লজ্জা এড়ালো বাংলাদেশ

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ঢাকা টেস্টের ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে ম্যাচের শেষ দিন দ্বিতীয় সেশনে। জিম্বাবুয়ের পক্ষে দুই ইনিংসে একাই লড়েছেন ব্রেন্ডন টেইলর। জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর দলকে সিরিজ জেতাতে পারেন নি এই ব্যাটসম্যান। এক সেশন হাতে রেখে ২১৮ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ে সিরিজ হারের লজ্জা এড়ানোর পাশাপাশি সিরিজ সমতায় শেষ করতে সার্থক হয়েছে বাংলাদেশ।
দলের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে মিরাজ শিকার করেছেন ৫ উইকেট। বোলারদের মধ্যে পুরো সিরিজে সবচেয়ে সফল বোলার তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারের শিকার ১৮ উইকেট। এই সিরিজে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি দ্বিতীয় টেস্টে মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি এবং মমিনুল-মাহমুদুল্লাহ'র সেঞ্চুরি। তবে উইন্ডিজ সিরিজের আগে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে চলতি সিরিজে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা।
সিলেট টেস্টে জিতে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে থাকা জিম্বাবুয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকে ঢাকা টেস্টে মাঠে নেমেছিল। আর দেয়ালে পিঠ থেকে হাওয়া মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের সামনে ছিল সিরিজ হারের লজ্জা এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটা ভালো ভাবেই নিয়েছে তাঁরা। শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লেও এই সিরিজে পারফর্মেন্স নিয়ে রয়েছে অনেক প্রশ্ন।
শেষ দিন ২ উইকেটে ৭৬ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে সফরকারীরা। জিততে হলে ৪৪৩ রানের রেকর্ড লক্ষ্য তাড়া করতে হত তাদের। সেই চাপ মাথায় নিয়ে খেলতে নেমে মুস্তাফিজুর রহমানকে উইকেট ছুঁড়ে দেন শন উইলিয়ামস। খানিক পর সিকান্দার রাজাকেও ১২ রানে বিদায় করেন তাইজুল।
৪ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়েকে উদ্ধার করতে লড়াই চালিয়ে যান ব্রেন্ডন টেইলর এবং পিটার মুর। দুজন মিলে হাল ধরে খেলে দলকে লাঞ্চ বিরতিতে নিয়ে যান। মুরের সঙ্গে জুটি বেধে ফিফটি তুলে নেন টেইলর। লাঞ্চের পর ব্যাট করতে নেমে মুরকে বিদায় করেন মিরাজ।
রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন চাখাবা। মিরাজের ঘূর্ণির সামনে বাকি ব্যাটসম্যানরা আসা যাওয়ার মাঝে থাকলেও দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি তুলে নেন টেইলর। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে জার্ভিস মিরাজের পঞ্চম শিকার হয়ে ফিরলে টেইলর অপরাজিত থাকেন ১০৬ রানে। ২১৮ রানের জয় নিয়ে লজ্জা এড়াতে সক্ষম হয় রিয়াদ বাহিনী।
এর আগে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড গড়া ২১৯ রান ও মুমিনুল হকের ১৬১ রানের ইনিংসে ভর করে ৭ উইকেটে ৫২২ রানে নিজেদের ইনিংস ঘোষণা করেছিল। জিম্বাবুয়ের পেসার কাইল জারভিস পাঁচ উইকেট শিকার করেন।
বাংলাদেশের এই রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে তাদের প্রথম ইনিংসে ৩০৪ রান করে অল আউট হয়। দলটির পক্ষে ব্রেন্ডন টেইলর ১১০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে সেরা বোলার ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ একাদশঃ
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, খালেদ আহমেদ।
জিম্বাবুয়ে একাদশঃ
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চেরি, ব্রেন্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, রেগিস চাকাভা, ডোনাল্ড তিরিপানো, কাইল জার্ভিস, ব্র্যান্ডন মাভুটা, টেন্ডাই চাতারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসঃ ৩০৪ অল আউট ১০৪.৫ ওভার
টেইলর ১১০ ; তাইজুল ৫/১০৭
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসঃ ৫২২/৭ ডিক্লে (১৬০ ওভার)
মুশফিকুর রহিম ২১৯*, মমিনুল হক ১৬১, মেহেদি হাসান মিরাজ ৬৮*
কাইল জার্ভিস ৫/৭১
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসঃ ২২৪/৬ ডিক্লে, মাহমুদুল্লাহ ১০১*, মিথুন ৬৭*
কাইল জারভিস ২/৫, ট্রিপানো ২/১০
জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংসঃ ২২৪ অল আউট, ৮৩.১ ওভার
টেইলর ১০৬* মেহেদি হাসান মিরাজ ৩৮/৫
ম্যাচ সেরাঃ মুশফিকুর রহিম
সিরিজ সেরাঃ তাইজুল ইসলাম