সেই গ্যাব্রিয়েল-রোচ জুজুতেই কুপোকাত বাংলাদেশ

ছবি:

অ্যান্টিগা টেস্টের আগে থেকেই ক্যারিবিয়ান পেসারদের নিয়ে ভয়ের মধ্যে ছিলো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। বিশেষ করে সবথেকে বেশি হুমকি হিসেবে যাদের দেখা হচ্ছিলো তারা হলেন কেমার রোচ এবং শ্যানন গ্যাব্রিয়েল।
ধারাবাহিকভাবে লাইন এবং লেন্থ বজায় রেখে বোলিং করার ক্ষমতা তো আছেই, সাথে গতির ঝড় দিয়েই ব্যাটসম্যানদের বুকে কাঁপন ধরাতে ওস্তাদ রোচ ও গ্যাব্রিয়েল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত সিরিজে তারই চাক্ষুষ প্রমাণ দেখেছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব।
পুরো সিরিজে দারুণ বোলিংয়ের প্রদর্শনী দেখিয়ে ২০ উইকেট নিয়েছিলেন গ্যাব্রিয়েল। আর রোচের শিকার ছিলো ১১টি উইকেট। নিজেদের মাটিতে যে ক্যারিবিয়ান পেসাররা কতটা বিধ্বংসী সেটি এর আগেও টের পেয়েছে সফরকারী দলগুলো।
এবার দীর্ঘ ৪ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যেয়ে সেটার প্রমাণ হাতেনাতে পেলো টাইগার ব্যাটসম্যানেরাও। অ্যান্টিগার সবুজাভ উইকেটে খেলতে নেমে প্রথম ইনিংসে সেই রোচের কাছেই পরাস্ত হতে হলো তাদের।

বাংলাদেশকে মাত্র ৪৩ রানে গুঁটিয়ে দেয়ার পেছনে সবথেকে বড় অবদান যে ছিলো তাঁরই। ৮ রানে একাই ৫ উইকেট নিয়েছিলেন রোচ। হয়তো দ্বিতীয় ইনিংসেও হন্তারকের ভূমিকায় আবির্ভূত হতে পারতেন তিনি।
তবে ইনজুরির কারণে আর মাঠে নামতে পারেননি তিনি সেই ইনিংসে। তাতে করে অবশ্য খুব একটা সমস্যা হয়নি উইন্ডিজদের। কারণ রোচের অভাব দারুণভাবে পূরণ করেছেন শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন তিনি।
তাঁর বোলিংয়ের সামনে এক নুরুল হাসান সোহান ছাড়া আর কোনও ব্যাটসম্যানই সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি। অবশ্য শুধু গ্যাব্রিয়েলই নন, ৩ উইকেট নিয়ে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন অধিনায়ক জ্যাসন হোল্ডারও। কিন্তু মুদ্রার ঠিক উল্টো পিঠ বাংলাদেশের পেসারদের ক্ষেত্রে।
যে পিচে রীতিমত লঙ্কাকান্ড ঘটিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান পেসাররা, সেই একই পিচেই প্রথম দিন একেবারে ম্রিয়মাণ ছিলেন কামরুল ইসলাম রাব্বি, রুবেল হোসেনরা। যদিও টেস্টের দ্বিতীয় দিন ৩ উইকেট করে শিকার করতে সক্ষম হয়েছিলেন স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ এবং অভিষিক্ত পেসার আবু জায়েদ রাহী।
তবে এতেও খুব একটা তারতম্য ঘটেনি ম্যাচের ভাগ্যে। আর সেটি হতে দেননি ক্যারিবিয়ান পেসাররাই। দ্বিতীয় ইনিংসে যদি তারা দাপট না দেখাতেন তাহলে হয়তো এভাবে পরাজিত হতো না বাংলাদেশ।
সুতরাং বলা যায় বাংলাদেশ যতটা না হেরেছে উইন্ডিজ দলের কাছে, তার থেকে বেশি পরাস্ত হয়েছে রোচ, গ্যাব্রিয়েল এবং হোল্ডারের কাছে। এখন দেখার বিষয় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে শোককে শক্তিতে পরিণত করে টাইগাররা ফিরে আসতে পারে কিনা।
তবে জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কে অ্যান্টিগার মতোই যে সবুজাভ উইকেট বানাবেন কিউরেটররা তা অনেকটাই নিশ্চিত করে বলা যায়। আর সেই পিচে আবারো হয়তো ঝড় তুলতে দেখা যাবে রোচ, গ্যাব্রিয়েলদের। এবার তাদের বিরুদ্ধে কি পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে নামবেন তামিম, সাকিবরা? সেটি জানতে হলে অপেক্ষায় থাকতে হবে ১২ই জুলাই পর্যন্ত।