সৌম্য, মমিনুলদের হয়ে ব্যাট ধরলেন মাশরাফি
ছবি:

দেখতে দেখতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭টি বছর পার করে ফেলেছেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। শুরু করেছিলেন মাত্র ১৭ বছর বয়সের একজন টগবগে এক তরুণ হিসেবে, আর এখন পরিণত হয়েছেন ৩৪ বছরের এক পোড় খাওয়া ক্রিকেটার হিসেবে।
এই বয়সে এসে যেকোনো পেসারই নিজের ক্যারিয়ারের অন্তিম লগ্ন দেখে ফেলেন। মাশরাফি নিজেও কি তেমনটা ভাবছেন? কিংবা তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাই বা কি? এসকল প্রশ্নেরই উত্তর তিনি দিয়েছেন সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে।
মাশরাফির নিজের ব্যক্তিগত মতামত ক্রিকেটে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা করা অনেকটাই বোকার কাজ। আর সেই কারণেই সেটি নিয়ে খুব একটা ভাবনা চিন্তা করতে নারাজ তিনি। বরঞ্চ বর্তমান নিয়েই সব ভাবনা তাঁর। মাশরাফি বলেন,
'অনেকেই বলে ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবা জ্ঞানীর কাজ। আমার মতে, ক্রিকেটে এটা বোকার কাজ। ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবি না। সব সময় বর্তমানে থাকতে চাই। আপাতত যেমন ভাবছি শুধু বিসিএলের শেষ রাউন্ড খেলা নিয়ে। ওটা শেষে পরেরটা ভাবব। এমনও হতে পারে, কয়েকটা ম্যাচ খারাপ খেললাম, মনে হলো আর ভালো লাগছে না, দুম করে ছেড়ে দিলাম। তো খুব দূর ভবিষ্যৎ ভেবে লাভ নেই।'

এরপরেই অবশ্য নিজের মূল লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন নড়াইল এক্সপ্রেস। আর সেই লক্ষ্যটি যে ২০১৯ বিশ্বকাপে ভালো খেলা সেটি বলাই বাহুল্য। অন্তত বিশ্বকাপ পর্যন্ত যেন খেলতে পারেন সেটাই পরবর্তী ইচ্ছা মাশরাফির। আর তাই তিনি বলছেন,
'অবশ্যই, বিশ্বকাপ আমার মূল লক্ষ্য, এটা বলতে পারেন। আগে-পরে অনেক কিছুই হতে পারে। তবে লক্ষ্য বিশ্বকাপই। শুধু ক্রিকেটার হিসেবে বললে, বিশ্বকাপ পর্যন্ত নিজেকে নিয়ে যাওয়া। আর কোনো কিছু নয়।'
দল নিয়েও কম ভাবনা নেই মাশরাফির। বিশেষ করে সৌম্য, ইমরুল, বিজয় কিংবা মমিনুলদের মতো ক্রিকেটারদের ফর্মে ফেরার জন্য করণীয় সম্পর্কে চিন্তা করছেন তিনি। মাশরাফির ভাষ্যমতে,
'আর দলের কথা বললে, কিছু ভাবনা তো আছেই। তামিমের সঙ্গে একজন থিতু ওপেনিং পার্টনার পাওয়া, তিনে একজন প্রপার ব্যাটসম্যান পাওয়া, একজন ভালো পেস বোলিং অলরাউন্ডার, ম্যাচ জিততে গেলে সুনির্দিষ্ট কিছু জায়গায় কিছু ক্রিকেটার দরকার, এসব ভাবনা মনে আসে। সৌম্য, ইমরুল, বিজয় (এনামুল হক), ওদের কিভাবে উজ্জীবিত করে ফর্মে আনা যায়, মমিনুল আনা যায় কিনা, এসব ভাবি।
মাশরাফির কথা শুনে অবশ্য মনে হতে পারে নতুন ক্রিকেটারদের থেকে পুরনোদের প্রতিই তাঁর বেশি আস্থা থাকছে। যদিও অধিনায়ক নিজে তেমনটি মানতে চাইলেন না। জানিয়েছেন নতুন প্রতিভাবান ক্রিকেটার আসলে তাঁর জায়গা এমনিতেই পাকা হয়ে যাবে। তবে পুরনো ক্রিকেটাররা যে অভিজ্ঞতার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে সেটি ম্যাশ নিজেও স্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য,
'নতুন যদি সেই রকম কোনো প্রতিভা আসে কিংবা কেউ অসধারণ পারফর্ম করে, তার জায়গা আপনাআপনি হয়ে যাবে। কিন্তু যদি গড়পড়তাই হয় কিংবা খুব দারুণ কিছু না হয়, তাহলে পুরোনোদের ধরে রেখে ওদের ফর্মে ফেরানোর চেষ্টাতেই আমার আস্থা। কারণ সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ফ্লেভারটা জানে। অনেক কিছু যেভাবে সামলাবে, একই মানের নতুন ছেলেটি সেটি পারবে না।'