প্রথম বলেই রুবেলের উইকেট

ছবি: প্রথম বলেই রুবেলের উইকেট

গায়ানায় সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৮০ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দ???য়েছে বাংলাদেশ দল। এই রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ১২.১ ওভারে দুই উইকেটে ৪১ রান। দেখেশুনে খেলছিলেন গেইল-লুইসরা। তবে এভিন লুইস ১৭ রান করে মাশরাফির বলে মাহমুদুল্লাহকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন।
সমান ছয় ওভার করেছেন মাশরাফি-মিরাজ। দুইজনই শুরু থেকে করেছেন মিতব্যয়ী বোলিং। রুবেল নিজের প্রথম বলেই ৬ রান করা শাই হোপকে ফিরিয়েছেন।
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ শুরুতেই উইকেট হারিয়েছে। দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও তামিম ইকবাল সতর্ক সূচনার চেষ্টা করলেও বিপদ থামাতে পারেননি।
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই হোল্ডারের আউট সুইংয়ে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তোলেন বিজয়। শুন্য রানেই বিজয়ের ইনিংসের ইতি ঘটান ওয়েস্ট ইন্ডিজ কাপ্তান। বিজয়ের বিদায়ে ক্রিজে নামেন সাকিব আল হাসান।
তামিম দেখেশুনে খেলে গেলেও সাকিব আল হাসান রান বাড়ানোর দায়িত্ব নেন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে বোলারকে চাপে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই বৃষ্টি বাঁধায় ২০ মিনিটের জন্য খেলা বন্ধ করতে হয়।
বৃষ্টির পরে খেলতে নেমে যেন আরও বেশি সতর্ক সাকিব-তামিম। আস্তে আস্তে এগোতে থাকেন তারা। পাওয়ার প্লে তে বেশ কিছু সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল্ডাররা। ব্যক্তিগত ১৭ রানে তামিমের ক্যাচ মিস করেছেন কভার অঞ্চলে থাকা উইন্ডিজ ফিল্ডার অ্যাশ্লে নার্স।

এরপরে তামিম যখন ২২ রানে ছিলেন তখন অ্যাশ্লে নার্সের স্পিন বলে স্লিপে ক্যাচ দেন তামিম। সেই ক্যাচটি উইকেটরক্ষক শাই হোপের হাঁটু ছুঁয়ে ক্রিস গেইলের হাতের নাগালে গেলেও দুজনের কেউই তা ধরতে পারেননি। তার পরের ওভারে সাকিবের আরেকটি ক্যাচ মিস (স্লিপে) করেন গেইল।
এছাড়া সাকিব আল হাসান অনেকগুলো বল খেলে ফেললেও উইকেটে ভালোভাবে থিতু হতে সময় নিচ্ছেন। তিন বার বল তার ব্যাটে লেগে স্ট্যাম্পে লাগতে চেয়েছিল।
তবে এতো বাঁধার পরেও ১৫ ওভারে ৫১ রান তুলতে সমর্থ হয় সাকিব-তামিম। দুজনের ৫০ রানের জুটি তৈরি হয় ১৫ ওভারের মধ্যেই। এরপরের দশ ওভারে মোটামুটি স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলেছেন তারা। ২৫ ওভারের মধ্যে তাদের রান পৌঁছায় ৯৮ তে।
দুজনেই দেখে শুনে খেলে ফিফটি তুলে নিয়েছেন। গড়েছেন ১০০ রানের জুটিও। দেখে শুনে শুরু করলেও পরের সময়টায় নির্ভার ক্রিকেট খেলে গিয়েছেন দুজনই।
এরপরে দুজনেই গড়েছেন রেকর্ড গড়া জুটি। এর আগে সাকিব তামিম কখনোই এতো রানের জুটি গড়েননি। দুজনের পূর্ববর্তী সর্বোচ্চ রানের জুটি ১৪৪ রানের (শ্রীলংকার বিপক্ষে)। এবার সেই রেকর্ড ভাঙলেন তারা।
একইসাথে এই মাঠের যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটিও নিজেদের নামে করে নিয়েছেন তারা। ২০৭ রানের জুটি গড়ার পরে সেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরে থেকে বিদায় নেন সাকিব।
১২১ বল খেলে ছয়টি চারে ৯৭ রান করেন তিনি। মাঝে ৮৫ রানের মাথায় সাকিবের ক্যাচ মিস করেছিলেন শিমরন হ্যাটমিয়ার। শেষমেশ বিশুর বলে হ্যাটমিয়ারের ক্যাচে বিদায় নেন তিনি। ফলে দুটি করে জীবন পেয়েছেন তিনি এবং তামিম।
এরপরে চারে নেমে চার বল খেলে তিন রান করে বিদায় নিয়েছেন সাব্বির রহমান। যদিও ভিডিওতে দেখা যায় সাব্বির স্ট্যাম্পিং হননি, আম্পায়ার ভুলে তাকে আউট দিয়েছেন। তবে রিভিউ নেওয়ার সুযোগ ছিল, যা তিনি মিস করেছেন।
তামিম সেঞ্চুরি তুলে নেন ১৪৬ বল খেলে! এতো বেশি বল খেলে সেঞ্চুরি পাননি কোন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান। শেষদিকে মুশফিক করেছেন ১১ বলে ৩০ রান। তার উইকেট নিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল।
তামিম শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৬০ বলে ১৩০ রানে (দশটি চার ও তিনটি ছক্কা)। বাংলাদেশ থামে চার উইকেটে ২৭৯ রান করে। গায়ানার মাটিতে এর আগে এতো রান করেনি বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ :
ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, শাই হোপ (উইকেটরক্ষক), শিমরন হ্যাটমিয়ার, জেসন মোহাম্মদ, জেসন হোল্ডার (অধিনায়ক), রভম্যান পাওয়েল, আন্দ্রে রাসেল, অ্যাশ্লে নার্স, দেবেন্দ্র বিশু, আলজারি জোসেফ।
বাংলাদেশ একাদশ :
তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাশরাফি মর্তুজা (অধিনায়ক), রুবেল হোসেন , মুস্তাফিজুর রহমান।