষ করেছিলো স্বাগতিক উইন্ডিজ। ৮৫ রানের লিডটিকে এরপর ১১৯ রানে বৃদ্ধি করে ৩০৬ রানে অলআউট হয় তারা।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ড্যারেন ব্রাভো পেয়েছেন অর্ধশতকের দেখা। ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট, জন ক্যাম্পবেল এবং শাই হোপ খেলেছেন চল্লিশঊর্ধ্ব রানের ইনিংস। এই তিন ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে এসেছে যথাক্রমে ৪৯, ৪৭ ও ৪৪ রান।
স্বাগতিক ইংল্যান্ডের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছিলেন স্টুয়ার্ট ব্রড এবং মঈন আলি। আর বেন স্টোকস ও জেমস অ্যান্ডারসন পেয়েছেন ২টি করে উইকেট। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট শিকার করায় ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন উইন্ডিজ পেসার কিমার রোচ।
উল্লেখ্য সিরিজের প্রথম টেস্টেও সফরকারী ইংল্যান্ডকে দাঁড়াতে দেয়নি উইন্ডিজরা। সেবার ম্যাচটি ৩৮১ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতে নিয়েছিলো তারা। এবার এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয়ের উল্লাসে মাতলো হোল্ডার বাহিনী।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংসঃ ১৮৭/১০ (৬১ ওভার) (মঈন- ৬০, বেয়ারস্টো- ৫২; রোচ ৪/৩০, গ্যাব্রিয়েল-৩/৪৫)
উইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ ৩০৬/১০ (১৩১ ওভার) (ব্রাভো- ৫০, ব্র্যাথওয়েট-৪৯; ব্রড-৩/৫৩, মঈন-৩/৬২)
ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১৩২ অলআউট (৪২.১ ওভার) (বাটলার-২৪, ডেনলি-১৭; হোল্ডার-৪/৪৩ রোচ-৪/৫২)
উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১৭/০ (২.১ ওভার) (ক্যাম্পবেল-১১*, ব্র্যাথওয়েট- ৫*; অ্যান্ডারসন-০/১০, ব্রড-০/৬)
ফলাফল- উইন্ডিজ ১০ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা- কিমার রোচ (৮ উইকেট)