আসল পরীক্ষা শুরু হয় দশ-বিশ ম্যাচ খেলার পরঃ মমিনুল

ছবি:

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল শক্ত প্রতিপক্ষ হলেও টেস্ট দল হিসেবে নিজেদের খুব একটা মেলে ধরতে পারেনি টাইগাররা। গত ৬ বছরে বাংলাদেশ দল মাত্র ৩১ টি সাদা পোষাকের ম্যাচ খেলেছে। ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ৪০টিরও কম টেস্ট খেলেছে তারা।
আর ২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মাত্র ৩৫ টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। ম্যাচ কম খেলার কারণেই সাফল্য বাড়েনি এটা বলতেই পারেন টাইগার ক্রিকেটাররা। তবে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই নিজেদের একটি শক্তিশালী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারার ব্যর্থতার দায় কার?
বাংলাদেশ দলের টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান মমিনুল হক মনে করেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা নিজেদের উন্নতির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেন না লম্বা সময়। ফলে সময়ের সাথে ঝড়ে যান তারা। ফলে সাফল্য বঞ্চিত হয় দলও।
"আমি মনে করি আমাদের চাহিদা কম থাকে। একজন খেলোয়াড়কে সবসময় উন্নতির চিন্তা করতে হবে। নাহলে সে এই স্থরেই আটকে থাকবে। এবং অন্য কেউ তার জায়গা নিয়ে নিবে। প্রতিপক্ষ তাকে আরও ভালো পড়তে পারবে এবং এই জানাশোনার সুবিধা নিবে।"

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হলে নিয়মিত ফিটনেস ও স্কিল বাড়ানোর কাজ করতে হবে। তাহলেই কেবল নিজের সাথে দলের সাফল্যও বাড়বে। ক্রিকেটারদের প্রথম ১০-১৫ টি ম্যাচ দেখতে দেখতেই চলে যায়। আসল লড়াই শুরু হয় এর পরই। এমনটাই ধারণা মমিনুলের।
"আপনার দশ ১৫ টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলে যাবে। তামিম ভাই সবসময় বলেন বাংলাদেশী খেলোয়াড়রা ২০ ম্যাচ পর এটা বুঝতে পারে। আমি তার সাথে একমত, প্রথম ১০-১৫ টি ম্যাচে প্রতিপক্ষ দল বুঝতে পারে না একটি নির্দিষ্ট খেলোয়ারের সঙ্গে কি করতে হবে। কিন্তু যখন সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিয়মিত হয়ে যাবে, তখন তার বসে থাকা চলবে না। একই ফিটনেস এবং স্কিলটাকে উন্নত করতে হবে।"
দলের প্রয়োজন অনুযায়ী বাটিং করতে হবে। দলের হয়ে অবদান রাখতে হবে। তাহলেই ক্রিকেটার হিসেবে নিজেকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব বলে মনে করেন মমিনুল হক। এ কারণেই ব্যাটিংয়ের সময় তার সেঞ্চুরির কথা মাথায় থাকে না বলে জানিয়েছেন এই বাঁহাতি।
"দল যেভাবে চায় সেভাবেই আপনাকে ব্যাট করতে হবে। সেঞ্চুরি আমার মাথায় থাকে না। আমি আমার দলের খেলাটি বাঁচানোর চেষ্টা করি। আমি সবসময় মেরে খেলিনা। কিন্তু আমি এই ধরণের শটগুলো নিয়ে চিন্তা করি। দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করে আমি একটি ম্যাচ বাঁচিয়েছিলাম। যার অর্থ আমি দলের জন্য কিছু করতে পেরেছি।"
এক একটি সিরিজে ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয় দলগুলোর। ফল??? শেখাও যায় অনেক কিছু। যেমন গত বছর অস্ট্রেলিয়া সিরিজের বাংলাদেশ দলের মূল ভাবনা ছিল স্পিন। আর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পেস। আবার ঘরের মাঠে চলতি বছর শ্রীলঙ্কা আসলো তখন আবারও স্পিন বোলিংয়ের উপর নজর দিয়েছেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা। মমিনুল জানিয়েছেন প্রতিটি সিরিজের আগেই তারা প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে কাজ করেন।
"এটা সম্পূর্ণই আপনার মানসিকতার বিষয়। আপনি প্রতিটি সিরিজ থেকেই ভিন্ন কিছু জিনিস শিখবেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমরা গত বছর স্পিন খেলার দিকে নজর দিয়েছিলাম। দক্ষিণ আফ্রিকায় নজর ছিল পেস এবং বাউন্সে। আবার শ্রীলঙ্কা যখন আসলো তখন স্পিন নিয়ে। ঘাবড়ে যাবার আগে আমরা ছোটোখাটো সব বিষয় নিয়ে চিন্তা করি।"