ধোনির কাছে সিরিজ হারলো অস্ট্রেলিয়া

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
যুবেন্দ্র চাহালের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর মহেন্দ্র সিং ধোনির অসাধারণ ব্যাটিং ভারতকে এনে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয়। মেলবোর্নে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে স্বাগতিকদের সাত উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে নিজেদের করে নিয়েছে ভিরাট কোহলির ভারত।
২০১৬ সালের পর এটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতের দ্বিতীয় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। গত সিরিজে ধোনির অধীনে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছিল ভারতীয়রা। তবে এবার অধিনায়ক না হলেও ব্যাট হাতে দলের জয়ে বড় অবদান রেখেছেন তিনি।
বলা যায়, অভিজ্ঞ ধোনির কাছেই হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১৮ সালে কোন অর্ধশতক না পাওয়া ধোনি যেন ২০১৯ সালে ভিন্নরূপে দেখা দিয়েছেন। টানা তিন ম্যাচে তিন অর্ধশতক, ভারতের সিরিজ জয়ে ধোনির অবদান অপরিসীম।
ধোনির ব্যাটিংয়েই অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ২৩১ লক্ষ্য অনায়াসেই তাড়া করেছে ভারত। ভারতের সাবেক এই অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন কেদার যাদব। চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১২১ রান তুলেছিলেন দুইজন। অপরাজিত থেকে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন ধোনি-কেদার। ১১৪ বলে ৮৭ রানে ধোনি এবং ৫৭ বলে ৬১ রানে অপরাজিত ছিলেন কেদার।
কিন্তু শুরুতে হোঁচট খেয়েছিল ভারত, দলীয় ১৫ রানেই ওপেনার রোহিত শর্মাকে হারিয়েছিল তারা। পিটার সিডলের বলে ক্যাচ দিয়ে ৯ রানে ফিরেছেন তিনি। এরপর ৪৪ রানের জুটি গড়েন ধাওয়ান এবং কোহলি। মার্কাস স্টয়নিসের বলে ২৩ রানে ফিরেছিলেন বাঁহাতি ওপেনার ধাওয়ান এবং কোহলি ফিরেছিলেন ৪৬ রানে।

এরপর আর কোন উইকেট পড়তে না দিয়ে ম্যাচ জিতিয়ে নেন ধোনি এবং কেদার। যদিও ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই ম্যাক্সওয়েলের হাতে জীবন পেয়েছিলেন ধোনি। ইনিংসের শেষের দিকে অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের হাতেও জীবন পেয়েছিলেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ধোনি।
ভারতকে জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিল ৪৯.২ ওভার পর্যন্ত। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছিলেন সিডল, ঝেই রিচার্ডসন এবং স্টয়নিস।
টসে হেরে ব্যাটিং পাওয়া অস্ট্রেলিয়ারও শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় আট রানেই ওপেনার অ্যালেক্স ক্যারিকে হারায় তারা। বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি অধিনায়ক ফিঞ্চও, ১৪ রান করে ফিরেছেন তিনি।
দলের হাল ধরেন উসমান খাওয়াজা এবং শন মার্শ। ৭৩ রানের জুটি গড়ে দলকে কিছুটা শক্ত অবস্থানে এনে দেন তাঁরা। এরপর এক রানের ব্যবধানে উইকেটে থিতু থাকা দুই ব্যাটসম্যানকেি হারায় অস্ট্রেলিয়া। ৩৯ রান করা মার্শের বিদায়ের পর বিদায় নেন খাওয়াজাও। এক ওভারেই দুইজনকে ফেরান লেগ স্পিনার চাহাল।
মিডেল অর্ডারে ভিত গড়েন পিটার হ্যান্ডসকম্ব। কিন্তু চাহালের বোলিংয়ের সামনে টিকতে পারেননি দলের বাকি সব ব্যাটসম্যানরা। ১০ রানে স্টয়নিস, ১৬ রানে রিচার্ডসন এবং ৮ রানে অ্যাডাম জাম্পাকে ফেরান চাহাল। অজিদের হয়ে অর্ধশতক হাঁকানো একমাত্র ব্যাটসম্যান হ্যান্ডসকম্বকে ৫৮ রানে ফেরান তিনি। ভারতের হয়ে একাই ছয় উইকেট নেন চাহাল।
শেষ পর্যন্ত ৪৮.৪ ওভারে সব'কটি উইকেট হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা, ২৩০ রানে শেষ হয়ে যায় তাদের ইনিংস। দুর্দান্ত বোলিং করায় ম্যাচ সেরার পুরষ্কার পান চাহাল। পুরো সিরিজ জুড়ে ব্যাট হাতে দারুণ ছিলেন ধোনি, সিরিজ সেরা হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়াঃ ২৩০ অলআউট (৪৮.৪ ওভার)
(হ্যান্ডসকম্ব ৫৮, মার্শ ৩৯; চাহাল ৬/৪২)
ভারতঃ ২৩৪/৩ (৪৯.২ ওভার)
(ধোনি ৮৭*, কেদার ৬১*; রিচার্ডসন ১/২৭)