জয়ের ধারায় ফিরুক হোম অফ ক্রিকেট

ছবি: বাংলাদেশ দল

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
বাংলাদেশের প্রিয় প্রতিপক্ষ হিসেবে সর্বদাই জিম্বাবুয়েকে ধরা হয়। কারণ এখন পর্যন্ত এই দলটির বিপক্ষেই সবথেকে বেশি জয়ের দেখা পেয়েছে টাইগাররা। মোট ৬৯টি ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল যেখানে ৪১টিতেই জয়ের মুখ দেখেছে বাংলাদেশ। আর মাত্র ২৮টিতে জয় পেয়েছে জিম্বাবুয়ে।
তাই আগামীকাল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দুপুর আড়াইটায় অনুষ্ঠিতব্য প্রথম ওয়ানডেতে স্পষ্টভাবেই ফেভারিটের কাতারে থাকছে বাংলাদেশ। তার ওপর সম্প্রতি এশিয়া কাপে দারুণ পারফর্মেন্স উপহার দিয়ে আত্মবিশ্বাসের পারদ যথেষ্ট উঁচুতেও রয়েছে মাশরাফি বাহিনীর।
তবে শের-ই-বাংলাতে অনুষ্ঠিত নিজেদের সর্বশেষ ওয়ানডেতে পরাজয়ের কাতারে নাম লিখিয়েছিল বাংলাদেশই। হোম অফ ক্রিকেটে চলতি বছরের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭৯ রানে পরাজিত হয়েছিল তারা। সুতরাং এই মাঠে আগামীকাল জয়ের ধারা ফিরিয়ে আনাটাই লক্ষ্য থাকবে মাশরাফিদের।
এদিকে তামিম ইকবাল এবং সাকিব আল হাসানের মত দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার না থাকায় কিছুটা দুশ্চিন্তার মধ্যেই থাকতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তবে এক্ষেত্রে তরুণ ক্রিকেটারদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখার সুযোগ পাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
বিশেষ করে প্রথমবারের মত জাতীয় দলের স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়া ফজলে রাব্বির ওপরেই বেশি চোখ থাকবে সকলের। ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত এই পারফর্মারকে নিয়ে এরই মধ্যে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কোচ এবং নির্বাচকেরা। সুতরাং প্রত্যাশার চাপ কিছুটা হলেও তাঁর ওপরে থাকছে। এছাড়াও নাজমুল ইসলাম শান্ত, আবু হায়দার রনি কিংবা মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের মত তরুণ ক্রিকেটাররা সুযোগ পাচ্ছেন নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দেয়ার।
এদিকে সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে হোয়াইটওয়াশ হয়ে আসা জিম্বাবুইয়ানরা কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে পেয়েছে স্কোয়াডে অলরাউন্ডার সিকান্দার রাজা ফেরায়। পাশাপাশি উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ব্র্যান্ডন টেইলর এবং আরেক অলরাউন্ডার শন উইলিয়ামসও থাকছেন দলটিতে বিধায় অনুপ্রেরণা পাচ্ছে তারা। যদিও ইনজুরির কারণে জিম্বাবুয়ে স্কোয়াডে নেই নিয়মিত অধিনায়ক গ্রায়াম ক্রিমার।
পিচ এবং কন্ডিশন- পরিসংখ্যান বলছে মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট যথেষ্ট স্পিন সহায়ক। আর সেই কারণে এই মাঠে বরাবরই দাপট দেখিয়ে এসেছেন স্পিনাররা।

সুতরাং আগামীকালের ম্যাচটিতেও একই ধরণের উইকেট থাকতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল অপুরা উইকেটের টার্ন কাজে লাগিয়ে জিম্বাবুইয়ানদের নাস্তানাবুদ করতে মুখিয়েই থাকবেন।
মুখোমুখি- বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল এই বছর ত্রিদেশীয় সিরিজে। এছাড়া দুই দল সর্বশেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছিল ২০১৫-১৬ তে।
স্পটলাইটে থাকবেন যারা-
মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)-
বাংলাদেশ দলের মিডেল অর্ডারের ভরসা বলা হয় তাঁকে। এবারের এশিয়া কাপে তিনি একাই বাংলাদেশ দলকে টেনেছেন। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফর্মেন্স করে হয়েছেন এশিয়া কাপের সেরা ব্যাটসম্যানদের মাঝে তৃতীয়।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও প্রচুর খেলার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। ৩৯ ইনিংসে তাঁর রানের গড় ৩৮ এর উপরে। যেখানে দুইটি শতকএবং সাতটি অর্ধশতক রয়েছে এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। অবশ্যই আসন্ন এই ম্যাচে নজর থাকবে এই ক্রিকেটারের উপর।
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (জিম্বাবুয়ে)-
বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে জিম্বাবুয়ের ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজার। প্রস্তুতি ম্যাচেই নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন তিনি। দলের বিপদে একাই শতক হাঁকিয়েছেন বিসিবি একাদশের বিপক্ষে।
পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যায়, মাসাকাদজা এখন অবধি টাইগারদের বিপক্ষে ৪৯টি ওয়ানডে খেলেছেন। বরারর ২৪ গড়ে রান সংগ্রহ করেছেন ১১৫২। যেখানে তাঁর পাঁচটি অর্ধশতক রয়েছে।
বাংলাদেশ স্কোয়াড-
মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মাহমুদউল্লাহ, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, আবু হায়দার রনি, ইমরুল কায়েস, ফজলে রাব্বি, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
জিম্বাবুয়ে স্কোয়াড-
হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), টেন্ডাই চাতারা, এল্টন চিগুম্বুরা, ক্রেইগ আরভিন, কাইল জার্ভিস, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ব্র্যান্ডন মাভুটা, সলোমন মিরে, পিটার মুর,তারিসাই মুসাকান্দা, রিচার্ড এন গারাভা, জন নাইউম্বু, ব্র্যান্ডন টেইলর (উইকেটরক্ষক), ডোনাল্ড তিরিপানো, চিপাস ঝুয়াও, সিকান্দার রাজা।