'ভালো মানুষ' রোডসে আপত্তি পাপনের

ছবি: ছবি- ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ক্রিকফ্রেঞ্জি করেসপন্ডেন্ট ||
মানুষ হিসেবে সদ্য বিদায়ী কোচ স্টিভ রোডস অসাধারণ হলেও কোচ হিসেবে খুব বেশি কার্যকরী নন বলে মনে করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ইংলিশম্যান রোডসের কোচিং নীতি সেভাবে গ্রহণ করতে পারেনি বোর্ড সেটি পাপনের কথাতে সুস্পষ্ট হয়েছে আরো।
কোচ হিসেবে যে কঠোর মানসিকতা বজায় রাখতে হয় তার যথেষ্ট ঘাটতি ছিল রোডসের মাঝে। আর সেকারণেই দলের ক্রিকেটাররাও তাঁকে মানতে চাইতেন না সেভাবে। অনুশীলনে না আসলেও তেমন কিছু বলতেন না তিনি ক্রিকেটারদের। এমনকি মাশরাফিদের ছুটির ব্যাপারেও বেশ শিথিল ছিলেন রোডস। আর এখানেই আপত্তি বোর্ডের। প্রাক্তন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতো একজন কড়া 'হেডমাস্টার' পছন্দ বিসিবির।
রোডসের ব্যাপারে বিসিবি প্রধান বলেছেন, 'রোডস একজন ভালো মানুষ। এটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। একেক জনের একেক রকম কোচিং স্টাইল থাকে। একেক জনের একেক রকম চিন্তাধারা থাকে। আমাদেরও একটা চিন্তাধারা আছে। কোনো কোনো কোচ মনে করে এটা একটা খেলা এটা নিয়ে সিরিয়াস হওয়ার কি আছে? আবার কোনো কোচ আমাদের সঙ্গে ছিল, তাঁরা মনে করতো জিততেই হবে। যে করেই হোক জিততে হবে। এমনও আছে হারা জিতা নিয়ে চিন্তা করার কি আছে? জিততেই হবে এটা নিয়ে চিন্তা নেই। এটার মধ্যে একটা পার্থক্য আছে।'

বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে পাঁচ দিনের লম্বা ছুটি দেয়া হয় বাংলাদেশ দলকে। অথচ কোচ স্টিভ রোডস বিষয়টি জানার পরেও কিছু বলেননি। আর এখানেই মূল আপত্তি পাপনের। রোডসের চিন্তাধারার সাথে অধিকাংশ খেলোয়াড়ই মানিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
বিসিবি প্রধানের ভাষায়, 'ভারত-পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার আগে পাঁচ পাঁচদিন ছুটি দেয়া। রেস্ট দিতে পারে। দুইটা দুই জিনিস। সবাই চলে গেছে বাইরে। ঘুরছে ফিরছে। কনসেন্ট্রেশন তো এখানেই ব্রেক হয়। এই জিনিসগুলো, ওদের কালচারে হয়তো এগুলো ঠিক আছে। সমস্যা নেই। আমরা মনে করি আমাদের কালচারের সাথে এগুলো খাপ খায় না। এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মিচুয়্যাল ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা তাঁকে বাদ দেইনি। দুজন মিলে আলোচনা করেছি আমরা সেপারেট হয়ে যেতে পারি।'
পাপন আরো বলেন, 'বিশ্বকাপের আগে আমরা অনুশীলন করার জন্য আমরা এরেঞ্জমেন্ট করলাম। সেখানে আমাদের অনুশীলন হলো না। অপশনাল করে দেয়াতে কেউ আসলো না। এটা তো কালচারাল মিসমেচ। ও মনে করেছে প্রত্যেক খেলোয়াড় নিজ ইচ্ছাতেই অনুশীলন করবে। কিন্তু এটা তো আমাদের সঙ্গে মিলে না। অপশনাল তাই কেউ আসেনি। তাহলে তো লাভ হলো না। আমরা এতো টাকা খরচ করে এরেঞ্জমেন্টটা করেছিলাম।'
রোডসের সঙ্গে খেলোয়াড়দের যোগাযোগও কম হতো বলে জানিয়েছেন পাপন। আর সেই কারণে নাখোশ তিনি। তাঁর বক্তব্য, 'আমি এটা প্রথম দেখি সেই এশিয়া কাপের ফাইনাল থেকে। আমি যখন দুবাইতে। তখন থেকেই কিন্তু জিনিসগুলো দেখছি। বেশ কিছু বিষয় মনমতো হচ্ছে না। এখন এর পরিবর্তন হয়েছে। হতেই পারে। আমরা অনেক অপেক্ষা করেছি। ওখানে কেন বলেছে জানি না।
সেই নিউজিল্যান্ডে খেলোয়াড়েরা আমার কাছে এসেছে, বিশ্বকাপের সময় এসে বলেছে, যে কোচের সঙ্গে তাদেরও কোনও কথা হয়নি। শুধু টিম মিটিংয়ে খেলার আগের দিন সে এসে উপস্থিত হয়। কোনও স্ট্র্যাটেজি নিয়েও আলাপ হয় না, বা কিছুই না। সে শুধু ওখানে থাকে। আমাকে ক্রিকেটাররা এটা বলেছে। আমি ওদের থেকে শুনেই আপনাদের বলছি। আমার এরকম সরাসরি কোনও ইন্টারেকশান হয়নি। আমি যেটা দেখেছি আমাদের মনে হয়েছে মেলেনা। সে যেহেতু চলে গিয়েছে এটা নিয়ে কথা বলার কোন মানে হয়না।'