১-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত সিরিজ জিততে পারল না বাংলাদেশ 'এ' দল। আয়ারল্যান্ডের ওপেনার এন্ড্রু বালবির্নির দুর্দান্ত ১৬০* রানের কল্যাণে ২০ বল বাকী রেখেই ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে আইরিশরা।

প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পরে ২-২ সমতায় শেষ হচ্ছে সিরিজ। এদিনে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে  ২৮৩ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ এ দল। তবে এ কঠিন পুঁজিকে মামুলি বানিয়ে জয় ছিনিয়ে এনেছেন বালবির্নি।

কঠিন লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই দেখে শুনে খেলে আয়ারল্যান্ড উলভস। তবে ৪ রান করে শরিফুল ইসলামের বলে মমিনুলকে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন ওপেনার জেমস শ্যানন।

এরপরে এন্ড্রু বালবির্নির সঙ্গে দলের হাল ধরেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন। ওপেনার বালবির্নি এদিনে করেছেন সেঞ্চুরি। আর তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ম্যাকব্রাইন। তবে দুর্ভাগ্য তার!

১০৩ বলে নয়টি চারে ৮৯ রান করে সানজামুল ইসলামের বলে বিদায় নিয়েছেন তিনি। যাওয়ার আগে বালবির্নির সঙ্গে ১৯৭ রানের জুটি গড়েছেন। এটাই মূলত বাংলাদেশ 'এ' দলকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে।

উইকেটে থিতু হয়ে ১৮ টি চার আর দুটি ছয়ের সাহায্যে বালবির্নি করেছেন ১৪৪ বলে ১৬০* রান। সিমি সিং শেষদিকে করেন ২১ বলে ২০* রান। শেষমেশ ৪৬.৪ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আইরিশরা।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের এই বড় পুঁজি মূলত নিশ্চিত হয়েছে মোহাম্মদ মিথুন ও ফজলে রাব্বির ব্যাটে। এই দুজনই তুলে নিয়েছেন অর্ধশতক। মিথুন ৭৩ রান ও রাব্বি ৭৪ রান করে আউট হয়েছেন। এছাড়া, অধিনায়ক মমিনুল হকের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৬ রান।

ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ এ দলের অধিনায়ক মমিনুল হক। ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার জাকির হাসান ও মিজানুর রহমানের ব্যাটে দারুণ শুরু পায় বাংলাদেশ দল।

তবে দলীয় ২৩ রানে মিজানুর ২০ রান করে পিটার চেজের শিকার হয়ে ফিরলে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ দল। এরপর জাকিরের সাথে যোগ দেন টাইগার অধিনায়ক মমিনুল হক। এই জুটির স্থায়িত্ব বেশিক্ষণ হয়নি।

দলীয় ৩৪ রানে মাত্র ১০ রান করে ওপেনার জাকির হাসান চেজের দ্বিতীয় শিকার হন বালবিরনিকে ক্যাচ দিয়ে। তৃতীয় উইকেটে মমিনুলের সাথে ব্যাটিংয়ে যোগ দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এই দুজনের ব্যাটেই বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহ ৫০ ছাড়ায়।

শান্ত ১৫ রান করে সিমি সিংয়ের বলে কট এন্ড বোল্ড আউট হলে আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। এরপর মিথুনকে নিয়ে বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন মমিনুল হক। শুরু থেকেই দারুণ খেলছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক।

সুযোগ ছিল অর্ধশতক হাঁকানোর। তবে ব্যক্তিগত ৪৬ রানে চেজের তৃতীয় শিকার হয়ে আউট হলে আর অর্ধশতক পাওয়া হয়নি মমিনুলের। এরপর মিথুনের সাথে দেখে শুনে খেলতে থাকেন রাব্বি। মমিনুল অর্ধশতক তুলে না নিতে পারলেও মিথুন মাত্র ৬১ বলে দারুণ এক অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন।

তবে সেঞ্চুরি তুলে নিতে পারেননি তিনি। তিনি ৭৩ রান করে আউট হয়েছেন গার্থের বলে। এরপর একপ্রান্ত আগলে রাখা রাব্বিকে সঙ্গ দিতে পারেননি আল আমিন। তিনি ২২ রান করে চেজের চতুর্থ শিকার হয়েছে। সাইফউদ্দিনকে নিয়ে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন রাব্বি।

এরপর বৃষ্টি বাঁধায় বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। বৃষ্টির পরই সাইফ উদ্দিনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ইনিংসের শেষ ওভারে ফজলে রাব্বি ৭৪ রান করে কেনেডির বলে বোল্ড হয়ে আউট হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত সানজামুল ও শরিফুল ২ রান করে অপরাজিত থাকলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৮৩ রানের বড় পুঁজি পায় বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ এ (একাদশ): মিজানুর রহমান, জাকির হাসান, মোহাম্মদ মিথুন (উইকেটরক্ষক), মমিনুল হক (অধিনায়ক), আল আমিন, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ, ফজলে মাহমুদ, সানজামুল ইসলাম।

আয়ারল্যান্ড উলভস একাদশ: জেমস শ্যানন, এন্ড্রু বালবির্নি, হ্যারি টেক্টর (অধিনায়ক), সিমি সিং, লরাকান টাকার (উইকেটরক্ষক), অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন, গ্রাহাম কেনেডি, শেন গ্রেকেট, জনাথন গ্যাথ, ডেভিড ডেলেনি, পিটার চেজ।