সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ

ছবি: ছবিঃ ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসঃ ৩২৪ অল আউট; ওভার-৯২.৪ : মমিনুল ১২০, (গ্যাব্রিয়েল ৭০/৪)
উইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ ২৪৬ অল আউট, ৬৪ ওভার : ডরউউচ ৬৩*, হেটমিয়ার ৬৩ (নাঈম ৬১/৫)
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১২৫ অল আউট ৩৫.৫ ওভার: রিয়াদ ৩১, ওয়ারিকেন (বিশু ৪/২৬), চেজ (৩/১৮)
উইন্ডিজ দ্বিতীয় ইনিংসঃ ১৩৯ অল আউট, ৩৫ ওভার: (সাকিব ৩০/২), (তাইজুল ৩৩/৬)
৬৪ রানে জয়ী বাংলাদেশ
টসঃ বাংলাদেশ
চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের জন্য উইন্ডিজদের ২০৪ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ তৃতীয় দিন প্রথম সেশনে অল আউট হয়েছে মাত্র ১২৫ রানে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন রিয়াদ। উইন্ডিজদের হয়ে বিশু নেন ৪ উইকেট। জয়ের লক্ষ্যে এখন ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৩৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছে সফরকারীরা। দলের হয়ে একাই ৬ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ৬৪ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
তাইজুলের ষষ্ঠঃ শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে এম্ব্রিসকে বিদায় করে বাংলাদেশকে দুর্দান্ত জয় এনে দেন তাইজুল। ৪৭ রান করা এই ব্যাটসম্যান উইকেট রক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন।

মিরাজের ব্রেক-থ্রুঃ নবম উইকেট জুটিতে ৬৩ রান যোগ করে টাইগার শিবিরকে দুশ্চিন্তায় ফেলেছিলেন ওয়ারিকেন এবং এম্ব্রিস। কিন্তু বলিংয়ে এসে ওয়ারকেনকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন মিরাজ। ৪১ রানে বিদায় নেন তিনি।
তাইজুলের পাঁচঃ নিজের তৃতীয় উইকেট হিসেবে ডওরিচকে বিদায় করেন তাইজুল। দলীয় ৫১ রানে তাঁকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলেন এই স্পিনার। খানিক পর বিশুকে বোল্ড আউট করে নিজের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন এই স্পিনার। বিশুর পর কিমার রোচকে লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেন তাইজুল।
হেটমিয়ারের বিদায়ঃ প্রথম ইনিংসের মত দ্বিতীয় ইনিংসেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন শিমরন হেটমিয়ার। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেও তাঁকে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। মিরাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে বসেন তিনি। ২৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। প্রথম ইনিংসেও ৬৩ রানে মিরাজের বলেই আউট হয়েছিলেন তিনি।
তাইজুলের জোড়াঃ দুই উইকেট হারিয়ে বসা উইন্ডিজদের রক্ষা করতে পারেন নি অধিনায়ক ব্রাথওয়েটও। দলীয় ১১ রানে তাইজুল ইসলামের বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন এই উইন্ডিজ দলপতি। একই ওভারের পঞ্চম বলে রস্টন চেজকেও লেগ বিফরের ফাঁদে ফেলে বিদায় করেন তিনি।
সাকিবের জোড়া আঘাতঃ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা উইন্ডিজদের শুরুতেই ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ইতিমধ্যে দুই উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন তিনি। দলীয় কিরন পাওয়েলকে স্ট্যাম্পিং করে টেস্ট ক্যারিয়ারে ২০০ উইকেট শিকার করেন এই অলরাউন্ডার।একই ওভারের পঞ্চম বলে শাই হোপকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ আউট করে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তিনি।
এর আগে দিনের শুরুতেই আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ১৯ রানে শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি।
মুশফিককে হারালেও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং মিরাজের ব্যাটে হাল ধরে খেলছে বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে স্লিপে একজন জীবনও পেয়েছেন রিয়াদ। এই দুজনের ব্যাটে দলীয় ১০০ পার করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু দলীয় ১০৬ রানে বিশুর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন মিরাজ।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং নাঈম হাসানের দৃঢ়টায় ২০০ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। কিন্তু লিড ২০০ হওয়ার পর পর বিশুকে উইকেট বিলিয়ে দেন নাঈম এবং রিয়াদ। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাইজুল ইসলাম রস্টন চেজকে উইকেট ছুড়ে দেন। বাংলাদেশ অল আউট হয় ১২৫ রানে।
দ্বিতীয় দিন দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৩ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে এক প্রান্তে সৌম্য সরকার হাত খুলে খেলতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জোমেল ওয়ারিকেনের বলে বোল্ড আউট হয়ে বিদায় নেন ইমরুল কায়েস।
তার ব্যাট থেকে আসে ২ রান। এরপরের ওভারেই সৌম্য সরকারকে স্লিপে ক্যাচ আউট করেন রস্টন চেজ। সৌম্য ফেরেন ১১ রানে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি হাকালেও দ্বিতীয় ইনিংসে একই ধারা ধরে রাখতে পারেন নি মমিনুল।
রস্টন চেজের বলে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে লেগ বিফরের ফাঁদে পরে বিদায় নেন এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে লেগ সাইডে উড়িয়ে মারতে গিয়ে গ্যাব্রিয়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন সাকিব। ১ রানে ফেরেন।
দিনের শেষ বেলায় এসে মোহাম্মাদ মিথুনকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরত পাঠান লেগ স্পিনার দেবেন্দ্র বিশু। মুশফিকুর রহিম এবং মেহেদি মিরাজ দেখে শুনে খেলে এরপর দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেন। ১৩৩ রানে এগিয়ে থেকে দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ।
উইন্ডিজ প্রথম ইনিংসঃ
নিজেদের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশী স্পিনারদের তোপে মাত্র ২৪৬ রানে গুটিইয়ে যায় সফরকারীরা। দলের পক্ষে শিমরন হেটমিয়ার এবং ডওরিচ করেন ৬৩ রান। বাংলাদেশের হয়ে অভিষিক্ত নাঈম হাসান নেন ৫টি উইকেট।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসঃ
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে মমিনুল হকের সেঞ্চুরিতে ৩২৪ রানের পুজি পায় সাকিব আল হাসানের দল। উইন্ডিজদের পক্ষে শ্যানন গেব্রিয়েল একাই নেন ৪ উইকেট।
বাংলাদেশ একাদশঃ সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মমিনুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ মিঠুন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাইজুর ইসলাম, নাঈম হাসান।
উইন্ডিজ একাদশঃ ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (অধিনায়ক), সুনীল আমব্রিস, দেবেন্দ্র বিশু, রস্টন চেজ, শেন ডওরিচ, শ্যানন গ্যাব্রিয়েল,, শিমরন হেটমায়ার, শাই হোপ, কাইরন পাওয়েল, কেমার রোচ, জোমেল ওয়ারিকেন।