এশিয়া কাপের সেরা পাঁচ টাইগার ব্যাটসম্যান

ছবি: এশিয়া কাপের সেরা বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান

|| ডেস্ক রিপোর্ট||
এশিয়া কাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যা খুব বেশি নেই। এখন পর্যন্ত এই মেগা ইভেন্টে মোট ৩৭টি ম্যাচ খেলে মাত্র ৪টিতে জয় লাভ করেছে টাইগাররা। ২০১২ এবং ২০১৬ সালের ফাইনালে খেলাই তাদের সুখস্মৃতি বলা চলে।
তবে দলীয় সাফল্য তেমন একটি না থাকলেও ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের দিক থেকে কিছুটা এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে ব্যাটিংয়ের দিক থেকে টাইগারদের অনেকেই এর আগে কারিশমা দেখিয়েছিলেন টুর্নামেন্টটিতে। এশিয়া কাপে দারুণ ব্যাটিং করা এমনই পাঁচ জন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে আজকের এই আয়োজন।
১। মুশফিকুর রহিম (১১৭- ভারতের বিপক্ষে)- ২০১৪ সালের এশিয়া কাপে টাইগার উইকেট রক্ষক মুশফিকুর রহিমের সেই ১১৭ রানের ইনিংসটি হয়তো আজও চোখে ভাসে হাজারো ক্রিকেট প্রেমীর। সেই ম্যাচটিতে অধিনায়ক মুশফিকের সেঞ্চুরির সুবাদেই ভারতের সামনে ২৮০ রানের বিশাল একটি লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল লাল সবুজের দেশ।
তবে মুশির সেই বীরোচিত ইনিংসটি ম্লান করে দিয়েছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক ভিরাট কোহলি। তাঁর ১৩৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের কল্যাণেই ৬ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছিল ভারত। তবে সেবার পরাজয়ের কাতারে নাম লেখালেও মুশফিকের সেই ইনিংসটি এখনও স্মরণীয় হয়ে আছে।
২। অলোক কাপালি- (১১৫- ভারতের বিপক্ষে)- ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সেঞ্চুরিটি করেছিলেন অলরাউন্ডার অলোক কাপালি। ২০০৮ সালের এশিয়া কাপে ১১৫ রানের একটি অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন এই টাইগার ক্রিকেটার।

বর্তমানে ঘরোয়া ক্রিকেট মাতিয়ে বেড়ানো কাপালির সেই সেঞ্চুরির সুবাদে সেবার ২৮৩ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছিল বাংলাদেশ। মাত্র ৯৬ বলে ১০টি চার এবং ৫টি ছয়ের সাহায্যে ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন কাপালি।
এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত তাঁর এই ইনিংসটিকেই টাইগারদের সেরা হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এরপরও পরাজয় বরণ করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।তৎকালীন ভারতীয় ওপেনার গৌতম গম্ভীরের ৯০ এবং এবং সুরেশ রায়নার ১১৫ রানের দারুণ দুটি ইনিংসই জয় বঞ্চিত করেছিল টাইগারদের।
৩। মোহাম্মদ আশরাফুল- (১০৯- আরব আমিরাতের বিপক্ষে)- বাংলাদেশের ক্রিকেটে মোহাম্মদ আশরাফুলের অবদান যে কতখানি সেটি সকল ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই মানতে বাধ্য। এশিয়া কাপের মতো বড় আসরেও তিনি নিজের ব্যাটিং কারিশমা দেখিয়েছিলেন একটা সময়।
২০০৮ সালে লাহোরের মাটিতে আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১০৯ রানের একটি ইনিংস এসেছিল সাবেক এই টাইগার অধিনায়কের ব্যাট থেকে। সেবার এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিং করতে নেমে আশরাফুলের সেঞ্চুরির মাধ্যমে ৩০০ রানের বিশাল পুঁজি পেয়েছিল বাংলাদেশ।
আর এই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ২০৪ রানেই গুঁটিয়ে গিয়েছিল আরব আমিরাত। ফলে এশিয়া কাপে দ্বিতীয় জয় তুলে নিতে সক্ষম হয়েছিল লাল সবুজের দেশ। এর আগে টাইগারদের প্রথম জয়টি এসেছিল ২০০৪ সালের এশিয়া কাপে হংকংকের বিপক্ষে।
৪। আনামুল হক বিজয়- (১০০- পাকিস্তানের বিপক্ষে)- ২০১৪ সালের এশিয়া কাপের প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরির দেখা পান ওপেনার আনামুল হক বিজয়। সেবার পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্রই নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন তিনি।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সেবার বিজয়ের সেঞ্চুরিতে আফ্রিদিদের সামনে ৩২৭ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরেও শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। আর এর পেছনে কারণ ছিলেন হার্ড হিটার শহীদ আফ্রিদি। তাঁর ২৫ বলে ৫৯ রানের ক্যামিও একটি ইনিংসের সুবাদে পরাজিত হতে হয়েছিল টাইগারদের।
৫। জুনায়েদ সিদ্দিকি- (৯৭- পাকিস্তানে বিপক্ষে)- দেশের ক্রিকেটে বিস্মৃত একটি নাম হিসেবেই জুনায়েদ সিদ্দিকিকে ধরা যায়। দেশের হয়ে ৮০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেও কখনোই দলে জায়গা পাকা করতে পারেননি তিনি।
তবে এরপরেও এশিয়া কাপে দারুণ পারফর্মেন্সের কারণে স্মরণীয় হয়ে আছেন এই ওপেনার। ২০১০ সালে শ্রীলঙ্কার মাটিতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩৮৫ রানের পাহাড়সম পুঁজি দাঁড়া করিয়েছিল পাকিস্তান। পরবর্তীতে ব্যাট করতে নেমে ২৪৬ রানে টাইগাররা অলআউট হয়ে গেলেও ৯৭ রানের অনবদ্য ইনিংসটির কল্যাণে সকলের সমীহ আদায় করে নিয়েছিলেন জুনায়েদ সিদ্দিকি।