promotional_ad

বাংলাদেশের ইতিহাস

বাংলাদেশ দল, বিসিবি
promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


ইতিহাস রচিত হয়েছে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে। এক ইনিংস এবং ১৮৪ রানের ব্যবধানে জয়, ১৮ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে এমন জয় বাংলাদেশের জন্য প্রথম। টেস্ট ক্রিকেটে এতো বড় জয় এর আগে বাংলাদেশ পায়নি বললেই চলে।


২০০৫ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২২৬ রানের জয় বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ জয় ছিল। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে বিগত সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড ভেঙ্গেছে টাইগাররা।


শুধু তাই নয়, প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে উইন্ডিজদের ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে সাকিব আল হাসানের দল। পাশাপাশি দীর্ঘ চার বছর পর টেস্ট সিরিজ জিতেছে টাইগাররা। শেষবার ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল তাঁরা।


সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই ঢাকা টেস্টের পরিকল্পনা সাজিয়েছিল বাংলাদেশ। কোন পেসার ছাড়াই টেস্ট খেলতে নেমেছিল তাঁরা, যা টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো। এর আগে ভারত একবার কোন পেসার ছাড়া টেস্ট খেলতে নেমেছিল।


টস জিতে পরিকল্পনায় একধাপ এগিয়ে গিয়েছিল টাইগাররা। ব্যাটিংয়ে নেমে অসাধারণ ছিলেন ব্যাটসম্যানরা। সবাই গিয়েছেন দুই অংকের ঘরে, একজন ছিলেন তিন অংকে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, যিনি খেলেছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৩৬ রানের ইনিংস।


সাথে ছিলেন অভিষেক হওয়া বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলামের ব্যাটিং ঝলক। ১৯৯ বল খেলে নিয়েছেন ৭৬ রানের ইনিংস। পাশাপাশি অধিনায়ক সাকিবের ১৩৯ বলে ৮০ রানের ইনিংসটি ছিল অসাধারণ। শেষের দিকে মাহমুদুল্লাহর সাথে লিটনের মারমুখী ইনিংস দলের খাতায় যোগ করেছিল বেশ কিছু রান।


লিটন খেলেছেন ৬২ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। তাইজুল ছিলেন মাহমুদুল্লাহর যোগ্য সঙ্গী, ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন তিনিও। ৫৮ বলে ২৬ রান নিয়েছেন এই বাঁহাতি। দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে এসে থেমেছিল বাংলাদেশের ইনিংস, ৫০৮ রান তুলেছিল টাইগার ব্যাটসম্যানরা।


ব্যাট হাতে বড় রান তোলার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন মমিনুল হক, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম এবং মোহাম্মদ মিঠুনরা। বল হাতে সফরকারী দল বলা যায় নিষ্প্রাণই ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সব উইকেট তুলতে সক্ষম হয়েছিল তাঁরা। বিশু, রোচ, ওয়ারিকেন এবং ব্র্যাথওয়েট দুইটি করে উইকেট নিয়েছেন।


৫০৮ রানের বিশাল লক্ষ্য, তাতেই যেন চাপে ছিলেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। সাকিব-মিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে চোখের পলকেই পাঁচ উইকেট নেই তাঁদের। আবার প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানকেই বোল্ড করে ফিরিয়েছেন সাকিব এবং মিরাজ। ১২৮ বছরের রেকর্ডে বসিয়েছেন নাম।


promotional_ad

২১ রানে পাঁচ উইকেট হারালেও, খেলা কিছুটা নিজেদের অনুকূলে নিয়ে ৭৫ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছেন উইন্ডিজ দুই ব্যাটসম্যান শিমরন হেটমায়ার এবং শেন ডওরিচ। কিন্তু তৃতীয় দিন সকালেই বাকি পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে তাঁরা।


বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো উইন্ডিজদের ফলো অনে ফেলতে সক্ষম হয়। প্রথম ইনিংসে ১১১ রানে থামে সফরকারীদের ইনিংস। যেটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোন দলের সর্বনিম্ন ইনিংস। উইন্ডিজদের হয়ে সর্বোচ্চ রান হেটমায়ারের (৩৯)।


অসাধারণ বোলিং করে ৫৮ রান খচরায় ৭ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। যা বাংলাদেশের কোন বোলারের এক ইনিংসে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট। পাশাপাশি তিন উইকেট নিয়েছেন সাকিব।


৩৯৭ রানে পিছিয়ে থেকে আবার ব্যাটিংয়ে নামে ব্র্যাথওয়েটের দল। কিন্তু ব্যাট হাতে সাকিব-মিরাজদের সামলাতে আবারও হুমড়ি খেয়েছে ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানরা। শুরুতেই সাকিবের আঘাত, ২ রানে নেই সফরকারীদের অধিনায়ক।


এরপর মিরাজের সাথে তাইজুলের ঘূর্ণি জাদু। আবারও ধ্বংস হয়ে যায় উইন্ডিজদের টপ অর্ডার। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তাঁরা। ২৯ রানে চার উইকেট হারানোর পর খেলা কিছুটা অনুকূলে নিতে চেষ্টা চালান শাই হোপ এবং হেটমায়ার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি হোপের, ফিরেছেন ২৫ রান তুলতেই।


তবে একপ্রান্তে সাকিব তাইজুলদের বিপক্ষে বিধ্বংসী হয়ে উঠেছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হেটমায়ার। ৯২ বলে ৯৩ রানের ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান, যেখানে ৯টি ছয় এবং একটি চার ছিল তাঁর। শেষ পর্যন্ত মিরাজের বলে শতকের কাছাকাছি এসে শেষ হয় হেটমায়ারের ইনিংস।


শেষের দিকের ব্যাটসম্যানরাও কিছুক্ষণ টিকে ছিলেন উইকেটে। রান তুলে হারের ব্যবধান কমাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২১৩ রানে থামে উইন্ডিজদের দ্বিতীয় ইনিংস। বাংলাদেশ জিতে যায় ইনিংস এবং ১৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে। যেটা বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ জয়!


এবার বল হাতে উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন চার স্পিনারই। তবে মিরাজ নিয়েছেন পাঁচটি, রেকর্ড করেছেন তিনি। সাকিবের পর দ্বিতীয়বারের মতো এক টেস্টে দশ উইকেট পেয়েছেন মিরাজ। পাশাপাশি বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো একাই দুইবার ১২ উইকেট পেয়েছেন এই স্পিনার।


সাথে ২০১৮ সালে টেস্টে সর্বোচ্চ উইকেটের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে মিরাজ। ৪১ উইকেট নিয়েছেন এই স্পিনার এবং ৪৩ উইকেট নিয়ে ইংলিশ পেসার জিমি অ্যান্ডারসনের সাথে যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন তাইজুল ইসলাম।


সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ


টসঃ বাংলাদেশ


বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসঃ ৫০৮ অল আউট (১৫৪ ওভার)  


(মাহমুদুল্লাহ ১৩৬, সাকিব ৮০, সাদমান ৭৬) (ব্রাথওয়েট ৫৭/২) 


উইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ ১১১ অলআউট (৩৬.৪ ওভার); (হেটমায়ার ৩৯) ফলো অন


(মিরাজ.৭/৫৮, সাকিব ৩/২৭)


উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইন্নিংসঃ ২১৩ অলআউট (৫৯.২); (হেটমায়ার ৯৩)


(মিরাজ ৫/৫৯, তাইজুল ৩/৪০)



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball