হেলস-সাইফের ১৮৬ রানের জুটিতে সহজেই জিতল রংপুর
ছবি: অ্যালেক্স হেলসের আরেকটি ছয়, ক্রিকফ্রেঞ্জি
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই আজিজুল হাকিম তামিমের উইকেট হারায় রংপুর । তানজিম হাসান সাকিবের অফস্টাম্প তাক করা বলটি ব্যাকফুটে গিয়ে খেলতে দেরি করায় তানজিমের দিকেই ক্যাচ তুলে দেন তামিম। ক্যাচটি সহজেই লুফে নেন বোলার। শুরুতে উইকেট হারালেও ইনফর্ম সাইফ ও হেলসের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় রংপুর। পাওয়ার প্লে'তে দলটি করে এক উইকেটে ৫৪ রান।
হেলস-সাইফের দুজনের ব্যাটে ১০.২ ওভারে একশ রানে পৌঁছে রংপুর। নিহাদুজ্জামানের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে শতরান এনে দেয়ার পাশাপাশি নিজেও হাফ সেঞ্চুরি করেন সাইফ। ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। এর এক ওভার পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন হেলসও। তিনিও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছান ৩১ বলে।
১৬তম ওভারের প্রথম বলে দেড়শ রান স্পর্শ করে দলটি। এই দুজনের ১৮৬ রানের জুটি ভাঙেন তানজিম। তার শর্ট বলে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন সাইফ। ফেরার আগে ৪৯ বলে তিনটি চার ও সাতটি ছক্কায় ৮০ রান করেন সাইফ। এরপরই ৫৪ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন হেলস। বিপিএলে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। সেই ওভারে ২১ রান নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন হেলস।
৫৬ বলে দশটি চার ও সাতটি ছক্কায় ১১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন হেলস। তার সঙ্গে চার বলে আট রানে অপরাজিত ছিলেন ইফতিখার আহমেদ। এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী ভঙ্গিমায় খেলতে থাকে সিলেট। ঘরের মাঠে চার-ছক্কায় ব্যাটারদের বিনোদন দিতে থাকে দলটি। মাত্র পাঁচ ওভারেই দলের রান ৪৭-এ পৌঁছে দেন সিলেটের দুই ওপেনার জর্জ মানজি এবং রনি।
সাইফউদ্দিনের প্রথম ওভারে ছয় রান নিয়ে শুরু করলেও শেখ মেহেদীর দ্বিতীয় ওভারে তারা নেয় ১৩ রান। এরপর নাহিদ রানার করা চতুর্থ ওভারে আবারও ১৩ রান নেয় দলটি। সেই ওভারে একটি করে ছক্কা মারেন এই দুজন। পঞ্চম ওভারে আকিফ জাভেদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন রনি ও মানজি। যদিও এই ওভারের শেষ বলে মানজিকে ফেরান জাভেদ। তার স্লোয়ার বুঝতে পারেননি মানজি। স্কটল্যান্ডের এই ওপেনার ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন, যা লুফে নেন আজিজুল হাকিম তামিম। ৪৭ রান আসে ওপেনিং জুটিতে। পাওয়ার প্লে'তে সিলেট তোলে এক উইকেটে ৫৫ রান।
দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন রনি। ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন এই ওপেনার। তবে ইনিংস বেশি বড় করতে পারেননি তিনি। হাফ সেঞ্চুরির দুই ওভার পরই শেখ মেহেদীর বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন তিনি। মেহেদীর লেংথ ডেলিভারিটি ফ্লিক করতে গিয়ে লাইন মিস করেন রনি। শুরুতে তাকে আউট না দিলেও রংপুর রিভিউ নিলে তাকে প্যাভিলিয়নে ফিরতে বলেন আম্পায়ার। ৩২ বলে সাতটি চার ও তিনটি ছক্কায় ৫৪ রান আসে রনির ব্যাটে। ৮৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় সিলেট। এর একটু পর জাকির হাসানের ছক্কায় ১১ ওভারের মধ্যে দলীয় শতরানের দেখা পায় সিলেট।
তারপর জাকিরের সঙ্গে তাল দিয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন পল স্টার্লিং। যদিও সেভাবে সুবিধা করতে পারেননি তিনি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ফুল লেংথের বলে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন এই আইরিশ ব্যাটার। ১৬ বলে ১৬ রান আসে তার ব্যাটে। ১২৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় সিলেট।
স্টার্লিং বিদায় নিলেও রানের চাকা সচল রাখেন জাকির। ১৬.৪ ওভারে দলকে দেড়শ রানে পৌঁছে দেন তিনি। তার সঙ্গে হাত খুলে খেলতে থাকেন দলটির আমেরিকান রিক্রুট অ্যারন জোন্স। ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি আসে তার ব্যাটে। চারটি ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানো জাকির অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩৮ বলে ৫০ রান করে সাইফউদ্দিনের লেংথ ডেলিভারিতে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।
জাকির ফিরলেও জাকের আলী অনিকের ৩ বলে তিনটি ছক্কায় ২০ রানের ক্যামিওতে দুইশ রান পার করে সিলেট। সঙ্গে ১৯ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন জোন্স। রংপুরের হয়ে ৩১ রান খরচায় দুই উইকেট নেন সাইফউদ্দিন।