promotional_ad

হতশ্রী ব্যাটিংয়ে সিরিজ শেষ বাংলাদেশের

promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে রান বন্যা হবে। সেই ধারণাই সত্যি করেছে ভারত। রিঙ্কু সিং ও নীতিশ রেড্ডির ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২১ রানের বিশাল পুঁজি পায় স্বাগতিকরা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারের মধ্যে ভারতের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে দারুণ শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে রেড্ডি-রিঙ্কুর প্রতি আক্রমণে মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের বোলিং।


এরপর ভারতের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে আবারও ব্যাটিং ব্যর্থতা সঙ্গী হয় টাইগারদের। যা একটু লড়াই করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আর কেউই বলার মতো কিছু করতে পারেননি। ভারতের দেয়া বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ সংগ্রহ করতে পারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান। ফলে ৮৬ রানের হারে সিরিজ হাতছাড়া হয় টাইগারদের।


ভারতের পাহাড় সমান রানের জবাবে প্রথম ওভারেই ১৭ রান তুলে নিয়ে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেয় বাংলাদেশ। তবে পাওয়ার প্লের মধ্যেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় টাইগাররা। অর্শদীপ সিংয়ের প্রথম ওভারে তিন চার মেরেছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। এই ভারতীয় পেসারের ওপরই চড়াও হতে গিয়ে ইন সাইড এজ হয়ে বোল্ড হন ১২ বলে ১৬ রান করা ইমন। আগের ম্যাচেও আর্শদীপের বলে একইভাবে আউট হয়েছিলেন বাংলাদেশের এই ওপেনার।


এরপর ব্যাট হাতে নেমেই টানা দুই চার মেরেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয়েছে তার ৭ বলে ১১ রানের ইনিংস। পরের ওভারে বরুণ চক্রবর্তীর প্রথম বলেই বোল্ড হয়েছেন লিটন দাস। তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১৪ রান। উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন তাওহীদ হৃদয়ও। বাঁহাতি স্পিনার অভিষেক শর্মার বলে বোল্ড হয়েছেন এই বাংলাদেশি ব্যাটার।


পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের ইনিংস টানছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে তাদের জুটি লম্বা হতে দেননি রিয়ান পরাগ। ভারতীয় এই স্পিনারের ওপর চড়াও হয়ে লফটেড ড্রাইভ খেলতে গিয়ে লং অফে রবি বিষ্ণইয়ের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১৬ বলে ১৬ রান করা এই ব্যাটার। পরের ওভারে মায়াঙ্ক যাদবের শিকার হন জাকের আলী। বলের লাইন না বুঝে আগেই ব্যাট চালিয়ে পুল করতে গিয়ে তিনি ক্যাচ দেন সুন্দরকে।


বরুণ চক্রবর্তীর ওপর চড়াও হতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে হার্দিক পান্ডিয়ার ডাইভিং ক্যাচে ফিরেছেন রিশাদ হোসেন। ১০ বলে ৯ রান করে থামে তার ইনিংস। একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। তাকে অবশ্য শেষদিকে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। তানজিম হাসান সাকিব ফিরেছেন ১০ বলে ৮ রান করে। 


এই লোয়ার অর্ডার ব্যাটার রেড্ডির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে লং অফ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হার্দিকের হাতে সীমানায় ধরা পড়েন। ইনিংসের শেষ ওভারে রেড্ডিকে লং অন দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে পরাগের সহজ ক্যাচ হয়ে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ৪১ রান করা মাহমুদউল্লাহ।


promotional_ad

এর আগে এই ম্যাচে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছে ভারত। মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথম ওভারে দুই ভারতীয় ওপেনার সাঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা মিলে ১৫ রান তুলে নেন। প্রথম বল ডট গেলেও পরের দুই বলেই চার হাঁকান স্যামসন। ওভারের শেষ বলে মিরাজকে চার মারেন অভিষেকও।


অবশ্য দ্বিতীয় ওভারেই তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দিয়েছেন তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরের লেন্থ বলে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন স্যামসন। তবে বল চলে যায় সোজা মিড অফে শান্তর হাতে।সেই ক্যাচ সহজেই লুফে নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সেই ওভারে বাংলাদেশের এই পেসার খরচা করেন মাত্র ২ রান।


এরপরের ওভারে এসে তানজিম হাসান সাকিব অভিষেক শর্মাকে বোল্ড করেছেন। যদিও বাংলাদেশের এই পেসারকে তৃতীয় ও চতুর্থ টানা দুই চার হাঁকিয়েছিলেন অভিষেক। ওভারের শেষ বলে যেন তারই বদলা নিলেন। অভিষেক অফ স্টাম্পের বাইরের বল মারতে গিয়ে ইন সাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়ে যান। আর তাতে অফ স্টাম্প উড়ে যায় অভিষেকের। তার ইনিংস শেষ হয় ১১ বলে ১৫ রানে।


