সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলো তামিমরা

ছবি:

টি-টেন ক্রিকেট লীগের সেমিফাইনালে আজ তামিম ইকবালের দল পাখতুনসকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে মিসবাহ উল হকের পাঞ্জাবি লিজেন্ডস।
বাংলাদেশ সময় ৯টা ৪৫ মিনিটে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে শুরুতে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পাখতুনস অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি পরবর্তীতে ব্যাটিংয়ে নেমে আহমেদ শেহজাদের ঝড়ো অর্ধশতকে ভর করে নির্ধারিত ১০ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৯ রান সংগ্রহ করে পাখতুনস। ২৯ বলে চারটি ছয় এবং ৬ টি চারের সাহায্যে ৫৮ রান করেন শেহজাদ।
এরপর ১৩০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দুই ওপেনার লুক রঙ্কি ও উমর আকমলের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় পাঞ্জাবি লিজেন্ডস। এই দুই ব্যাটসম্যান মাত্র ১৫ বলে স্কোরবোর্ডে ৩২ রান তোলে। উমর গুলের বলে লিয়াম ডওসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৫ বলে ১৭ রান করেন আকমল।
তবে পরবর্তীতে রঙ্কি এবং নতুন ক্রিজে নামা শোয়েব মালিকের ব্যাটে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায় লিজেন্ডসরা। তাঁদের ব্যাটে ভর করেই ৫ বল হাতে রেখে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় মিসবাহ উল হকের দল। আর এই জয়ের ফলে সাকিব আল হাসানের দল কেরালা কিংসের বিপক্ষে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করলো পাঞ্জাবি লিজেন্ডস।
ওপেনার লুক রঙ্কি শেষ পর্যন্ত ৩৪ বলে ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন। তাঁর ইনিংসটিতে ছিলো ৭টি চার এবং ৩টি ছক্কা। অপরদিকে শোয়েব মালিক ৬টি চার এবং ৩টি ছয়ের সাহায্যে ১৭ বলে ৪৮ রান করেন।

এর আগে পাখতুনসের পক্ষে শেহজাদ ছাড়াও ব্যাট হাতে দারুণ উজ্জ্বল ছিলেন পাখতুনস অধিনায়ক আফ্রিদিও। মাত্র ১৭ বলে ৫টি ছক্কা এবং ১টি চারের মাধ্যমে সাহায্যে ৪১ রানের একটি ক্যামিও ইনিংস খেলেন সাবেক এই পাকিস্তানি দলপতি।
তবে ব্যাট হাতে এদিন দারুণ শুরু করার পরেও খুব বেশি রান করতে পারেননি টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই হাত খুলে খেলা শুরু করেছিলেন তামিম। দ্রুত ২টি চার এবং ১টি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ৬ বলে ১৫ রান করেছিলেন তিনি।
কিন্তু পরবর্তীতে আর বেশীক্ষণ টিকতে পারেননি ড্যাশিং এই ওপেনার। ৪.৩ ওভারের সময় পাঞ্জাবি লিজেন্ডসের ইংলিশ পেসার রবি বোপারাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাভার অঞ্চলে উমর আকমলের হাতে ধরা পড়েন তামিম। ফলে ১টি ছয় এবং ২টি চারের সাহায্যে ৯ বলে ১৭ রান করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাঁকে।
তামিমের পর শেহজাদের সাথে ব্যাটিংয়ে যোগ দিতে আসেন পাখতুনস দলপতি শহীদ আফ্রিদি। আর ক্রিজে এসেই ব্যাট হাতে ঝড় তোলা শুরু করেন তিনি। একের পর এক ছক্কায় লিজেন্ডস বোলারদের রীতিমত নাস্তানাবুদ করে ছাড়েন তিনি।
এরই ফাঁকে তাঁর সঙ্গী আহমেদ শেহজাদ তুলে নেন টুর্নামেন্টে তাঁর প্রথম অর্ধশতক। তবে অর্ধশতক হাঁকানোর কিছুক্ষণ পর দৌলত জাদরানের বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় শেহজাদকে (৫৮)। এরপর ক্রিজে নেমে একটি চার হাঁকিয়ে সেই জাদরানের বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন ফখর জামান।
ফখর ফিরলেও ব্যাট হাতে রুদ্রমূর্তি ধরেই ছিলেন আফ্রিদি। শেষ পর্যন্ত তিন বল বাকি থাকতে রবি বোপারার বলে যদিও আউট হয়েছেন তিনি। তবে এরই মধ্যে দলকে নিয়ে গেছেন পাহাড়সম সংগ্রহে। শেষ পর্যন্ত তাঁর ১৭ বলে ৪১ রানের দুর্দান্ত ইনিংসেই ১২৯ রানের বিশাল লক্ষ্য পাঞ্জাবি লিজেন্ডসদের সামনে ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয় তামিমের দল পাখতুনস।
পাঞ্জাবি লিজেন্ডস একাদশ- লুক রঙ্কি (উইকেটরক্ষক), উমর আকমল, শোয়েব মালিক, মিসবাহ উল হক (অধিনায়ক), রবি বোপারা, কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, ফাহিম আশরাফ, গুলাম সাব্বের, হাসান আলী, ক্রিস জর্ডান, দৌলত জাদরান
পাখতুনস একাদশ- আহমেদ শেহজাদ, তামিম ইকবাল, ফখর জামান, শহীদ আফ্রিদি (অধিনায়ক), ডোয়াইন স্মিথ, লিয়াম ডওসন, সাকলাইন হায়দার (উইকেটরক্ষক), সোহেল খান, মোহাম্মদ ইরফান, ইমরান খান, উমর গুল।