|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
রান ও উইকেটের বিবেচনায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারদের একজন সাকিব আল হাসান। শুধু বাংলাদেশেরই নয় বিশ্ব ক্রিকেটে সর্বকালের সেরাদের একজনও কিনা সেটা নিয়েও আলোচনা আছে। সবশেষ কয়েক বছরে প্রায়শই ইয়ান বোথাম, জ্যাক ক্যালিস, ইমরান খান কিংবা কপিল দেবদের রেকর্ড ভেঙেছেন সাকিব। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অলরাউন্ডারদের বেশিরভাগ রেকর্ডই নিজের দখলে নিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক।
২০২১ সালে ইএসপিএন ক্রিকইনফোর ক্রীড়া বিশ্লেষক অনন্ত নারায়ণন একে বিশ্লেষণে ওয়ানডেতে সাকিবকে সবার উপরে, টেস্টে দুইয়ে রেখেছিলেন। যদিও ভিন্ন ক্রীড়া বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণে সাকিবের অবস্থানে আরও খানিকটা পরে। তবে সাকিব যে সেরাদের কাতারে অন্যতম একজন সেটা হয়ত নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডারের সবচেয়ে বড় সুবিধা ব্যাট ও বলে একইভাবে অবদান রাখতে পারেন।
দুনিয়ার একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসির তিন সংস্করণের অলরাউন্ডারদের র্যাঙ্কিংয়ে উঠেছিলেন তিনি। কদিন আগে বাংলাদেশের জার্সিতে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন সাকিব। লাল সবুজের জার্সিতে ব্যাটিং প্রায় ১৫ হাজার রান করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তার চেয়ে বেশি রান আছে কেবল তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। বাঁহাতি স্পিনে নিয়েছেন ৭১২ উইকেট। এমন পারফরম্যান্স করা সাকিবকে তাই বড় ক্রিকেটার হিসেবে মূল্যায়ন করেন দীনেশ কার্তিকও।
জাতীয় দল ও আইপিএল থেকে অবসর নিয়ে বর্তমানে ধারাভাষ্য দিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও খেলেছেন কার্তিক। আবু ধাবি টি-টেন লিগে বাংলা টাইগার্সে যোগ দিয়েছেন ভারতের সাবেক এই উইকেটকিপার ব্যাটার। যেখানে অধিনায়ক হিসেবে খেলছেন সাকিবও। ফ্র্যাঞ্চাইজির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ভিডিওতে সাকিবের প্রশংসা করেছেন কার্তিক।
সাকিবকে নিয়ে ভারতের সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে সাকিব আল হাসান অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। তিন সংস্করণের জন্য সে দারুণ একজন ক্রিকেটার। আমরা সবাই জানি, সাকিব কীভাবে বাংলাদেশকে বিশ্ব ক্রিকেটে তুলে ধরেছে। তরুণ বয়স থেকেই সে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং চাপের মুহূর্তগুলোতে দলের হাল ধরছে। সাকিবকে সবসময় আমি অনেক বড় ক্রিকেটার হিসেবে মূল্যায়ন করি। অধিনায়ক হিসেবে সে খুবই কৌশলী। এবার তার সঙ্গে খেলব, ভালো লাগছে।’
১৮ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের তিন সংস্করণে মিলে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচ খেলেছেন কার্তিক। সমান একটি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৫৬ রান করেছেন ডানহাতি এই উইকেটকিপার ব্যাটার। তবে বাংলাদেশের বিপক্ষে কার্তিকের সবচেয়ে স্মরণীয় ম্যাচ ২০১৮ সালের নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল। ম্যাচ জিততে শেষ ১২ বলে ৩৪ রান প্রয়োজন ছিল ভারতের। এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে রুবেল হোসেনের ওভারে দুটি করে ছক্কা ও চারে ২২ রান তুলে নেন কার্তিক।
শেষ ওভারের শেষ বলে ভারতের যখন ৫ রান প্রয়োজন তখন সৌম্য সরকারের বলে ছক্কা মেরে বাংলাদেশের হৃদয় ভাঙেন তিনি। সেই ম্যাচের স্মৃতিচারণ করে কার্তিক বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে আমার অনেক স্মৃতি আছে। কিন্তু নিদাহাস ট্রফির স্মৃতি সবসময়ই আমার কাছে বিশেষ কিছু। যদিও বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছি। কিন্তু তাদের প্রতি আমার অনেক সম্মান এবং ভালোবাসা আছে।’
বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলেছেন কার্তিক। ২০১৬ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) আবাহনী লিমিটেডের হয়ে চার ম্যাচে এক সেঞ্চুরিতে ১৭৯ রান করেছিলেন তিনি। সেই সময় আবাহনী খেলেছিলেন তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের মতো ক্রিকেটাররা। তাদের স্মৃতিচারণ করে কার্তিক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে অনেক প্রতিভা আছে।
কার্তিক বলেন, ‘আমি সেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলেছি, আবাহনীর হয়ে। আমি জানি সেখানে কিভাবে ক্রিকেট হয়, সে কত প্রতিভা আছে। সেখানে সাকিব আল হাসানের মতো বন্ধুও আছে। তাকে আমি অনেকদিন ধরেই চিনি। আমি যখন আবাহনীর হয়ে খেলতে গিয়েছিলাম তখন লিটন দাস তরুণ একজন, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও খেলেছিল। বাংলাদেশের অনেক মানুষকেই আমি চিনি।’