promotional_ad

গুরু সালাউদ্দিনের দীক্ষাই 'মমিনুল কাব্যের' রহস্য

promotional_ad

একটা সময় তৎকালীন বাংলাদেশ কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বরাবরই বলে এসেছিলেন স্পিনারদের বিপক্ষে বেশ দুর্বল টাইগার ব্যাটসম্যান মমিনুল হক, স্পিন খেলার সামর্থ্যও নাকি তাঁর অনেক কম। আর সেই কারণেই হয়তো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলমান চট্টগ্রাম টেস্টের আগে নিজেকে তার কাছে বেশ ভালোভাবেই প্রমাণ করতে চেয়েছেন তিনি। 


চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন রঙ্গনা হেরাথ, দিলরুয়ান পেরেরা ও লক্ষ্মণ সান্দাকানদের মতো বিশ্বমানের স্পিনারদের যেভাবে খেলেছেন মমিনুল তাতে করে হাথুরুকে বেশ ভালোভাবেই জবাব দিয়েছেন মমিনুল। লঙ্কান বোলারদের বুধবার রীতিমত তুলোধুনো করেছেন তিনি।


খেলেছেন ১৭৫ রানের দারুণ একটি ইনিংস। তাঁর এই ইনিংসের ১৪৭ রানই এসেছে স্পিনারদের বিপক্ষে। মমিনুলের এই বদলে যাওয়ার রহস্য নিয়ে সম্প্রতি বিডি নিউজ ২৪ এর সাথে কথা বলেছেন তাঁর গুরু মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। অভিজ্ঞ এই কোচ বলেন,


'স্পিনে কিন্তু মমিনুল সবসময়ই সাবলীল ছিল। গত কিছুদিনে আমি স্রেফ একটি জায়গায় একটু সমস্যা দেখেছিলাম। ওর ‘ইনিশিয়াল ফুট মুভমেন্ট।’ শটের সময় একটি স্টেপ নিচ্ছিল ও। স্পিনাররা বেশির ভাগ সময়ই বল করে সামনে। একটি স্টেপে থমকে যাওয়ায় ওর শটের বিকল্প কমে গিয়েছিল। স্পিনার এটা বুঝেই ওকে ফাঁদে ফেলেছে।'


মমিনুলের ইনিশিয়াল মুভমেন্ট নিয়ে কাজ করার ফলেই উন্নতি হয়েছে মমিনুলের বলে জানিয়েছেন সালাউদ্দিন। মূলত বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগ (বিসিএল) দিয়েই নিজেকে প্রস্তুত করতে সক্ষম হয়েছেন মমিনুল জানিয়ে তিনি বলেন, 


'আমি ওর ইনিশিয়াল মুভমেন্ট নিয়ে একটু কাজ করেছি। ও সেটি প্র্যাকটিস করেছে। বিসিএলের প্রথম ম্যাচে সেটি কাজে লাগার পর খুব খুশি ছিল। আরও কাজ করেছে। ফল পেয়েছে।'


পূর্বের এবং বর্তমানের মমিনুল সম্পর্কেও কথা বলেছেন সালাউদ্দিন। জানিয়েছেন মূলত পায়ের কাজ দিয়েই স্পিনারদের বশে আনতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। স্পিনাররা তাঁর এই মুভমেন্টই বুঝে উঠতে পারেনি জানিয়ে সালাউদ্দিন বলেন,  



promotional_ad

'আজ (প্রথম দিন) দেখেছেন, ও সামনে খেলেছে, পেছনে খেলেছে, বেরিয়ে এসেছে, পুরো ক্রিজ দারুণভাবে ব্যবহার করেছে। পায়ের কাজ দিয়ে স্পিনারদের থিতু হতে দেয়নি, স্পিনাররা ওর মুভমেন্ট অনুমানও করতে পারেনি।'


নিজেকে বরাবরই প্রমাণ করতে চান মমিনুল। যার কারণে প্রতি মুহূর্তেই উন্নতি করার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামেন তিনি। মমিনুলের পাশাপাশি তামিমও একই কাজটি করেন যার কারণে প্রতিনিয়তই উন্নতি করতে পারেন তারা। সালাউদ্দিনের ভাষ্যমতে, 


