মাঠ ছাড়লেন সাকিব

ছবি:

নাসিরের বদলি হিসেবে মিরাজের অন্তর্ভুক্তি ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতেই কাজে দিল। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই লঙ্কান বাঁহাতি ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকাকে লং অনের ক্যাচে পরিনত করেন তিনি।
৮ রান তুলতেই লঙ্কানদের প্রথম উইকেটের পতন ঘটান মিরাজ। তবে সেই মিরাজের এক ওভারেই তিন ছয় ও এক চার হাঁকিয়ে ক্রিজে নিজের উপস্থিতি জানান দেন তরুন কুসাল মেন্ডিস।
তবে বেশীক্ষণ ব্যাট চালাতে পারেনি এই ডানহাতি। মাশরাফির করা ষষ্ট ওভারে লেন্থ বলে পুল করতে গিয়ে লং অনে সহজ ক্যাচ তোলেন তিনি। অতিরিক্ত শট খেলার প্রবণতা ৯ বলে ২৮ রান করা মেন্ডিসের কাল হয়ে দাঁড়ায়।
অবশ্য দুই উইকেট পতনে রান বন্যা থামেনি শ্রীলঙ্কার। ওপেনার থারাঙ্গা দেখেশুনে খেললেও ডিকওয়েলার ব্যাটে ওভার প্রতি ছয় করে রান তুলছে শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতে ৬০ রান তুলে নেয় সফরকারিরা।
জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ভোগাচ্ছিল লঙ্কানরা। ম্যাচে ফিরতে উইকেটের দরকার ছিল। দুই বাঁহাতি ক্রিজে থাকায় অফ স্পিনার মিরাজকে টানা বল করিয়ে যান মাশরাফি। ১৫তম ওভারে মিরাজের অফ স্পিন থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পান ডিকওয়েলা।
টাইগারদের লেগ বিফরের আবেদনে আম্পায়ারের সাড়া মিললেও রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান তিনি। লঙ্কানদের স্কোর তখন ১৫ ওভারে ৮০ রান। সুযোগ পেয়ে অর্ধশত রানের পার্টনারশিপ পূর্ণ করে থারাঙ্গা-ডিকওয়েলা।
উইকেটের আশায় দুই প্রান্ত থেকে অফ স্পিনার ব্যবহার করেন টাইগার কাপ্তান। মিরাজ এক প্রান্ত থেকে টানা দশ ওভার বল করে যান। অন্য প্রান্ত থেকে রিয়াদকে বল তুলে দেন মাশরাফি।

তবে স্পিনে নয়, কাঙ্ক্ষিত উইকেট আসে পেসার সাইফউদ্দিনের বলে। ১৪তম ওভারে লেন্থ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলে পরাস্ত হয়ে সাব্বিরের হাতে সহজ ক্যাচ তোলেন ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা ডিকওয়েলা। ৪২ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে দলীয় ১১৩ রানে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।
সুযোগ ছিল আরেক থিতু ব্যাটসম্যান থারাঙ্গাকে সাজঘরে পাঠানোর। সাকিবের বলে স্টেপ আউট করে কাভারের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন তিনি। কিন্তু লাফিয়ে ওঠা মিরাজ বলটি থামাতে ব্যর্থ হন। ৩৯ রানে অপরাজিত ছিলেন এই বাঁহাতি ওপেনার।
ঠিক পরের ওভারে রুবেলের বলে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ তোলেন তিনি। তবে ডাইভ দিয়েও বলের কাছে পৌছতে পারেনি সাব্বির। ৩০তম ওভারে ফের আকাশে বল তোলে লঙ্কান কাপ্তান চান্দিমাল। সাকিবকে বাউন্ডারি ছাড়া করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তোলেন তিনি।
নড়বড়ে ব্যাটিং করে ইনিংসের ৩২তম ওভারে এসে ৮৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন। একই সাথে মিডেল ওভারে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা চেষ্টা শুরু করেন চান্দিমাল। সাকিবের বলে রিভার্স সুইপ করে সাকিবকে পয়েন্ট বাউন্ডারি ছাড়া করেন তিনি।
একের পর এক সুযোগ পাওয়া থারাঙ্গাকে ৩৬তম ওভারে এসে মুস্তাফিজের বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন তিনি। তবে রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান তিনি। অবশ্য সুযোগ পেয়েও বেশীক্ষণ টিকতে পারেন নি তিনি। একই ওভারে মুস্তাফিজের অফ কাটারে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি।
আউট হওয়ার আগে ৯৯ বলে খেলে ৫৬ রানের ধিরগতির ইনিংস খেলেন এই লঙ্কান ওপেনার। সেখানেই থামে নি বাংলাদেশ। রান আটকে চাপ সৃষ্টি করে ভয়ঙ্কর থিসারা পেরেরাকে সাজঘরে পাঠান রুবেল। ৩৯তম ওভারে রুবেলের বাউন্সারে পুল করতে গিয়ে তামিমকে সহজ ক্যাচ দেন পেরেরা।
নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা লঙ্কানদের কোন রকম সুযোগ দিচ্ছিল না টাইগার ফিল্ডাররা। কিন্তু ৪২তম ওভারে বড় বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজের বলে ফিল্ডিং করতে গিয়ে বাম হাতের আঙ্গুলে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন সাকিব।
বাংলাদেশ একাদশ-
মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিথুন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মুশফিকুর রহিম (উইকেট রক্ষক), মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, রুবেল হোসেন, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মেহেদি হাসান মিরাজ।
শ্রীলঙ্কা একাদশ-
উপুল থারাঙ্গা, দানুশকা গুনাথিলাকা, কুশল মেন্ডিস, দীনেশ চান্ডিমাল (অধিনায়ক), নিরোশান ডিকওয়েলা (উইকেটরক্ষক), আসেলা গুনারত্নে, থিসারা পেরেরা, আকিলা ধনঞ্জয়া, সুরঙ্গা লাকমল, দুশমন্ত চামিরা, শিহান মাদুশাংকা।