‘ম্যাক্সওয়েল-লিভিংস্টোন কেবল ছুটি কাটাতে আইপিএলে আসে’

ছবি: গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (বামে) ও লিয়াম লিভিংস্টোন (ডানে)

২০১২ সালে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে আইপিএলে অভিষেক হয় ম্যাক্সওয়েলের। মারকুটে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে অফ স্পিন করতে পারায় আইপিএলের প্রতি নিলামেই চড়া দামে বিক্রি হতে অস্ট্রেলিয়ার এই অলরাউন্ডার। তবে ২০১৪ সালে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব কিংবা ২০২১ সালে বেঙ্গালুরু হয়ে খেলা মৌসুমটা ছাড়া কিছুই করতে পারেননি তিনি। প্রত্যাশা মেটাতে না পারায় আইপিএলের চলমান আসরের মেগা নিলামের আগে ম্যাক্সওয়েলকে ছেড়ে দেয় বেঙ্গালুরু।
ম্যাক্সওয়েলের জরিমানা, পেলেন ডিমেরিট পয়েন্ট
৯ এপ্রিল ২৫
অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডারকে ৪ কোটি ২০ লাখ রুপিতে দলে টানে পাঞ্জাব। নিজের পুরনো ঠিকানায় ফিরলেও এখন পর্যন্ত জ্বলে উঠতে পারেননি তিনি। প্রীতি জিন্তার দলের হয়ে ৬ ম্যাচে ৪১ রান করেছেন ম্যাক্সওয়েল। যেখানে এক ম্যাচে ৩০ এবং বাকি ৫ ম্যাচে ১১ রান করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। এমন পারফরম্যান্সের পর বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে সবশেষ দুই ম্যাচেই একাদশের বাইরে ছিলেন তিনি। ম্যাক্সওয়েলের মতো পারফরম্যান্সের দুরাবস্থা লিভিংস্টোনেরও।
পাঞ্জাবের হয়ে কয়েক মৌসুম খেলেছেন তিনি। তবে ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠতে না পারায় তাকে ছেড়ে দেয় পাঞ্জাব। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের আশায় মেগা নিলাম থেকে ৮ কোটি ৭৫ লাখ রুপিতে কিনে নেয় বেঙ্গালুরু। তাদের হয়ে এখন পর্যন্ত সাত ম্যাচ খেলে করেছেন মাত্র ৮৭ রান। যেখানে একটি ম্যাচেই ৫৪ রান করেছেন। অর্থাৎ বাকি ৬ ম্যাচে লিভিংস্টোনের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৩ রান। এমন পারফরম্যান্সে তাই ম্যাক্সওয়েল ও লিভিংস্টোনের সমালোচনা করেছেন শেবাগ। শুধু তাই নয় তাদের মাঝে জয়ের ক্ষুধাও দেখেন না তিনি।

বেঙ্গালুরু ও পাঞ্জাবের ম্যাচ শেষে ক্রিকবাজের অনুষ্ঠানে শেবাগ বলেন, ‘আমার মনে হয়, ম্যাক্সওয়েল ও লিভিংস্টোনের (ভালো করার) ক্ষুধা শেষ হয়ে গেছে। তারা এখানে কেবল ছুটি কাটাতে এসেছে। অবকাশ উপভোগ করে চলে যাবে। দলের জন্য তাদের কোনো ভালোবাসা নেই। দলকে জিততে সহায়তা করতে হবে কিংবা দলটি এখনও কোনো শিরোপা জিততে পারেনি, সেই শূন্যতা দূর করতে অবদান রাখতে হবে (এমন কোনো ভাবনা তাদের নেই)।’
‘আমি অনেক বিদেশি খেলোয়াড়ের সঙ্গে সময় কাটিয়েছি; কিন্তু কেবল দুয়েকজন আমাকে এই অনুভূতি দিয়েছে যে, ‘হ্যাঁ, আমি সত্যিই দলের জন্য কিছু করতে চাই।’ দলকে জেতাতে হবে, এই দুইজনের মাঝে এমন মরিয়া কোনো ভাব দেখি না আমি। তারা শুধু বড় বড় কথা বলে ফিরে যায়। কোনো পারফরম্যান্স নেই।’
ম্যাক্সওয়েল ও লিভিংস্টোনদের মাঝে জয়ের ক্ষুধা দেখতে না পেলেও আইপিএলে ভালো বিদেশি ক্রিকেটারও দেখেছেন শেবাগ। ভারতের সাবেক ওপেনারের চোখে অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাকগ্রা ও সাউথ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো ক্রিকেটাররা ম্যাচ খেলতে এবং জিততে উদগ্রীব হয়ে থাকতেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের মাঝেও আইপিএলে ছুটি কাটাতে আসার মনোভাব দেখেছেন শেবাগ।
তিনি বলেন, ‘ডেভিড ওয়ার্নার, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ম্যাকগ্রা…ম্যাকগ্রা প্রায়ই জিজ্ঞাস করত, ‘আমি কেন খেলছি না, আমাকে খেলাও, আমি ম্যাচ জেতাব…’ এই তিন ক্রিকেটার আলাদা ছিল। শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনেক ক্রিকেটার আছে, যারা কেবল আসে ও চলে যায়। এটা বোঝা যায় যখন দল সেমি-ফাইনাল বা ফাইনালে হারের পর তারা জিজ্ঞাস করে ‘পার্টি কোথায়?’ হারের কোনো হতাশা নেই তাদের। আইপিএল শেষ হয়েছে, এতেই তারা খুশি, কারণ দেশে ফিরে যেতে পারবে।’