'দেখুন, মমিনুলের মাঝে এই ব্যাপারটা বরাবরই আছে। কখনোই নিজের ওপর পুরো খুশি হয় না। সবসময়ই কিছু না কিছু জিজ্ঞেস করে। উন্নতি করতে চায়। তামিমের মাঝেও এটা আছে। অনেক কিছু জানতে চায়। নিজেদের আরও সমৃদ্ধ করার তাড়না ওদের তীব্র।'


এই সালাউদ্দিনই একটা সময় স্তম্ভিত হয়েছিলেন যখন শুনেছিলেন মমিনুল নাকি স্পিন এবং শর্ট বলে দুর্বল। কেননা অভিষেকের পর থেকেই স্পিন বোলিং খেলতে পারদর্শী ছিলেন তিনি। অভিজ্ঞ এই কোচ বলছিলেন, 


'আগে একবার বলা হয়েছিল, মুমিনুল শর্ট বলে দুর্বল। অবাক হয়েছিলাম। আবার যখন শুনলাম মুমিনুল স্পিনে দুর্বল, আমি স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিলাম। স্পিনে মুমিনুলের চেয়ে ভালো বাংলাদেশে কজন আছে!'


তবে শুরু থেকে স্পিন ভালো খেলার প্রমাণ দিয়ে আসলেও মূলত টেকনিক্যাল সমস্যার কারণেই আগের রূপে ফিরতে কষ্ট হয়েছে মমিনুলের বলে বিশ্বাস সালাউদ্দিনের। আর এই টেকনিক্যাল সমস্যা খেলার মধ্যে থাকার কারণে খুঁজে বের করতে পারেননি মমিনুল জানিয়ে সালাউদ্দিন বললেন,


'মমিনুলের যা একটু সমস্যা হয়েছিল, পুরোটাই টেকনিক্যাল। এমন নয় যে মুমিনুল আগে রান করেনি। একজন ব্যাটসম্যানের সমস্যা হতেই পারে। অনেক গ্রেট ব্যাটসম্যানেরও মাঝেমধ্যে এরকম হয়। খেলার মধ্যে থাকে বলে তারা নিজেরা সেটা হয়তো ধরতে পারে না। তখন কোচের দায়িত্ব সেই সমস্যা চিহ্নিত করে কাজ করা। ছুঁড়ে ফেলা সহজ, কিন্তু সেটি তো সমাধান নয়!'



চট্টগ্রাম টেস্টের এই সেঞ্চুরিটি মমিনুল হাঁকিয়েছেন দীর্ঘ ১৩ টেস্টের পর। এর কারণ হিসেবে সালাউদ্দিন দায়ী করেছেন টেস্ট কম খেলাকে এবং ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়াকে। সালাউদ্দিনের ভাষায়, 


'খেয়াল করে দেখুন, ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়ার পর এটির আগে আর টেস্ট সেঞ্চুরি করতে পারেনি মুমিনুল। বাংলাদেশের বাস্তবতায় শুধু টেস্ট খেলে নিজেকে ধরে রাখা কঠিন। টেস্ট আমরা কম খেলি। অন্য সময়টায় দলের সঙ্গে না খেলে একা একা কাজ করা কঠিন। আমি নিশ্চিত, যথেষ্ট সুযোগ দিলে ওয়ানডেতেই মুমিনুল এমরকম ইনিংস খেলবে।'


দীর্ঘ দিন সেঞ্চুরি বঞ্চিত থাকার পরেও ভেঙ্গে পড়েননি টাইগারদের লিটল মাস্টার খ্যাত মমিনুল হক। মূলত মানুষটি মমিনুল বলেই নিজেকে ধরে রাখতে পেরেছে মনে করেন তাঁর কোচ। তাঁর জায়গায় অন্য কেউ থাকলে নির্ঘাত সে ভেঙ্গে পড়তো এই পরিস্থিতিতে জানিয়ে সালাউদ্দিন বলেন, 


'এটি কোনো অজুহাত নয়। শুধু ব্যাটিং নিয়ে কাজ করাই নয়, এত বিরতি পড়লে মানসিকতায় অনেক সমস্যা হয়। নিজেকে অনুপ্রাণিত করাও কঠিন। আমি তো বলব, মুমিনুল বলেই নিজেকে ধরে রাখতে পেরেছে। কারণ মানসিকভাবে অনেক শক্ত ও। অন্য কেউ হলে হয়ত ঝরে পড়ত। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সে রকম উদাহরণ আছে বেশ কিছু।'



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball