ইরফানের ভাবনায় শুধুই ডিপিএল

ছবি:

ইরফান শুকুর, মোহামেডানের হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে খেলছেন। বিসিবি হাই পারফর্মেন্স স্কোয়াডের এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান অগ্রণী ব্যাংকের বিপক্ষে খেলেছেন ম্যাচ জয়ী ৯২ রানের ইনিংস। তার ইনিংসে ভর করেই এবারের মৌসুমের সর্বোচ্চ স্কোর গড়েছে মতিঝিল পাড়ার দলটি।
২৪ বছর বয়সী ইরফানের ধ্যান জ্ঞান এখন শুধুই ডিপিএল। ঢাকা লীগে দলের হয়ে নিয়মিত রান করে দলের জয়ে অবদান রাখতে চান তিনি। এইচপি দলে নিয়মিত মুখ ইরফান নিয়মিত হতে চান বাংলাদেশ 'এ' দল ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল)।
ক্রিকফ্রেঞ্জির সাথে আলাপকালে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন তিনি। একই সাথে মোহামেডান, সাকিব আল হাসান, সালমান বাট, কাজি অনিক সহ আরও অনেক ইস্যুতে কথা বলেছেন ইরফান শুকুর। পাঠকদের জন্য ইরফানের সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হল...
টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ার পর একটা বড় ইনিংস এসেছে আপনার ব্যাট থেকে। শুরুতে ধরে খেললেও শেষের দিকে এগ্রেসিভ ব্যাটিং করেছেন আপনি???
- ওপেনাররা আমাদের ভালো সূচনা এনে দিয়েছিল। তখনই মিডেল অর্ডারে যারা আছেন তারা তিনশ ছাড়ানো স্কোর গড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করে ফেলে। উইকেট কিছুটা ভেজা ছিল। কিন্তু আমাদের মুমেন্টাম ছিল তিনশ প্লাস স্কোর গড়ার। কিন্তু যখন আমি আর রকিবুল ভাই ব্যাট করছিলাম তখন অবশ্য ম্যাচের অবস্থা একই রকম ছিল না। আমাদের একটু দেখেশুনে খেলতে হত। কিন্তু আমরা উইকেট বুঝে নেয়ার পর সেট হয়ে ক্যালকুলেটিভ রিস্ক নিয়ে খেলা শুরু করেছিলাম। আগে থেকে এমন পরিকল্পনা ছিল না, ম্যাচ অবস্থা বুঝে খেলেছি।
৯২ রানের ইনিংসটিকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
তেমন কিছুই না, অ্যাভারেজ ইনিংসই বলব। মূলত ভালো লেগেছে দলের বিপদে ভালো খেলতে পেরে। যে কেউই দলের বিপদে ভালো খেললে গর্ব বোধ করে।
মূলত টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হয়েও এই নতুন দায়িত্ব কেমন বোধ করছেন?

