promotional_ad

লঙ্কানদের উড়িয়ে কিউইদের ইতিহাস রচনা

ছবি- সংগৃহীত
promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে সফরকারী শ্রীলঙ্কাকে ৪২৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ইতিহাস রচনা করেছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। আজ টেস্টের পঞ্চম দিন লঙ্কানদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিলো ৪২৯ রান। কিন্তু ৪ উইকেট হাতে নিয়ে খেলতে নেমে মাত্র ৫ রান যোগ করতেই অলআউট হয়ে যায় তারা। ফলে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সবথেকে বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে সক্ষম হয় কিউইরা। শুধু তাই নয়, পুরো টেস্ট ইতিহাসেই জয়ের দিক থেকে এটি অষ্টম বৃহত্তম।


এই জয়ের মাধ্যমে ১-০ তে সিরিজও নিজেদের করে নিয়েছে কেন উইলিয়ামসনের দল। এদিন সকালে ৬ উইকেটে ২৩১ রান নিয়ে পঞ্চম দিন শুরু করেছিলো সফরকারীরা। খেলতে নেমেছিলেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান দিলরুয়ান পেরেরা এবং সুরঙ্গা লাকমল। কিন্তু এরপরেই দুই কিউই পেসার নিল ওয়াগনার এবং ট্রেন্ট বোল্টের তোপের মুখে পড়তে হয় লঙ্কানদের।


২৩৩ রানের মাথায় লাকমলের স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে সাজঘরে পাঠান বোল্ট। পরবর্তীতে স্কোরবোর্ডে কোনও রান যোগ করার আগেই পেরেরাকে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ বানিয়ে আউট করেন ওয়াগনার। কিউই পেসারের শর্ট বলটি পুল করতে চেয়েছিলেন পেরেরা। কিন্তু ঠিক মতো ব্যাটে বলে না হওয়ায় ক্যাচ আউট হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। 


মাত্র তিন রান যোগ করার পর আবারও লঙ্কান শিবিরে আঘাত হানেন ট্রেন্ট বোল্ট। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে দুশমন্ত চামিরাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘরে পাঠান তিনি। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ইনজুরির কারণে খেলতে অপারগ থাকায় মাত্র ১২ মিনিটেই গুঁটিয়ে যায় লঙ্কানদের ইনিংস। কিউইদের পক্ষে নিল ওয়াগনার ৪৮ রানে ৪টি এবং ট্রেন্ট বোল্ট ৭৭ রান খরচায় ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন। অপরদিকে ৬১ রানে ২ উইকেট পেয়েছেন আরেক পেসার টিম সাউদি। 


এর আগে নিউজিল্যান্ডের ছুঁড়ে দেয়া ৬৬০ রানের পাহাড়সম লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ৯ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বসেছিলো শ্রীলঙ্কা। এরপর দীনেশ চান্দিমাল এবং কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ২৪ রানে তৃতীয় দিন শেষ করে তারা। এরপর চতুর্থ দিন প্রথম সেশনে চান্দিমাল এবং মেন্ডিস মন্থর ব্যাটিংয়ে যোগ করেন মাত্র ৬৫ রান।


লাঞ্চ বিরতির পর শত রানের জুটি গড়ার মাধ্যমে নিজেদের ব্যক্তিগত অর্ধশতকও তুলে নেন তাঁরা। তবে ৬৭ রান করা মেন্ডিসকে ম্যাট হেনরির হাতে ক্যাচ বানিয়ে এই জুটি ভাঙ্গেন নিল ওয়াগনার। এর কিছুক্ষণ পর দুর্দান্ত এক বাউন্সারে চান্দিমালকেও সাজঘরের পথ দেখান তিনি। 



promotional_ad

অবশ্য চান্দিমাল ফিরে যাওয়ার আগে আরেকটি ধাক্কা খায় শ্রীলংকা। দলীয় ১৫৫ রানে ২২ রান করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস হ্যামস্ট্রিং ইনজুরিতে পড়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। এরপর আর ব্যাট করতে নামেন নি তিনি। চার উইকেট হারিয়ে বসা শ্রীলংকাকে আরও বিপদে ফেলেন টিম সাউদি।


