গরীবের বন্ধু ক্রিকেট বোর্ড!

ছবি: ছবিঃ সংগৃহীত

|| স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ||
বিশ্বকাপ সামনে রেখে প্রস্তুতি শুরু করা দরকার, আনা দরকার বিদেশি কোচ, ট্রেনার এবং ফিজিও। ২০২২ সালে চীনে অনুষ্ঠেয় এশিয়ান গেমস সামনে রেখেও বিদেশি কোচদের অধীনে প্রস্তুতির ধারাবাহিকতা দরকার। কিন্তু বিদেশি কোচিং স্টাফের বেতন-ভাতা দেওয়ার অবস্থা তো আর নেই বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের।
নামে জাতীয় খেলা হলেও এর প্রতি পৃষ্ঠপোষকদেরও তেমন আগ্রহ নেই। নেই যখন, তখন মামুলি সরকারি অনুদানেও প্রয়োজন মেটানো কঠিন। তবু তো উপায় একটি বের করতেই হয়। তারা করেছেও। আরো অনেক ফেডারেশনের মতো আর্থিক সহায়তার আবেদন ঠুঁকে দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি)।
দেশের সবচেয়ে ধনী ক্রীড়া সংস্থাটি নিরাশও করেনি গরীব কাবাডি ফেডারেশনকে। বিদেশি কোচ, ফিজিও, ট্রেনার আনার জন্য ঠিকই আর্থিক সহযোগিতা করেছে। এরকম গরীব ফেডারেশন আরো অনেক আছে। যাদের সবার প্রয়োজনও একরকম নয়।

কাবাডির বিদেশি কোচ আনতে টাকার দরকার তো বেশিরভাগ ফেডারেশনের পৃষ্ঠপোষকের অভাবে টুর্নামেন্ট আয়োজনেরই টাকা থাকে না। পৃষ্ঠপোষক পেলেও এত অল্প টাকা পাওয়া যায় যে টুর্নামেন্ট শুরু করে দিলে শেষ করা কঠিন। এরকম বেশ কয়েকটি ফেডারেশনের জন্যও সহায় হয়েছে বিসিবি।
নিয়মিত ভিত্তিতে এই ফেডারেশন, সেই ফেডারেশনকে আর্থিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে তারা। এমনকি দেশের তৃতীয় প্রধান খেলা হকিও পাশে পেয়েছে বিসিবিকে, নিয়েছে অর্থ সাহায্যও। কাবাডির বিস্তারিতই জানানো যাক।
তিন বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণের জন্য একজন করে বিদেশি পুরুষ ও মহিলা কোচ, একজন ফিজিও এবং দুজন ট্রেনারের বাজেট বিসিবিতে জমা দেয় কাবাডি ফেডারেশন। তাতে পাঁচজনের তিন বছরের বেতন-ভাতা, থাকা-খাওয়া এবং বিমানে যাতায়াতের খরচ দেখানো হয় ১ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এই খরচের জোগান দেওয়ার জন্য বিসিবির সর্বাত্মক সহযোগিতাও চাওয়া হয়। পরিচালনা পর্ষদের সভায় আলোচনার পর বিসিবি প্রতি বছর ১০ লাখ করে তিন বছরে ৩০ লাখ টাকা কাবাডি ফেডারেশনকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তাতে কাবাডিতে বিদেশি কোচ আনার প্রক্রিয়াও গতিশীল হয়।
আবার অনেক ফেডারেশনের টুর্নামেন্ট আয়োজনও গতিশীল হয়েছে বিসিবির টাকায়। গত বছরের এপ্রিলে কক্সবাজারে পঞ্চম জাতীয় সার্ফিং প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে ঠেকে যায় বাংলাদেশ সার্ফিং ফেডারেশন। শেষপর্যন্ত তারা উদ্ধার হয় বিসিবির দেওয়া ৩ লাখ টাকায়।
গত ডিসেম্বরে একই অবস্থা হয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনেরও। ইয়োনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ-২০১৯ এবং ইয়োনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ জুনিয়র ইন্টারন্যাশনাল সিরিজ-২০১৯ আয়োজন করতে গিয়ে তারা হাত পাতে বিসিবির কাছে। এবার তাদের ৫ লাখ টাকা দিয়ে সহায়তা করে দেশীয় ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা। যারা দিন দিন গরীব ফেডারেশনগুলোর বন্ধুই হয়ে উঠছে!