রকিবুলের ব্যাটে মোহামেডানের হ্যাট্রিক

ছবি:

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে আজ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিলো মনির হোসেনের নেতৃত্বাধীন প্রাইম ব্যাংক। আর এই ম্যাচে প্রাইম ব্যাংককে ৩ উইকেটে হারিয়েছে মোহামেডান।
এদিন শুরুতে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আল-আমিনের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ২৫৯ রান সংগ্রহ করেছিলো প্রাইম ব্যাংক। এদিন আল-আমিন ছাড়াও ৮৭ রানের দারুণ আরেকটি ইনিংস খেলেছেন আরিফুল হকও।
প্রাইম ব্যাংকের ছুঁড়ে দেয়া ২৬০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে রনি তালুকদার এবং রকিবুল হাসানের দুর্দান্ত দুটি অর্ধশতকে ভর করে ৭ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটের জয় তুলে নেয় মোহামেডান।
ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার জনি তালুকদার এবং রনি তালুকদারের ব্যাটে দারুণ সূচনা পেয়েছিলো মোহামেডান। ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন তালুকদার ভ্রাতৃদ্বয়। দারুণ এই জুটিটি অবশেষে ভাঙ্গতে সক্ষম হন দেলোয়ার হোসেন।
১৫ রান করা জনি তালুকদারকে আরিফুল হকের হাতে ক্যাচ বানিয়ে আউট করেছেন দেলোয়ার। এরপর ২ রানের ব্যবধানে অধিনায়ক শামসুর রহমানের ষ্ট্যাম্প উড়িয়ে দেন পেসার রুবেল হোসেন।
দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া মোহামেডানের হাল ধরতে রনির সাথে ক্রিজে যোগ দেন উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর। পরবর্তীতে শুক্কুরকে সাথে নিয়ে ব্যক্তিগত অর্ধশতক তুলে নেন রনি তালুকদার।
কিন্তু ফিফটি তুলে নেয়ার পর আর বেশীক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি রনি। ৬০ রান করে দেলোয়ার হোসেনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়েছেন তিনি। রনির পর পরই ১২ রান করে আরিফুল হকের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ফেরেন ইরফান শুক্কুরও।
তবে রনি ফিরে গেলেও দারুণ ব্যাটিং করে ৬৪ রানের একটি ইনিংস খেলেন রকিবুল হাসান। ২০৫ রানের মাথায় মনির হোসেনের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে রকিবুল ফিরে গেলে পরবর্তীতে আমিনুল ইসলামের ২৫ এনামুল হকের ৩২ এবং তাইজুল ইসলামের ৩৫ রানে ভর করে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে সক্ষম হয় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তাইজুল ও এনামুল।

প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে রুবেল হোসেন এবং দেলোয়ার হোসেন প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট শিকার করেন। এছাড়াও ইউসুফ পাঠান, মনির হোসেন এবং আরিফুল হক ১টি করে উইকেট নেন।
প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসঃ
এদিন বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে মাত্র ১৭ রানের মাথায় ৫ উইকেট খুইয়ে বসেছিলো প্রাইম ব্যাংক। মূলত শুরুর দিকে তাদের ব্যাটিং লাইন আপে ধ্বস নামানোর কাজটি করেছিলেন মোহামেডানের স্পিনার তাইজুল ইসলাম এবং আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলা বিপুল শর্মা।
প্রাইম ব্যাংকের তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান মেহেদি মারুফ, জাকির হাসান এবং ইউসুফ পাঠানের উইকেট তিনটি তুলে নিয়েছেন তিনি। অপরদিকে ওপেনার শাহনাজ আহমেদ এবং ছয় নম্বরে নামা নাহিদুল ইসলামকে ফিরিয়েছেন বিপুল শর্মা।
এরপর দ্রুত ৫ উইকেট খুইয়ে বসা প্রাইম ব্যাংককে আরো বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন শুভাশিষ রায়। নতুন ক্রিজে আসা ব্যাটসম্যান সাজ্জাদুল হককে ৩৬ রানের মাথায় আউট করেন তিনি। সাজ্জাদুল আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নামেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান আল-আমিন।
দারুণ চাপের মুখে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে দুর্দান্ত একটি সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পাশাপাশি দলকে অনেকটা একাই বিপদ থেকে উদ্ধার করেন ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। যদিও সেঞ্চুরি হাঁকানোর পরেই ১১০ রান করে কাজি অনিকের বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
তবে তাঁর সঙ্গী আরিফুল হক টিকে ছিলেন ইনিংসের প্রায় শেষ পর্যন্ত। ৮৭ রান করে সেই কাজি অনিকের বলে তিনিও বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৪৮.৪ ওভারের সময়। এছাড়াও শেষের দিকে ২৫ রান এসেছে দেলোয়ার হোসেনের ব্যাট থেকে।
আর এরই সাথে ৯ উইকেটে ২৫৯ রানের বড় সংগ্রহ নিয়ে মাঠ ছাড়তে সক্ষম হয় প্রাইম ব্যাংক। মোহামেডানের পক্ষে তাইজুল ইসলাম ৩টি উইকেট শিকার করেছেন। অপরদিকে বিপুল শর্মা এবং কাজি অনিক উইকেট নিয়েছেন ২টি করে।
উল্লেখ্য দুই দিন আগে নিজেদের ভাগ্য ফেরাতে ভারতীয় হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান ইউসুফ পাঠানকে দলে ভিড়িয়েছে প্রাইম ব্যাংক। কিন্তু নিজের প্রথম ম্যাচেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি। আজ খেলতে নেমে শুন্য রানে আউট হয়েছেন তিনি। আর তার উইকেটটিও নিয়েছেন স্পিনার তাইজুল।
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব দল-
মেহেদি মারুফ, শাহনাজ আহমেদ, জাকির হাসান, আল-আমিন, ইউসুফ পাঠান, নাহিদুল ইসলাম, সাজ্জাদুল হক, মনির হোসেন (অধিনায়ক), দেলোয়ার হোসেন, রুবেল হোসেন, আরিফুল হক।
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব দল-
শামসুর রহমান (অধিনায়ক), আমিনুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান, এনামুল হক, জনি তালুকদার, ইরফান শুক্কুর, শুভাশিষ রায়, কাজি অনিক, রনি তালুকদার, তাইজুল ইসলাম, বিপুল শর্মা।