ডিকওয়েলাকে ফিরিয়ে নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথটা আরও সহজ করে দেন তিনি। রোশেন সিলভাকে নিজের তৃতীয় উইকেট হিসেবে তুলে নিয়ে চতুর্থ দিনই ম্যাচে জয় তুলে নেয়ার চেষ্টায় লড়তে থাকে কেন উইলিয়ামসনের দল। কিন্তু শেষ বেলায় সুরঙ্গা লাকমল এবং দিলরুয়ান পেরেরার প্রতিরোধে আর কোন উইকেট না হারিয়ে ৬ উইকেটে ২৩১ রান নিয়ে দিন শেষ করে শ্রীলংকা। পেরেরা ২২ এবং লাকমাল ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন চতুর্থ দিন শেষে। 


এই টেস্টের শুরুতে টসে জিতে নিউজিল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান দলপতি দীনেশ চান্দিমাল। এরপর ব্যাটিং করতে নেমে লঙ্কান পেসারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে মাত্র ১৭৮ রানে অলআউট হয়েছিলো কিউইরা। সুরঙ্গা লাকমল একাই নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। এছাড়াও লাহিরু কুমারা পেয়েছিলেন ৩টি উইকেট।


প্রথম ইনিংসে এক টিম সাউদি ছাড়া কিউইদের পক্ষে আর কেউ অর্ধশতকের দেখা পাননি। ৬৮ রানের একটি ঝলমলে ইনিংস খেলেছিলেন এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান। এছাড়াও ৪৬ রান এসেছিলো উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বিজে ওয়াটলিংয়ের ব্যাট থেকে। 


নিউজিল্যান্ডকে এত কম রানে গুঁড়িয়ে দিয়েও অবশ্য সুবিধা করতে পারেনি সফরকারীরা। কেননা প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে বোল্ট ও সাউদি আবির্ভূত হয়েছিলেন রীতিমত ধ্বংসাত্মক রূপে। তাঁদের দারুণ বোলিংয়ের সামনে ১০৪ রানে গুঁটিয়ে গিয়েছিলো শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইন আপ। মাত্র ৩০ রান খরচায় ৬ উইকেট তুলে নিয়ে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন গতি তারকা বোল্ট। ৩৫ রানে ৩টি উইকেট নিয়ে তাঁর যোগ্য সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন সাউদি। 


৭৪ রানে এগিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার পর টম লাথাম এবং হেনরি নিকোলসের জোড়া শতকে মাত্র ৪ উইকেটে ৫৮৫ রানের পাহাড় নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। ১৭৬ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস খেলেন ওপেনার লাথাম।


আর ১৬২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন নিকোলস। তাঁর সাথে ৭১ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন অলরাউন্ডার কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। এছাড়াও ৭৪ রানের আরেকটি দারুণ ইনিংস এসেছিলো জিত রাভালের ব্যাট থেকে। লঙ্কানদের পক্ষে লাহিরু কুমারা সর্বোচ্চ ২টি উইকেট  নিতে পেরেছিলেন। 



নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ১৭৮/১০  (সাউদি- ৬৮, ওয়াটলিং- ৪৬; লাকমল- ৫/৫৪, কুমারা-৩/৪৯)


শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ১০৪/১০ ​(ম্যাথিউস- ৩৩, সিলভা- ২১; বোল্ট- ৬/৩০, সাউদি- ৩/৩৫) 


নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংস: ৫৮৫/৪ (ইনিংস ঘোষণা)  (লাথাম- ১৭৬, নিকলস- ১৬২*, রাভাল- ৭৪; কুমারা- ২/১৩৪, চামিরা-১/১৪৭) 


শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংস: ২৩৬/১০ (লক্ষ্য ৬৬০ রান) (চান্দিমাল-৫৬, মেন্ডিস-৬৭; ওয়াগনার- ৪/৪৮, বোল্ট-৩/৭৭)



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball