আফ্রিকার মাটিতে হোয়াইটওয়াশ পাকিস্তান

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
ডুয়ান অলিভিয়ার এবং কাগিসো রাবাদার বোলিং তোপে পাকিস্তানের বিপক্ষে জোহানেসবার্গ টেস্টেও জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ টেস্টে ১০৭ রানের জয় তুলে নিয়ে সফরকারীদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে স্বাগতিকরা। এই সিরিজ জয়ে ঘরের মাঠে টানা সাতটি টেস্ট সিরিজ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
স্বাগতিকদের দেয়া ৩৮১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে চতুর্থ দিনে মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। সাত উইকেট হাতে নিয়ে দিন শুরু করলেও প্রোটিয়া বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিক দলটি।
চতুর্থ দিনের ২৫ ওভার খেলতেই সব'কটি উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। তৃতীয় দিন ১৭ রানে অপরাজিত থাকা পাকিস্তানি মিডেল অর্ডার ব্যাটসম্যান বাবর আজম ২১ রান করতেই অলিভিয়ার বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরে। পরের বলেই শূন্য রান নিয়ে ব্যর্থ হাতে ফেরেন পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ।
৪৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা আসাদ শফিক অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৬৫ রান ফেরেন। এরপর দলের হাল ধরেন সাদাব খান। কিন্তু তাঁকে সঙ্গ দিতে পারেননি নিচের দিকে থাকা ব্যাটসম্যানরা। রাবাদার বোলিংয়ে একে একে ফেরেন ফাহিম আশরাফ এবং মোহাম্মদ আমির।
দশ নম্বরে নামা হাসান আলি উইকেটে নেমেই দ্রুত রান তোলায় মনোনিবেশ করেন। কিন্তু বেশীক্ষণ টিকা হয়নি তাঁর, ১৪ বলে ২২ রান করেই ফিরতে হয় তাঁকে। শেষ উইকেট জুটিতে সাদাবের সাথে উইকেটে সময় দিতে ব্যর্থ হন মোহাম্মদ আব্বাস।

ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হন আব্বাস। ৪৭ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান সাদাব খান। ১০৭ রানে পরাজিত হয় পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনটি করে উইকেট নেন অলিভিয়ার এবং রাবাদা।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্বাগতিকরা। ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তানি পেসারদের সামনে প্রথম দিনই আত্মসমর্পণ করে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানরা। ২৬২ রানেই শেষ হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। ধাক্কা ইনিংসের শুরুতেই খেয়েছিল তারা।
দলীয় ছয় রানেই ওপেনার ডিন এলগারের উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। এরপর এইডেন মার্করাম, হাশিম আমলা, থিউনিস ডি ব্রুইন, জুবায়ের হামজাদের ব্যাট হাতে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আফ্রিকা।
কিন্তু শেষের দিকে এসে কেউই ব্যাট হাতে দলের খাতায় গুরুত্বপূর্ণ রান জগকরতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯০ রান নিয়েছেন ওপেনার মার্করাম। পাকিস্তানের হয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন ফাহিম আশরাফ, যা তাঁদের সর্বোচ্চ। এছাড়া দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন হাসান আলি, আব্বাস এবং মোহাম্মদ আমির।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে সফরকারী পাকিস্তান। মাত্র ১৮৫ রানে অলআউট হয়ে যায় তারা। মূলত এখানেই ম্যাচে পিছিয়ে যায় দলটি।
অধিনায়ক সরফরাজের ৫০ রানের ইনিংস ছিল পাকিস্তানের সর্বোচ্চ। তবে যথাক্রমে ৪৩ এবং ৪৯ রান করে কিছুটা অবদান রেখেছিলেন ইমাম-উল-হক এবং বাবর আজম। বল হাতে এই ইনিংসে একাই পাঁচ উইকেট নিয়েছেন পেসার অলিভিয়ার।
৭৭ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানের সামনে বিশাল রান ছুঁড়ে দিতে বদ্ধ পরিকর ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় ইনিংসে দলের খাতায় ৩০৩ রান যোগ করে তারা, সব'কটি উইকেট হারিয়ে।
দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কক। টেস্ট ক্যারিয়ারের ব্যক্তিগত চতুর্থ শতক হাঁকিয়ে ১২৯ রানের ইনিংস খেলেছেন কক। ৭৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন হাশিম আমলা। পাকিস্তানের সামনে ৩৮১ রানের সামনে বিশাল ছুঁড়ে দিয়েছে তারা। পাকিস্তানের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন আশরাফ এবং সাদাব খান।
ব্যাট হাতে দারুণ পারফর্ম করায় ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ডি কক। দুর্দান্ত বোলিং করে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে সর্বমোট ২৪ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার অলিভিয়ার।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ-
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসঃ ২৬২ অলআউট (৭৭.৪ ওভার)
(মার্করাম ৯০, ডি ব্রুইন ৪৯; ফাহিম ৩/৫৭)
পাকিস্তান প্রথম ইনিংসঃ ১৮৫ অলআউট (৪৯.৪ ওভার)
(সরফরাজ ৫০, বাবর ৪৯; অলিভিয়ার ৫/৫১)
দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসঃ ৩০৩ অলআউট (৮০.৩ ওভার)
(কক ১২৯, আমলা ৭১; সাদাব ৩/৪১)
পাকিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসঃ ২৭৩ অলআউট (৬৫.৪ ওভার)
(শফিক ৬৫ , সাদাব ৪৭*; অলিভিয়ার ৩/৭৪)