তামিম-মুশফিকের ব্যাটে বিপদ কাটাচ্ছে বাংলাদেশ

ছবি:

দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিদাহাস ট্রফির ম্যাচ দিয়ে মাঠে ফিরেছেন টাইগারদের নিয়মিত টি টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আর সাকিবের ফেরার ম্যাচে লঙ্কানদের মোটামুটি কম রানে আটকাতে সক্ষম হয়েছে টাইগাররা। নির্ধারিত ২০ ওভারে লঙ্কানরা সংগ্রহ করেছে ৭ উইকেটে ১৫৯ রান।
লঙ্কানদের ছুঁড়ে দেয়া ১৬০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আকিলা ধনঞ্জয়ার প্রথম ওভারেই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন ওপেনার লিটন কুমার দাস। অফসাইডের বাইরের একটি বল অযথা মারতে গিয়ে মিড অফ অঞ্চলে থিসারা পেরেরার হাতে ধরা পরেন লিটন। ফলে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরতে হয় তাঁকে।
লিটনের পর তামিমের সাথে ক্রিজে যোগ দিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। আর ব্যাটিংয়ে নেমেই মারমুখী খেলা শুরু করেন তিনি। ৩টি চারের সাহায্যে ৮ বলে ১৩ রান করেন সাব্বির। কিন্তু এরপরেই আকিলা ধনঞ্জয়ার বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ফিরতে হয় তাঁকেও।
ধনঞ্জয়ার করা বলটি সামনে এগিয়ে এসে ঠেকাতে গিয়েছিলেন সাব্বির। কিন্তু মিস করার ফলে তা উইকেটরক্ষক কুশল পেরেরার হাতে চলে যায়। আর তিনি ষ্ট্যাম্প ভেঙ্গে দিতে সময় নেননি। সাব্বিরের আউটের পর অবশ্য তামিম এবং মুশফিকের ব্যাটে বিপদ কিছুটা কাটিয়ে উঠছে টাইগাররা।
ইতিমধ্যে দলীয় অর্ধশতক করেছে বাংলাদেশ। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়িয়েছে ২ উইকেটে ৫০ রান (৬ ওভার)। ক্রিজে তামিম এবং ২৪ এবং মুশফিক অপরাজিত আছেন ১২ রানে।
এর আগে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচের শুরুতে টসে জিতে লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা বাংলাদেশের নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
তবে টাইগার অধিনায়কের আমন্ত্রণে খেলতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে শ্রীলঙ্কা। স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪৩ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। এদিন ইনিংসের প্রথম ওভারটিতেই বল হাতে ওপেন করেছিলেন অধিনায়ক সাকিব।

দীর্ঘ ইনজুরি থেকে ফেরার পরেও যে তাঁর বলের ধাঁর ম্লান হয়নি সেটি প্রথম ওভার দেখেই বোঝা গিয়েছে। কেননা সাকিবের দারুণ বোলিংয়ে প্রথম ওভারে মাত্র ৩ রান নিতে পারে লঙ্কানরা। এরপর নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসেই প্রথম উইকেট তুলে নেন সাকিব।
লঙ্কান ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকাকে সাব্বির রহমানের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরত পাঠান টাইগার অলরাউন্ডার। সোজা উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাব্বিরের হাতে লং অন অঞ্চলে ধরা পড়েন গুনাথিলাকা (৪)। সাকিবের ঠিক পরের ওভারটিতে এসে আঘাত হানেন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান।
দুর্দান্ত একটি শর্ট ডেলিভারিতে মিড উইকেটে কুশল মেন্ডিসকে (১১) সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ বানান তিনি। কুশলের পর দলীয় ৩১ রানের মাথায় মেহেদি হাসান মিরাজের দারুণ একটি থ্রোতে রান আউটের শিকার হয়ে ফিরতে হয় অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান উপল থারাঙ্গাকেও (৫)।
স্কোরবোর্ডে মাত্র ১ রান যোগ করার পরে আবারো আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। নতুন ক্রিজে আসা ব্যাটসম্যান দাশুন শানাকাকে দারুণ একটি অফ কাটারে উইকেটরক্ষক মুশফিকের হাতে ক্যাচ বানান ফিজ। শানাকার পর টিকতে পারেননি জীবন মেন্ডিসও।
মেহেদি হাসান মিরাজের করা একটি বলে সুইপ শট খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে শর্ট ফাইন অঞ্চলে মুস্তাফিজের তালুবন্দি হন মেন্ডিস। তবে এরপরেই ব্যাট হাতে তান্ডব শুরু করেন কুশল পেরেরা এবং থিসারা পেরেরা। মুস্তাফিজের তৃতীয় ওভারে চার ছক্কার পসরা সাজিয়ে ১৮ রান তুলে নেন এই দুই ব্যাটসম্যান।
মাত্র ৩২ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরিও তুলে নেন কুশল। তবে দলীয় ১৩৮ রানের মাথায় সৌম্য সরকারের বলে মেহেদি হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান এই হার্ডহিটার ব্যাটসম্যান। এরই সাথে থিসারার সাথে তাঁর ৯৭ রানের জুটিটি ভাঙ্গে।
কুশলের পর ইসুরু উদানাকে সাথে নিয়ে তান্ডবলীলা অব্যাহত রাখেন অধিনায়ক থিসারা। সৌম্য সরকারের করা দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকান তিনি। বলটি সাব্বির রহমানের হাতে লেগে বাউন্ডারি লাইন পার হয়ে যায়। বুলেটের গতিতে আসা বলটি আটকাতে গিয়ে বেশ ব্যাথা পান সাব্বির।
পরবর্তীতে মাঠ থেকেও বের হয়ে যান তিনি। সাব্বির মাঠের বাইরে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর রুবেলের করা ২০ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তামিম ইকবালের তালুবন্দি হন থিসারা। ফলে ৩৭ বলে ৫৮ রান করে ফিরে যান তিনি। থিসারার বিদায়ে শেষ পর্যন্ত ১৫৯ রানে থামে লঙ্কানদের ইনিংস।
বাংলাদেশ একাদশ-
তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাজমুল ইসলাম অপু।
শ্রীলঙ্কা একাদশ-
দানুশকা গুনাথিলাকা, কুশল মেন্ডিস, কুশল পেরেরা (উইকেটরক্ষক), উপল থারাঙ্গা, থিসারা পেরেরা (অধিনায়ক), জীবন মেন্ডিস, দাশুন শানাকা, আকিলা ধনঞ্জয়া, ইসুরু উদানা, আমিলা আপনসো, নুয়ান প্রদীপ।