ক্রিকেট বদলে দিয়েছে বাংলাদেশের ইংল্যান্ড বধ

ছবি: ছবি- গ্যাটি ইমেজ

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ক্রিকেটকে বদলে দেয়া ২৫টি ঘটনা বাছাই করেছে ইএসপিএন ক্রিকইনফো। যার মধ্যে একটি ২০১৬ সালের ঢাকা টেস্টে বাংলাদেশের ইংল্যান্ড বধ। ক্রিকইনফোর মতে, অ্যালিস্টার কুকের শক্তিশালী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় ক্রিকেটকে বদলে দিয়েছে।
ঢাকা টেস্টের আগে বাংলাদেশ দল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নয়বার মুখোমুখি হয়েছিল। দশমবারের দেখায় টেস্ট জয়ের দেখা পায় বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৮ রানের জয়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মত উইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েকে ছাড়া বড় কোন দলকে হারানোর গৌরব অর্জন করে বাংলাদেশ।
ওয়ানডে ফরম্যাটে বড় দলের সাথে চোখে চোখ রেখে লড়াই করার সামর্থ্য অর্জন করলেও টেস্ট ক্রিকেটের বাংলাদেশ বাইরের দুনিয়ার কাছে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের মধ্য দিয়ে সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশকে উপমহাদেশের নতুন শক্তি হিসেবে তুলে ধরে। এই জয় বাংলাদেশকে যে কোন দলকে ঘরের মাঠে হারানোর আত্মবিশ্বাস দেয়।

একই সাথে ক্রিকেট কর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণও করে। যার ফলে অপেক্ষাকৃত কম টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশ দল সামনের বছর গুলোতে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতে থাকে।
মার্ক বুচার, ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটসম্যান ও ক্রিকইনফোর ক্রিকেট বিশ্লেষক বাংলাদেশের এই জয়কে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা মুহূর্ত হিসেবে দেখেন। 'বাংলাদেশ অনেক বছর অপেক্ষা করছে, বড় দল গুলোকে হারানোর জন্য।
'ইংল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল, যদি না হয় তাহলে সেরা তিন সফল দল গুলোর একটি। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় অপ্রত্যাশিত কিছু নয়। তবে এই টেস্ট জয় উদযাপনের ক্ষেত্রে কোনো কমতি ছিল না।'
ঐতিহাসিক ম্যাচটিতে বাংলাদেশ দল আগে ব্যাট করে তামিম ইকবালের সেঞ্চুরিতে ২২০ রান করে অল আউট হয়। একা তামিমের ব্যাটের থেকেই আসে ১০৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। উইকেটের চরিত্র বুঝেই দ্রুত রান তোলায় মন দিয়ে সফল হন তামিম।
জবাবে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের মেহেদি হাসান মিরাজের অফ স্পিনের সামনে পড়তে হয়। মিরাজ একাই শিকার করেন ছয় উইকেট। রুটের ৫৬ রানের সাথে ক্রিস ওকসের ৪৬ ও আদিল রাশিদের ৪৪ রানে ভর করে ইংল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ২৪৪ রান।
ইংল্যান্ড লিড নিলেও বাংলাদেশ দল দ্বিতীয় ইনিংসে এসে প্রথম ইনিংসের মতই আগ্রাসী ব্যাটিং করে যায়। সাড়ে চার রান রেটে বাংলাদেশ দল ২৯৬ রান করে অল আউট হয়। তামিম, ইমরুল কায়েস, রিয়াদ ও সাকিব... সবাই মাঝারি মানের স্কোর করতে সক্ষম হন। সর্বোচ্চ ৭৮ রান আসে ইমরুলের ব্যাট থেকে।
২৭৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টেস্টের তৃতীয় দিনের চা পান বিরতির আগে কোন উইকেট না হারিয়ে ১০০ রান তুলে নেয় ইংলিশরা। বাংলাদেশের সামনে তখন আরেকট হারের হাতছানি। কিন্তু চা পান বিতরির পর অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে।
দুই প্রান্ত থেকে সাকিব ও মিরাজ ইংল্যান্ড ব্যাটিং লাইন আপে ধস নামান। মিরাজ ছয়, সাকিব চার উইকেট... এক সেশনে ১০ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড অল আউট ১৬৪ রানে। দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেয়া মেহেদি ঐতিহাসিক জয়ে ম্যাচ সেরা হন।