'বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ের নায়ক নেই'

ছবি: ছবিঃ ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
বাংলাদেশ ক্রিকেটে ফিল্ডিংয়ের নায়ক শুন্যতা অনুভব করছেন জন্টি রোডসের দেশের ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। কালের বিবর্তনে দেশসেরা ব্যাটসম্যান-বোলার বা বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার দলে পেলেও ফিল্ডিংয়ে এখনও সেই মানের অনুপ্রেরণাদায়ক কাউকেই খুঁজে পায়নি বাংলাদেশ দল। মার্ক টেইলর, মার্ক ওয়াহর যুগের পর রিকি পিন্টিং, ম্যাথু হেইডেনদের মত ফিল্ডারদের আগমন বলে দেয়, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে স্লিপ ফিল্ডিংয়ের ইতিহাস কত সমৃদ্ধ।
দক্ষিণ আফ্রিকাও তাই, জন্টি রোডস, হার্শেল গিবসদের পর প্রোটিয়া ফিল্ডিংকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছেন গ্রাহাম স্মিথ, এবি ডি ভিলিয়ার্সরা। বাকি টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে বাংলাদেশের তফাৎ এখানেই।
টাইগারদের ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক এখন ফিল্ডিংয়ের নায়কের খোঁজে আছেন। তাঁর বিশ্বাস, বর্তমান বাংলাদেশ দলেই আছে এক ঝাঁক ভবিষ্যতের নায়ক, যাদের দেখে পরবর্তী প্রজন্ম ফিল্ডিংয়ের শিল্পে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে। সোমবার দিন চট্টগ্রামে রায়ান কুক মিডিয়াকে এই বিষয়ে জানিয়েছেন,
'বাংলাদেশি ফিল্ডারদের ভাবভঙ্গিমা আমাকে মুগ্ধ করেছে। ছেলেরা দারুণ উন্নতি করেছে আগে থেকে। ফিল্ডিংয়ের ভাবভঙ্গিতে খুব বেশি পার্থক্য নেই। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদের অনেক ফিল্ডার আছেন, যারা বাকিদের অনুপ্রাণিত করে থাকে। জন্টি রোডস বা হার্শেল গিভসদের মতো। এরা প্রত্যেকেই দুর্দান্ত ফিল্ডার ছিলেন।

'আর এই ক্রিকেটাররাই একসময় ভবিষ্যৎ ক্রিকেটারদের অনুপ্রাণিত করবে। তাই এদের একটু একটু করে উন্নতি করাই এখন কাজ। আমি মনে করি এই ক্রিকেটারদেরই ষ্ট্যাণ্ডার্ড সেট করতে হবে। তাদের বিশ্বের সেরা ফিল্ডিং সাইড হওয়া উচিত। এতে কোন বিতর্ক নেই যে এই দলের মধ্যে সেই সম্ভাবনা আছে।'
তবে টেস্ট ক্রিকেটে ১৮ বছর পূর্ণ হলেও এখনও ভাল মানের ফিল্ডার খুঁজে না পাওয়ার বেশ কিছু যৌক্তিক কারণও আছে কুকের কাছে। বিশেষ করে স্লিপ অঞ্চলের ফিল্ডার না পাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি।
'বিষয়টা ইতিহাসেই খুঁজে পাওয়া যায়। অবশ্যই দক্ষিণ আফ্রিকায় খুব তরুন বয়স থেকেই ক্রিকেটাররা চার স্লিপ ও এক গালি নিয়ে খেলা থাকে। কিন্তু এখানে খেলা হলে সেটা পাবেন না। খুব গেলে দুইজন স্লিপে দাঁড়াবে। এখানে বেশিরভাগ সময় শর্ট লেগ, সিলি পয়েন্ট দেখতে পাবেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় আবার আমাদের ক্রিকেটাররা এমন ফিল্ডিংয়ে অভ্যস্ত নয়।
'এটা শুধুই ভিন্ন ইতিহাস। আমরা যদি আরও বেশি ভিন্ন উইকেট দিতে থাকি,তাহলে আমরা স্লিপে আরও ফিল্ডার পাব। আর ভালো স্লিপ ফিল্ডার জোড়া হয়ে আসে। মাঝে মাঝে আসে ৩-৪জন এক সাথে। একের অপরের ওপর বিশ্বাস অর্জনের ব্যাপার থাকে। এই বিশেষজ্ঞ জায়গায় ধারবাহিকতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।'
এছাড়াও ফিল্ডিংয়ে দলের ক্রিকেটারদের মনোযোগ রক্ষায় আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কুক। তাঁর ভাষায়,
'এটা অবশ্যই অনেক কঠিন। কেউ যদি ছয় ঘণ্টা মাঠে রেখে ছয় ঘণ্টা পর তাদের দিকে ক্যাচ ছুঁড়ে দেয়া ও ক্যাচ ধরার অনুশীলন করাতে পারে, তাহলে কাজ সহজ যেত (হাসি)। কাজটা অবশ্যই অনুশীলনে নিয়ে আসা কঠিন।
'কিন্তু তাঁরা পেশাদার ক্রিকেটার। দিনের শুরুতে সার্জারি করা ডাক্তারকে দিনের শেষেও সার্জারি করতে গেলে সতর্ক থাকতে হবে। তাঁরা পেশাদার, আপনি আশা করবেন তাঁরা মনোযোগ ধরে রাখতে সক্ষম হবে।'