সানজামুলের ছয় উইকেট

ছবি: সানজামুল ইসলাম

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
রাজশাহীতে বৃষ্টি, কুয়াশা সব মিলিয়ে বিসিএলের পঞ্চম রাউন্ডের চার দিনের ম্যাচ খেলা হয়েছে তিন দিন। শেষ পর্যন্ত মধ্যাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলের ম্যাচটি শেষ হয়েছে ড্র ফলাফল নিয়ে।
চতুর্থ দিনের খেলাও শুরু হয়নি নির্ধারিত সময়ে, ভেজা মাঠের কারণে। আধা ঘন্টা দেরিতে ্মাঠে নেমেছিল দুই দল। নয় উইকেট হাতে নিয়ে দিন শুরু করেছিল মধ্যাঞ্চল। কিন্তু স্পিনার সানজামুল ইসলামের ঘূর্ণি জাদুতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় মধ্যাঞ্চলের ব্যাটিং লাইন আপ। ১৪৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিন সেরা করা মধ্যাঞ্চলের ইনিংস থেমে যায় ২৯৪ রানে।
তৃতীয় দিন অপরাজিত থাকা মধ্যাঞ্চলের দুই ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান এবং আব্দুল মজিদ শুরুটা ভালই করেছিলেন। জুটি গড়েছিলেন ৫১ রানের। কিন্তু ৬৬ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা সাইফ উইকেটে থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ। আউট হয়েছেন ৭৫ রান করে, সানজামুলের ইসলামের বলে লেগ বিফোর হয়ে। তাঁর বিদায়ে উইকেটে নামেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মার্শাল আইয়ুব।
দুইজন মিলে দলের লিড বাড়াতে থাকেন। এর মধ্যে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন আব্দুল মজিদ। ৫৪ রান করে ফিরে যান মজিদ, সাকলাইন সজিবের বলে ক্যাচ দিয়ে। আইয়ুবের সাথে ৬২ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে নেমেছিলেন দলের অধিনায়ক শুভাগত হোম।
কিন্তু মাত্র দুই রান করেই সাজঘরের পথ ধরেন তিনি। নামেন তাইবুর রহমান, তিনিও বিদায় নেন মাত্র তিন রান করে। উইকেটরক্ষক জাহিদ হোসেনের সাথে জুটি গড়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হন আইয়ুব। ৩৪ রান করে সানজামুলের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফিরেছেন তিনি।
এরপর ২৬ রানের ছোট জুটি গড়েন জাহিদ এবং রবিউল হক। জাহিদ আউট হন ১২ রান করে আর রবিউল ফেরেন ২০ রানে। দুইজনই আউট হয়েছেন সানজামুলের বলে। শেষের দিকে ৯ রান নিয়েছেন তাসকিন। শেষ পর্যন্ত ৮৫.৫ ওভারে অলআউট হয়, ২৯৪ রান নিয়ে।
উত্তরাঞ্চলের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করে একাই ছয় উইকেট নিয়েছেন স্পিনার সানজামুল। তিন উইকেট নিয়েছেন আরেক স্পিনার সাকলাইন সজিব।

মধ্যাঞ্চলের দেয়া ১৪৮ রানের লিডের বিপরীতে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল উত্তরাঞ্চল। ওপেনিং জুটিতে মিজানুর রহমান এবং জুনায়েদ সিদ্দিকি যোগ করেন ৩২ রান। স্পিনার আরাফাত সানির বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরে যান ১৬ রান করা মিজানুর।
জুনায়েদ এবং তিনে নামা ফরহাদ হোসেন যোগ করেন দলের খাতায় বেশ কিছু রান। উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটে ৯৭ রানে। তাইবুরের বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান ৪৭ রান করা জুনায়েদ। ব্যাট হাতে উইকেটে নামেন নাঈম ইসলাম।
বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি, ৮ বলে ১০ রান করে শান্তর বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন নাঈম। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে নেমেছিলেন সাব্বির রহমান। বেশিক্ষণ ব্যাটিং করতে পারেননি তিনি। দিনের নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার ম্যাচ ড্র ঘোষণা ম্যাচ রেফারি।
শেষ পর্যন্ত ৩৩ রানে অপরাজিত ছিলেন ফরহাদ, তাঁর সাথে ৪ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ শেষ করেছেন সাব্বির। ইনিংসের ৩০ ওভার খেলে তিন উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান সংগ্রহ করে উত্তরাঞ্চল।
এর আগে বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয় এই ম্যাচের প্রথম দিনের খেলা। ভেজা মাঠের কারণে দ্বিতীয় দিনও খেলা হয়েছিল মাত্র ৩১.৪ ওভার। স্বল্প এই ওভারেই পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল উত্তরাঞ্চল, রান সংগ্রহ করেছিল মাত্র ৯২।
আসা-যাওয়ার মাঝে ছিলেন উত্তরাঞ্চলের ব্যাটসম্যানরা। তৃতীয় দিনের প্রথম দুই ঘণ্টাই শেষ হয়ে যায় উত্তরাঞ্চলের প্রথম ইনিংস। ৫৬ ওভার খেলতেই অল আউট হয়ে যায় উত্তরাঞ্চল, ১৪৬ রান সংগ্রহ করেছিল দলটি। সর্বোচ্চ ৩৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান জুনায়েদ সিদ্দিকি। মধ্যাঞ্চলের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নিয়েছেন স্পিনার আরাফাত সানি।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত এবং সাইফ হাসানের অর্ধশতকে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে তিন রানের লিড নিয়েছিল মধ্যাঞ্চল। নিজেরদের প্রথম ইনিংসে ৪২ ওভার ব্যাটিং করে ১৪৯ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে মধ্যাঞ্চল, এক উইকেটের বিনিময়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংসঃ ১৪৬ অলআউট (৫৬ ওভার)
(জুনায়েদ ৩৫, নাঈম ৩০; সানি ৩/৩৮)
মধ্যাঞ্চলের প্রথম ইনিংসঃ ২৯৪ অলআউট (৮৫.৫ ওভার)
(সাইফ ৭৫, শান্ত ৬৭; সানজামুল ৬/১০৩)
উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১১৩/৩ (৩০ ওভার)
(জুনায়েদ ৪৭, ফরহাদ ৩৩*; তাইবুর ১/১২)