আট ইনিংস পর বাংলাদেশের দুইশ

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসঃ ২০৭/৩ (৫৮ ওভার)
(মমিনুল ১১৫*, মুশফিক ৭১*; জার্ভিস ২/৪০)
সিরিজে ১২০ ভাগ দিয়ে ফিরে আসার প্রত্যয়ে ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ। দিনের প্রথম সেশনেই ২৬ রানে তিনটি মূল্যবান উইকেট হারিয়ে কিছুটা পিছিয়ে থেকে টাইগাররা। কিন্তু বর্তমানে চালকের আসনে তাঁরা।
দ্বিশতকে বাংলাদেশঃ
আট ইনিংস পর আজ ২০০ রান পেরিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম সেশনে উইকেট হারিয়ে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। মাত্র ৫৬ রানে শেষ হয়েছিল টাইগারদের প্রথম সেশন। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে এসে নিজেদের পায়ের নিচের মাটি খুঁজে পেলেন উইকেটে থাকা ব্যাটসম্যান মুশফিক এবং মমিনুল।
তিন উইকেটের পর দ্বিতীয় সেশনে আর কোন উইকেট হারায়নি টাইগাররা। চতুর্থ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের ভিত গড়ে দিয়েছেন মুশফিক-মমিনুল। দুজন মিলে ইতিমধ্যে গড়েছেন ১৮১ রানের রেকর্ড জুটি। টেস্ট ক্রিকেটে চতুর্থ উইকেট জুটিতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান। তাঁদের এই জুটি দলকে এনে দিয়েছে দুইশ রানের সংগ্রহ
চতুর্থ উইকেটে আগের সেরা জুটিতেও ছিলেন মুমিনুল। বছরের শুরুতে চট্টগ্রামে লিটন দাসের সঙ্গে গড়েছিলেন ১৮০ রানের জুটি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের আগের সেরা জুটি ছিল তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ১৩২।
দ্বিতীয় ইনিংস শেষে বাংলাদশের সংগ্রহ তিন উইকেটে ২০৭ রান।
সফল মমিনুলঃ
দলীয় ৫৫তম ওভারে সিকান্দার রাজার প্রথম বলেই চার মেরে দিলেন মমিনুল। সাথে সাথে পৌঁছে গেলেন টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম শতকে। এই শতক হাঁকাতে ১৫০ বল খেলছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। যেখানে ১২টি চারের মার ছিল তাঁর।
মুশফিকের অর্ধশতকঃ
মমিনুলের পর এবার অর্ধশতক হাঁকালেন বাংলাদেশ দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। শন উইলিয়ামসের বলকে সিঙ্গেল বানিয়ে ১০০ বলে ৫০ রানের কোটায় পা দিয়েছেন তিনি। দেখেশুনে টেস্ট মেজাজে ব্যাটিং করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। চারটি চারে সাজানো ছিল তাঁর এই পঞ্চাশ রানের ইনিংস।

বিপর্যয়ে হাল ধরলেন মমিনুলঃ
সকালে দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর দলকে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেছেন মমিনুল। ইতিমধ্যে ৯২ বল খেলে অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তিনি। যেখানে সাতটি চার মেরেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর মুশফিকের সাথে দারুণ এক জুটি গড়ে আর কোন উইকেট না হারিয়ে একশ রানে পৌঁছাতে সাহায্য করেছেন দলকে।
মমিনুল-মুশফিক জুটিঃ
৩২ রানের জুটি গড়ে প্রথম সেশন শেষ করেছিলেন মাঠে থাকা মুশফিক এবং মমিনুল। লাঞ্চের পর মাঠে নেমেই ব্যাট চালাতে শুরু করেন দুইজন। ইতিমধ্যে নিজেদের জুটির অর্ধশতক পূরণ করেছেন দু'জন। বর্তমানে বাংলাদেশের সংগ্রহ তিনে উইকেটে ৮১। যেখানে তাঁদের দুই জনের জুটি ৫৫।
দলীয় অর্ধশতকঃ
মুশফিক এবং মমিনুলের ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়??? আর কোন উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ পৌঁছেছে অর্ধশতকের কোটায়। দিনের শুরুতেই দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে পিছিয়ে থাকলেও দলকে আলো দেখাচ্ছেন এই দুই ব্যাটসম্যান। ইতিমধ্যে ২৬ রানের জুটি গড়েছেন দুইজনে।
অভিষেকে শূন্য রানে ফিরলেন মিথুনঃ
দিনের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বাজে শট খেলে টেস্ট অভিষেকে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরেছেন মোহাম্মদ মিঠুন। ডোনাল্ড টিরিপানোর অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল মারতে গিয়ে মাঝ ব্যাটে খেলতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। ব্যাটের কানায় লেগে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন ব্রেন্ডন টেইলরের হাতে।
দলীয় ২৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ। উইকেটে রয়েছেন মুমিনুল হক এবং তাঁর সঙ্গী হিসেবে রয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
লিটনের বিদায়ঃ
দিনের শুরুটা সাবধানে পার করলেও লিটন আউট হলেন উড়িয়ে মারতে গিয়ে। বাংলাদেশ হারাল আরেক ওপেনারকেও। কাইল জার্ভিস তুলে নিলেন নিজের দ্বিতীয় শিকার।
লেগ-মিডলে থাকা বলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি লিটন। প্রিয় ফ্লিক শট খেললেন একটু শক্ত হাতে। বল সোজা চলে গেল মিড উইকেটে ব্র্যান্ডন মাভুটার হাতে।
সিলেট টেস্টের প্রথম ইনিংসের মতো এবারও লিটন ফিরলেন ঠিক ৯ রানে। বাংলাদেশের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৬।
ইমরুলকে ফেরালেন জার্ভিসঃ
শুরু থেকেই কিছুটা নড়বড়ে ছিলেন বাহতি ওপেনার ইমরুল কায়েস। তকে শূন্য রানে ফিরিয়ে দিয়েছেন কাইল জার্ভিস।
১৬ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি বাঁহাতি ওপেনার। মাঝ ব্যাটে খেলতে পারছিলেন খুব কমই। ক্রিজে আধ ঘণ্টা কাটিয়েও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেননি। স্টাম্পের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ইনসাইড এজে ক্যাচ দেন কিপারকে। ডানদিকে ঝাঁপিয়ে গ্লাভসে নেন রেজিস চাকভা।
দলীয় ১৩ রানে বাংলাদেশ হারায় প্রথম উইকেট। ক্রিজে লিটন দাসের সঙ্গী মুমিনুল হক।
রিভিউ বাঁচাল লিটনকেঃ
তৃতীয় ওভারে কাইল জার্ভিসের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে অল্পের জন্য ধরা খেতেন লিটন। তবে বোলার-ফিল্ডারদের কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদনে একটু সময় নিয়ে সাড়া দেন আম্পায়ার। সাথে সাথেই রিভিউ নেন লিটন।
রিপ্লেতে বোঝা যায় বলে লাগেনি ব্যাট, নিশ্চিত করে আল্ট্রাএজও। মাঠে থাকা আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বাধ্য করেন তৃতীয় আম্পায়ার, বেঁচে যান লিটন। সে সময় শূন্য রানে ছিলেন ডান হাতি এই ওপেনার।
বাংলাদেশ একাদশঃ
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, খালেদ আহমেদ।
জিম্বাবুয়ে একাদশঃ
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চেরি, ব্র্যান্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, রেগিস চাকাভা, ডোনাল্ড তিরিপানো, কাইল জার্ভিস, ব্র্যান্ডন মাভুটা, টেন্ডাই চাতারা।