ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবালো বাংলাদেশ

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব ১৯ দলকে হোয়াইটওয়াশ করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দল। আজ সিরিজের শেষ ওয়ানডেটি জিতে লজ্জা এড়ানোর সুযোগ ছিলো ইংলিশদের সামনে। কিন্তু কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচেও ৬৩ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে তারা। ফলে ধবল ধোলাইয়ের লজ্জায় পড়তে হলো সফরকারীদের।
বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ২৬৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪৬.৩ ওভারে মাত্র ২০৩ রানে অলআউট হয়েছে ইংলিশরা। সফরকারীদের পক্ষে ওপেনার বেন চার্লসওর্থ ছাড়া কেউই সেভাবে সামর্থ্য প্রমাণ দিতে পারেননি। ব্যাটসম্যানদের আশা যাওয়ার মিছিলেও এক প্রান্ত আগলে রেখে শতক হাঁকিয়েছেন চার্লসওর্থ।
আসাদুল্লাহ হিল গালিবের বলে আউট হওয়ার আগে ১১৫ রান করতে পেরেছিলেন তিনি। ৪৫তম ওভার পর্যন্ত ক্রিজে আশার প্রদীপ হয়ে ছিলেন এই ইংলিশ। কিন্তু এরপরেও শেষ পর্যন্ত দলকে জয় এনে দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান এসেছে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান লুক হলমানের ব্যাট থেকে। আর চার নম্বরে নামা লুইস গোল্ডসর্থি খেলেছেন ২১ রানের ইনিংস। বাদ বাকি সব ব্যাটসম্যানই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবথেকে সফল বোলার ছিলেন আসাদুল্লাহ হিল গালিব। ৪.৩ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৭ রান খরচায় ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। ইংলিশ শিবিরে যথেষ্ট ত্রাস সৃষ্টি করেছিলেন এই তরুণ। আর তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন তৌহিদ হৃদয়, শামিম হোসেন এবং রুহেল আহমেদ। এই তিন বোলারই দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
প্রথম ইনিংসের বিবরণঃ

এর আগে এই ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব ১৯ দলকে ২৬৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। আর চ্যালেঞ্জিং এই লক্ষ্য দাঁড়া করানোর পেছনে মূল কৃতিত্ব ছিলো ওপেনার মাহমুদুল হাসান, মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শামিম হোসেন এবং লোয়ার অর্ডারে খেলতে নামা শাহাদাত হোসেনের।
মাহমুদুল ৫৭ রান করে আউট হলেও ৭২ রানের অনবদ্য ইনিংস এসেছে শামিমের ব্যাট থেকে। অপরদিকে শেষের দিকে খেলতে নেমে ৫১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন শাহাদাত। এছাড়াও ২৩ রান করেছেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান।
ইংল্যান্ডের পক্ষে সবথেকে সফল বোলার ছিলেন জর্জ হিল। ৮ ওভার বোলিং করে ২৪ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেছেন এই ডান হাতি পেসার। অপরদিকে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন জ্যাক মরলি এবং অ্যাডাম ফিঞ্চ।
আজ ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার তানজিদ হাসান এবং মাহমুদুল হাসানের ব্যাটে ৩৪ রানের জুটি পেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরেই তানজিদকে জর্জ বল্ডারসেনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন বেন চার্লসওর্থ। ফলে প্রথম ব্রেক থ্রু পায় ইংল্যান্ড।
প্রথম ওয়ানডেতে ৮০ রানের দারুণ একটি ইনিংস খেলা মোহাম্মদ পারভেজ হোসেনও আজ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। মাত্র ১৩ রান করে জর্জ হিলের বলে বোল্ড আউট হয়েছেন তিনি। দলীয় ৬২ রানের মাথায় ফিরেছেন তিনি।
দলীয় ৬৯ রানের মাথায় জর্জ হিলের বলে উইকেটরক্ষক জর্ডান কক্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয়কে। ২ রান করে আউট হতে হয়েছে তাঁকে। মাত্র ৪টি বল খেলতে পেরেছেন তিনি।
এরপর মাহমুদুল হাসান এবং শামিম হোসেনের ব্যাটে বড় স্কোরের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে বাংলাদেশ। ওপেনার মাহমুদুল দারুণ একটি অর্ধশতক হাঁকিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ৯০ বলে ৫৭ রানের দায়িত্বশীল একটি ইনিংস খেলে অ্যাডাম ফিঞ্চের বলে জর্ডান কক্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাঁকে।
দলীয় ১৫৭ রানের মাথায় অর্ধশতক হাঁকানো মাহমুদুল হাসান ফিরে গেলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান শামিম হোসেন। অধিনায়ক আকবর আলিকে সাথে নিয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা করেন তিনি। পাশাপাশি তুলে নেন ব্যক্তিগত অর্ধশতকও। কিন্তু ১৮৯ রানের মাথায় ইংলিশ বোলার জ্যাক মরলি স্ট্যাম্প ভেঙ্গে দেন তাঁর।
শামিম ফিরলে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান শাহাদাত হোসেন। দারুণ দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে ৫১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৬৬ রানের বড় পুঁজি পায় বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ঃ ২৬৬/৯ (৫০ ওভার) (শামিম-৭২, মাহমুদুল- ৫৭*; হিল-৩/৩৭, মরলি- ২/৪৬)
ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব ১৯ঃ ২০৩/১০ (৪৬.৩ ওভার) (চার্লসওর্থ- ১১৫, হলমান-৩০; গালিব-৪/১৭, হৃদয়-২/৩১)
টসঃ বাংলাদেশ (ব্যাটিং)