গোপনে অনুশীলন চালাচ্ছিলেন তারা

ছবি: ছবি- সংগৃহীত

|| স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ||
সবাই জানতো কোথাও কোনো ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড চলছে না। সেই জানাটা যে ভুল ছিল, তা বেরিয়ে আসল তিন সপ্তাহ পর। তাও জানা গেল ঘটনার সঙ্গে জড়িত একজন বিষয়টি প্রকাশ করার পর। নাহ, ভাবার কোনো কারণ নেই যে তারা ফৌজদারি কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। যা করেছেন, তা নিয়ে তাদের অভিযুক্ত করারও কোনো সুযোগ নেই। কারণ লুকিয়ে-চুরিয়ে তারা ক্রিকেট অনুশীলনই করছিলেন। অনুশীলন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে তারা কেবল বিষয়টি চেপে গিয়েছিলেন।
চেপে যাওয়ার সেই খবরটিই সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছেন জহুরুল ইসলাম অমি। একসময় জাতীয় দলে খেলা এই ব্যাটসম্যান নিজের জেলা রাজশাহীতেই আরো সাতজন ক্রিকেটারকে নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছিলেন তিন সপ্তাহ আগে। সবাই রাজশাহীরই ক্রিকেটার।

অমির সঙ্গে ছিলেন জাতীয় দলের তরুণ উদীয়মান ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত এবং একসময় বাংলাদেশ দলে খেলা অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজাসহ সানজামুল ইসলাম, সাকলায়েন সজীব, ফরহাদ হোসেন ও মিজানুর রহমানরা।
যে সময়ে তারা অনুশীলন শুরু করেন, তখনো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ক্রিকেটারদের জন্য তাদের ‘ডেজিগনেটেড’ ভেন্যু ব্যবহার উন্মুক্ত করে দেয়নি। তবে এরকম ছয়টি স্টেডিয়ামের ফ্যাসিলিটিজ ঠিকঠাক রাখছিল, যাতে যে কোনো সময়ে ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ড শুরু করে দেওয়া যায়।
ওই সময়ে মুশফিকুর রহিমসহ তারকা ক্রিকেটারদের কেউ কেউ মাঠ ব্যবহার করতে চাইলেও বিসিবি ঠিক উৎসাহ দিচ্ছিল না করোনা সংক্রমণের ভয়ে। ক্রিকেটারদেরও সে কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিল তারা। অথচ সেই সময়েই কিনা বিসিবির ছয়টি ‘ডেজিগনেটেড’ ভেন্যুর একটিতে কঠোর অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন অমির নেতৃত্বে আট ক্রিকেটার।
ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট আসর জাতীয় ক্রিকেট লিগে যিনি রাজশাহী বিভাগীয় দলের অধিনায়কও। অনুশীলন চালিয়ে গেলেও নিশ্চিত করেছিলেন যেন বিষয়টি প্রচার না পায়। নীরবে-নিভৃতে তাই ফিটনেসের কাজও করতে পেরেছেন। একই সঙ্গে রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামের ইনডোরে তারা স্কিল ট্রেনিংও করেছেন। এই খবর কারো জানা ছিল না বলেই মাত্রই দুইদিন আগে ক্রিকেটাররা মাঠে ফিরেছেন বলে খবর প্রচারিত হচ্ছে। কিন্তু ক্রিকেটাররা মাঠে ফিরেছেন রাজশাহীতে প্রথম, আরো তিন সপ্তাহ আগেই।
এই খবর চেপে যাওয়ার কারণও এতদিন পর আর গোপন করলেন না অমি, ‘আসলে আমরা ভয় পেয়েছিলাম। কারণ ওই সময় বিসিবিও চাচ্ছিল না ক্রিকেটাররা অনুশীলনে ফিরুক। তারা চাচ্ছিল বাসায় থেকেই যে যার মতো করে নিজেকে ফিট রাখার চেষ্টা করুক। কিন্তু আমরা আটজন কোনো একভাবে স্টেডিয়ামে অনুশীলনের ব্যবস্থা করে ফেলি। ঠিক করেছিলাম কাউকে কিছু জানতে দেব না। জানাজানি হলে যদি বিসিবি আমাদের অনুশীলন বন্ধ করে দেয়, এই ভয়ে আমরা গোপনে অনুশীলন করেছি।’