-আমি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান কিন্তু টিম কম্বিনেশনের কারনে আমাকে নিচে খেলতে হচ্ছে। আমি উপরে ব্যাট করতেই পছন্দ করি। আমি শুরুতে ধরে খেলে ইনিংস বড় করতে পছন্দ করি। কিন্তু এখন দলের জন্য নিচে ব্যাট করতে হচ্ছে।
দলে সালমান বাট, বিপুল শর্মার মত বিদেশি ক্রিকেটার আছে। ওরা দলের সাথে মানিয়ে নিতে পারছে?
-সালমান বাট আমাদের সাথে ভালোই মানিয়ে নিয়েছিল। আমাদের কম্বিনেশনের কারনে তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়। একজন বোলার দরকার ছিল আমাদের যে ব্যাট করতে পারে। তাই বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে বিপুল শর্মা খেলছেন। তবে সালমান আমাদের সাথে ভালোই মানিয়ে নিয়েছিল।
মোহামেডান এখন চার নম্বরে আছে পয়েন্ট টেবিলে, এবার কি মনে হচ্ছে বড় কিছু সম্ভব?
-সবারই একটা লং টার্ম প্ল্যান থাকে। আমরা আপাতত ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করছি। আমরা প্রথম দুটি ম্যাচ হেরে পিছিয়ে পড়েছিলাম। আমরা ভালোই কামব্যাক করেছি দুটি ম্যাচ জিতে। এখন আমাদের চিন্তা প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে আগামী ম্যাচ নিয়ে। আর লং টার্ম চিন্তা তো চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আবাহনী-মোহামেডানের মত দল তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই দল গঠন করে।
দলে সাকিব না থাকায় প্রভাব পড়ছে?
-শুরুর দিকে সাকিব ভাই না থাকায় সমস্যা হচ্ছিল। আমাদের একজন অলরাউন্ডার দরকার ছিল। কিন্তু এখন বিপুল শর্মা আছে, তাইজুল ভাই আছেন। তাইজুল ভাই থাকাতে আমাদের বোলিং অনেক স্ট্রং হয়েছে। সেরা অলরাউন্ডারকে তো সবদলই মিস করবে। তবে জয়ের ধারায় ফিরে এসেছি আমরা, এখন সেরকম ভাবে মিস করছি না।
মোহামেডানে তরুন পেসার কাজি অনিককে কেমন মনে হয়?
-আমাদের কোচ ও অধিনায়ক ওকে ভবিষ্যতের জন্য সম্পদ হিসেবে দেখছে। ওর মধ্যে মুস্তাফিজের অনেক গুণ রয়েছে। ওর বোলিংয়ে ভালোই কাটার রয়েছে। ভেরিয়েশন অনেক ভালো ব্যবহার করতে পারে সে। ওর বয়স হিসেবে সে অনেক পরিনত বোলার।
এইচপি টিমের সফর থেকে কেমন উপকৃত হয়েছেন?
-মানসিকতার দিক থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে। আমাদের মানসিকভাবে অনেক শক্ত করতে সাহায্য করে এইচপি ক্যাম্প। মানসিকভাবে শক্ত হওয়ার কারনেই আমরা ভালো করছি। খেয়াল করে দেখবেন, আমাদের সাথে সবাই কিন্তু ভালো পারফর্ম করছে। ঢাকা প্রিমিয়ার লীগ, এ টিম, বিপিএল সব জায়গায় ভালো করছে। আর সম্প্রতি টি-টুয়েন্টি দলে চার-পাঁচজন কিন্তু এইচপি স্কোয়াড থেকেই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। প্রায় সবারই অনেক উন্নতি হয়েছে। আমিও মনে করি আমার ক্রিকেটে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে মানসিক দিক থেকে আমি অনেক দুর্বল ছিলাম, এই জায়গায় আমার অনেক উন্নতি হয়েছে যা আমার ক্রিকেটে সাহায্য করছে।
বিপিএলে নিয়মিত ম্যাচ খেলার সুযোগ পান নি গত মৌসুমে। সামনে কি প্রত্যাশা? ডিপিএলের পারফর্মেন্সে তো ফ্র্যাঞ্চাইজি গুলোর চোখ থাকে।
-টিম কম্বিনেশনের জন্য চিটাগংয়ে ম্যাচ পাইনি। দলে উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান এনামুল হক বিজয়, লুক রঞ্চি ছিল। কম্বিনেশনের কারনেই সুযোগ পাই নি। সবার ইচ্ছা থাকে সব ম্যাচ খেলার। আর আমি মনে করি আমার অনেক কিছু প্রমান করার বাকী আছে। ডিপিএলে ভালো খেলতে চাই। ডিপিএলের উপর দল গুলোর চোখ থাকে। এখানে যারা ভালো খেলে তাদেরকেই ড্রাফট থেকে নেয়া হয়।
নিকট ভবিষ্যতে ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
-আপাতত আমার মূল লক্ষ্য বাংলাদেশ 'এ' দলে নিয়মিত হওয়া। আমি এইচপি দলে আছি এখন। আমি এখন ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে ভালো খেলে 'এ' দলে সুযোগ করে নিতে চাই। আর সবার তো লং টার্ম লক্ষ্য থাকে বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলা, তবে আপাতত ছোট লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি।