আবাহনীর দাপট অব্যাহত রাখলেন মাশরাফি

ছবি:

আজ বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) ২৭তম ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৪৭ রানে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। এদিন সকাল ৯ টায় শুরু হওয়া এই ম্যাচটির শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আবাহনী অধিনায়ক নাসির হোসেন।
এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে আনামুল হক বিজয়ের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৭০ রান সংগ্রহ করে আবাহনী। বিজয় ১২২ বলে ১১৬ রানের অনবদ্য একটি ইনিংস খেলেছেন যেখানে ছিলো ৪টি ছয় এবং ৬টি চার।
বিজয় ছাড়াও এদিন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। সৈকত ৪৯ রান করে হাফসেঞ্চুরি মিস করলেও দলকে বড় সংগ্রহ এনে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
আর শেষের দিকে মিরাজ খেলেছেন ১৮ বলে ২টি ছয় এবং ২টি চারের সাহায্যে অপরাজিত ৩৪ রানের একটি ক্যামিও ইনিংস। মিরাজের সাথে ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন সানজামুল ইসলাম। ৩টি চারের সাহায্যে মাত্র ১৫ বলে এই রান করেন তিনি।
এরপর ২৭১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমেই বিপদের মুখে পড়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি। দলীয় ১৭ রানের মাথায় ওপেনার জিয়াউর রহমানকে বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফেরত পাঠিয়েছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা।
তাঁর টানা সাত ওভারের স্পেলে আউট হতে হয়েছে ওপেনার সৈকত আলিকেও। দলীয় ৩৫ রানের মাথায় ওপেনার সৈকতের ষ্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়েছেন ম্যাশ। ফলে শুরুতেই বিপদে পড়তে হয় শেখ জামালকে।
পরবর্তীতে জালাজ সাক্সেনা এবং ইলিয়াস সানির ৫১ রানের জুটিতে কিছুটা বিপদ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করে সোহানের দল। কিন্তু দলীয় ৮৬ রানের মাথায় সানিকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙ্গেন সাকলাইন সজীব।
সানি ফেরার পর ১২৯ রানের মাথায় দ্রুত আরো ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে শেখ জামাল। তবে এরপরেও শেখ জামালের কিছুটা আশা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ৬১ বলে ৪ ছয় এবং ১০ চারের সাহায্যে ৮৩ রান করেন তিনি। কিন্তু এরপর আঘাত হানেন সানজামুল ইসলাম।

শেখ জামালের শেষ ভরসা হয়ে থাকা সোহানকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে বাকি তিন উইকেট তুলে নিয়ে শেখ জামালের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ফলে ৪৭ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে সক্ষম হয় আবাহনী। আর এই জয়ে টানা ৫ ম্যাচ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ স্থান অক্ষুন্ন রাখলো আবাহনী।
৮ ওভারে মাত্র ২৯ রানে ৫ উইকেট শিকার করেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এছাড়াও ২টি উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং সানজামুল ইসলাম ও সাকলাইন সজীব নিয়েছেন ১টি করে উইকেট
আবাহনীর ইনিংস-
এর আগে দিনের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়েছিলো আবাহনী। দলীয় মাত্র ২৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলো তারা। আগের দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে দারুণ খেলা ওপেনার সাইফ হাসানকে বোল্ড করে ব্রেক থ্রু এনে দেন আবু জায়েদ রাহি।
এরপর ২ রানের ব্যবধানে নাজমুল হাসান শান্তর ষ্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে আরেকবার ব্রেক থ্রু এনে দেন শেখ জামাল স্পিনার সোহাগ গাজি। টিকতে পারেননি অধিনায়ক নাসিরও। গত ম্যাচে ৩৪ রান করা নাসির এদিন আউট হয়েছেন মাত্র ১১ রান করে ইলিয়াস সানির বলে।
স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত অপরাজিত দল আবাহনী। সেই পরিস্থিতি থেকে দলকে উঠিয়ে আনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন আনামুল হক বিজয় এবং মোহাম্মদ মিথুন।
এই দুই ব্যাটসম্যান ৩৫ রানের জুটি গড়ে দলকে কিছুটা বিপদমুক্ত করেন। কিন্তু ৭৮ রানের মাথায় জালাল সাক্সেনার বলে আবু জায়েদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মিথুন (১৪)। তবে মিথুন ফিরে গেলেও অসাধারণ ব্যাটিং করে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন ওপেনার বিজয়।
এরপর নিজের ইনিংস লম্বা করার দিকে মনোযোগ দেন জাতীয় দলের এই ওপেনার। দারুণ ব্যাটিং করে এবারের টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিও তুলে নেন বিজয়। পরবর্তীতে ১১৬ রান করে রবিউল হকের বলে আউট হন তিনি।
বিজয় ফিরলে পরবর্তীতে মোসাদ্দেক, মেহেদি হাসান এবং সানজামুলের ব্যাটে ৭ উইকেটে ২৭০ রানের বড় স্কোর নিয়েই মাঠ ছাড়তে সক্ষম হয় আবাহনী। শেখ জামালের পক্ষে ৪৭ রানে ৩ উইকেট শিকার করেছেন রবিউল হক। এছাড়াও একটি করে উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ রাহি, সোহাগ গাজি, ইলিয়াস সানি এবং জালাজ সাক্সেনা।
আবাহনী লিমিটেড দল-
আনামুল হক বিজয়, সাইফ হাসান, নাজমুল হাসান শান্ত, নাসির হোসেন (অধিনায়ক), মোহাম্মদ মিথুন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মর্তুজা, সানজামুল ইসলাম, সাকলাইন সজিব, হোসেন আলি।
শেখ জামাল দল-
জিয়াউর রহমান, সোহাগ গাজি, ইলিয়াস সানি, নুরুল হাসান সোহান (অধিনায়ক), তানবির হায়দার, নাজমুল হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, সৈকত আলি, রবিউল হক, আল-ইমরান, জালাজ সাক্সেনা।