এরপর সূর্যকুমার যাদবকে ফিরিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। এই টাইগার পেসারের স্লোয়ার বলে ড্রাইভ করতে গিয়েছিলেন ভারতীয় এই ব্যাটার। তবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। বল চলে যায় সোজা মিড অফে শান্তর হাতে। সূর্যকুমার আউট হয়েছেন ১০ বলে ৮ রান করে।


প্রথম ৬ ওভারের মধ্যে ভারতের ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের রানের লাগাম টেনেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা। তবে নীতিশ কুমার রেড্ডি ও রিঙ্কু সিং মিলে ভারতের রানের ধারা চাঙ্গা করেন। এর মধ্যে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের এক ওভারে নিয়েছেন ১৪ রান। 


অবশ্য রেড্ডিকে আউট করার জোর সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহর ফুল লেন্থের বলে সুইপ করতে চেয়েছিলেন রেড্ডি। তবে ব্যাটে বলে সংযোগ করতে পারেননি। বল লেগেছিল পেছনের পায়ের প্যাডে। বাংলাদেশের ফিল্ডারদের জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিলে আম্পায়ার্স কলের কারণে বেঁচে যান রেড্ডি। পরের ওভারে রিশাদ হোসেনের ওপর ঝড় বইয়ে দেন ভারতীয় দুই ব্যাটার। 


রেড্ডি টানা দুই বলে রিশাদকে ছক্কা হাঁকান। এক বলের বিরতির পর রিশাদকে মিড উইকেট দিয়ে পুল করে আরেকটি ছক্কা মারেন রিঙ্কু। সেই ওভার থেকেই আসে ২৪ রান। আর তাতে ভারতের সংগ্রহ ১০ ওভারেই পেরিয়ে যায় একশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই রেড্ডির অভিষেক হয়েছে।


দ্বিতীয় ম্যাচেই মাত্র ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ভারতীয় এই ব্যাটার। ১২তম ওভারে তাসকিনের পঞ্চম বলে লং অনে পুশ করে এক রান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরিতে পৌঁছান রেড্ডি। এরপর ঝড় গেছে মিরাজের ওপর দিয়েও তার করা ইনিংসে ১৩তম ওভারে রিঙ্কু-রেড্ডি মিলে তুলেছেন ২৬ রান। এর মধ্যে তিনটি ছক্কা ও একটি চার এসেছে রেড্ডির ব্যাট থেকেই।


এই জুটি ভেঙেছেন মুস্তাফিজ। এই টাইগার পেসারের করা অফ স্টাম্পে করা স্লোয়ার বলে এক্সট্রা কাভারে মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন রেড্ডি। এর ফলে শেষ হয়েছে তার ৩৪ বলে ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংস। ৭টি ছক্কা ও ৪টি চারে নিজের ইনিংস সাজিয়েছেন তিনি। এরপর তানজিমকে ছক্কা হাঁকিয়ে ২৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন রিঙ্কু।


শেষদিকে রিঙ্কুকে ফিরিয়েছেন তাসকিন। বাংলাদেশের এই পেসারের স্লোয়ার বলেম পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে জাকের আলীর হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ২৯ বলে ৫৩ রান করা রিঙ্কু। নিজের শেষ ওভারে এসে তানজিম আউট করেছেন রিয়ান পরাগকে। তানজিমের স্লোয়ার বলে পুল করতে গিয়ে লং অনে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন।


আর শেষ ওভারে হার্দিককে আউট করেছেন রিশাদ হোসেন। এই লেগ স্পিনারের লেংথ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দেন ১৯ বলে ৩২ করা এই ব্যাটার। এক বল পর তিনি বরুণ চক্রবর্তীকেও ফিরিয়েছেন। এগিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অফে পারভেজ হোসেন ইমনকে ক্যাচ দিয়েছেন ভারতীয় এই ব্যাটার। ওয়াশিংটন সুন্দর ০ ও মায়াঙ্ক যাদব ১ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন।


সংক্ষিপ্ত স্কোর-


ভারত- ২২১/৯ (২০ ওভার) (স্যামসন ১০, অভিষেক ১৫, সূর্যকুমার ৮, রেড্ডি ৭৪, রিঙ্কু ৫৩, হার্দিক ৩২; রিশাদ ৩/৫৫, তাসকিন ২/১৬, তানজিম ২/৫০, মুস্তাফিজ ২/৩৬)


বাংলাদেশ- ১৩৫/৯ (২০ ওভার) (ইমন ১৬, লিটন ১৪, শান্ত ১১, হৃদয় ২, মিরাজ ১৬, মাহমুদউল্লাহ ৪১; রেড্ডি ২/২৩, বরুণ ২/১৯)



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: [email protected]
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball