অজিদের উড়িয়ে দিয়ে সিরিজ জয়ের পথে ইংল্যান্ড

ছবি:

সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের। বল টেম্পারিংয়ের দায়ে নিষিদ্ধ স্টিভ স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নারের অনুপস্থিতিতে অনেকটাই নাজুক অবস্থার মধ্যে আছে তারা।
স্মিথ এবং ওয়ার্নারের অভাব যে কতটা বোধ করছে অজিরা সেটি ইংলিশদের বিপক্ষে টানা দুটি ওয়ানডে ম্যাচে পরাজয়ের মধ্য দিয়েই প্রমাণিত হয়েছে। শনিবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ৩৮ রানে পরাজিত হয়েছে টিম পেইনের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে কেনিংটন ওভালেও ৩ উইকেটে পরাজিত হতে হয়েছিলো সফরকারীদের। এর ফলে টানা দুই ম্যাচে জিতে সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গিয়েছে জস বাটলারের অধীনে খেলা ইংল্যান্ড।
অবশ্য কার্ডিফের মাঠে শনিবারের ম্যাচটিতে সিরিজে ফেরার উপলক্ষ হিসেবেই দেখেছিলো অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সেই আশা ধোপে টেকেনি। এদিন টসে জিতে শুরুতে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন অজি অধিনায়ক পেইন।
কিন্তু তাঁর সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণিত করে বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলা শুরু করেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানেরা। বিশেষ করে ওপেনার জ্যাসন রয় এবং অধিনায়ক বাটলার ছিলেন যথেষ্ট মারমুখী। দুর্দান্ত ব্যাটিং করে মাত্র ১০৮ বলে ১২০ রানের একটি ইনিংস খেলেছেন রয়। যেখানে ছিলো ২টি ছয় এবং ১২টি চারের মার।
অপরদিকে বাটলার খেলেছেন তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গীতেই। মাত্র ৭০ বলে ৯১ রানের একটি ক্যামিও ইনিংস এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। এই ইনিংস খেলতে তিনি মেরেছেন ২টি ছয় এবং ৮ টি চার। এছাড়াও জনি বেয়ারস্টো ৪২, অ্যালেক্স হেলস ২৬ এবং জো রুট ২২ রান করেন। আর ব্যাটসম্যানদের মিলিত প্রচেষ্টাতেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩৪২ রানের পাহাড়সম পুঁজি পায় ইংলিশরা।

অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রত্যেক বোলারই কম বেশি রান দিয়েছেন। যার মধ্যে সবথেকে খরুচে ছিলেন এন্ড্রু টাই। ২ উইকেট শিকার করলেও ৯ ওভারে তিনি রান দিয়েছেন ৮১। অপরদিকে জাই রিচার্ডসন ৬৪ রানে ২টি এবং কেন রিচার্ডসন ৫৬ রান খরচায় সমান সংখ্যক উইকেট নেন। আর ১টি উইকেট পেয়েছেন মার্কাস স্টোইনিস।
৩৪৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইংলিশ পেস এবং স্পিন অ্যাটাকের সামনে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি অজি ব্যাটসম্যানেরা। লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট, আদিল রশিদ এবং মইন আলির দুর্দান্ত বোলিং তোপে ১৭ বল হাতে রেখেই ৩০৪ রানে অলআউট হয়ে যায় সফরকারীরা।
প্ল্যাঙ্কেট ৫৩ রানে একাই ৪ উইকেট শিকার করে অজি ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নামিয়েছেন। আর তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন দুই স্পিনার রশিদ এবং মইন। রশিদ ৭০ রান খরচ করলেও ৩টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট পকেটে পুরেছেন। আর অলরাউন্ডার মইন ১০ ওভারে মাত্র ৪৭ রানে তুলে নিয়েছেন ২টি উইকেট।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সবথেকে সফল ব্যাটসম্যান ছিলেন শন মার্শ। বিরুদ্ধ স্রোতে দাঁড়িয়ে ১৩১ রানের অসাধারণ একটি ইনিংস খেলেছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রান এসেছে অ্যাস্টন অ্যাগারের ব্যাট থেকে, আর গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল ৩১ এবং ওপেনার ডি আরকি শর্ট ২১ রান করতে সক্ষম হন। বাদবাকি আর কেউই বলার মতো ইনিংস খেলতে পারেননি।
ব্যাট হাতে ১২০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলার জন্য ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন ইংলিশ ওপেনার জ্যাসন রয়। উল্লেখ্য সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ শে জুন। সিরিজে ফিরতে হলে সেই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই অস্ট্রেলিয়ার সামনে।
ইংল্যান্ড একাদশ-
জ্যাসন রয়, জনি বেয়ারস্টো, জো রুট, জস বাটলার (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), অ্যালেক্স হেলস, স্যাম বিলিংস, মইন আলি, আদিল রশিদ, লিয়াম প্ল্যাঙ্কেট, ডেভিড উইলি, মার্ক উড।
অস্ট্রেলিয়া একাদশ-
ডি আরকি শর্ট, ট্রাভিস হেড, শন মার্শ, মার্কাস স্টোইনিস, অ্যারন ফিঞ্চ, গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল, অ্যাস্টন অ্যাগার, টিম পেইন (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), এন্ড্রু টাই, জাই রিচার্ডসন, কেন রিচার্ডসন।