সেঞ্চুরি করেও রাজশাহীকে জেতাতে পারলেন না বিজয়
ছবি: সেঞ্চুরি করেও হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে এনামুল হক বিজয়কে, ক্রিকফ্রেঞ্জি
দারুণ ব্যাটিংয়ে ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পর ডানহাতি ব্যাটার আরও আক্রমণাত্বক হয়ে ওঠেন। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিচ্ছিলেন রায়ান বার্ল। তবে ইনিংসের ১৯তম ওভারে সালমান ইরশাদের বলে স্কুপ করতে গিয়ে হাসান মাহমুদের দুর্দান্ত ক্যাচে ২৫ রানে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে রাজশাহীর প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। প্রথম বলে চার মেরে পরের বলে দুই রান নেন বিজয়। তবে হাসানের তৃতীয় বলে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তিনি।
‘নিজের মতো করে খেললে জিসান অবশ্যই সারপ্রাইজ প্যাকেজ’
১০ জানুয়ারি ২৫এমন অবস্থায় শেষ ৪ বলে রাজশাহীর প্রয়োজন ১১ রান। হাসানের ফুলটসে ডিপ মিড উইকেটে বিজয় ক্যাচ দিলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি নাওয়াজ। সেই ফাঁকে দুই রান নেন বিজয় ও আকবর আলী। দারুণ এক ইয়র্কারে পঞ্চম বলে বিজয়কে রান বের করতে দেননি ডানহাতি এই পেসার। শেষ বলে যখন ৯ রান প্রয়োজন তখন সিঙ্গেল নিয়ে নিজের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন বিজয়। ক্যারিয়ারের প্রথম বিপিএল সেঞ্চুরি পাওয়ার দিনে খুলনার কাছে ৭ রানে হারতে হয়েছে বিজয়ের রাজশাহীকে।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে জয়ের জন্য ২১০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রাজশাহীর হয়ে শুরুটা ভালো করেন জিসান আলম ও মোহাম্মদ হারিস। শুরু থেকেই আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ের চেষ্টায় ছিলেন তারা দুজন। ৪ ওভারে বিনা উইকেটে ৪৭ রান করা রাজশাহীর উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে হাসানের হাতে বল তুলে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ডানহাতি পেসারের শর্ট ডেলিভারিতে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে টপ এজ হয়েছেন জিসান।
দারুণ ব্যাটিংয়ে ১৫ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলা জিসানকে ফিরতে হয় নাওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে। পাওয়ার প্লে শেষের আগে ফিরতে পারতেন বিজয়ও। তবে সেই সুযোগ লুফে নিতে পারেনি খুলনা। যদিও নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে হারিসকে নিজের শিকার বানিয়েছেন হাসান। বাংলাদেশের পেসারের বলে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে খেলতে গিয়ে আবু হায়দার রনির হাতে ক্যাচ দিয়েছেন হারিস। খানিকটা দৌড়ে এসে আবু হায়দার দুর্দান্ত ক্যাচ নিলে হারিসকে ফিরতে হয় ১৫ রানে। জিসান ও হারিসকে হারানোর পর জুটি গড়ে তোলেন বিজয় ও ইয়াসির আলী রাব্বি।
তাদের দুজনের পঞ্চাশ পার করা জুটি ভাঙেন আবু হায়দার। বাঁহাতি পেসারের ফুলার লেংথ ডেলিভারিতে লং অন দিয়ে খেলতে গিয়ে নাওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ২০ রান করা ইয়াসির। ডানহাতি ব্যাটার ফেরার একটু পর ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন বিজয়। তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন বার্ল। দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়ার আগেই ফিরেছেন ২৫ রান করা এই ব্যাটার। ইনিংসের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৫৭ বলে হাফ সেঞ্চুর করে অপরাজিত ছিলেন বিজয়। খুলনার হয়ে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হাসান।
ম্যাচের আগে পারিশ্রমিক পাওয়ায় চাপহীন ছিলেন রাজশাহীর ক্রিকেটাররা
১৮ জানুয়ারি ২৫সন্ধ্যায় টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত সবশেষ চার ম্যাচে রান তাড়া করে হারা খুলনা। মিরাজকে সঙ্গে নিয়ে শুরুটা দারুণ করেন নাইম শেখ। ইনিংসের প্রথম বল থেকেই আক্রমণাত্বক মেজাজে ব্যাটিং করেন তিনি। যদিও তাকে ইনিংস বড় করতে দেননি জিসান। ডানহাতি অফ স্পিনারে বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ২৭ রান করেছেন বাঁহাতি ওপেনার। পরের ওভারে সাজঘরের পথে হেঁটেছেন মিরাজও।
তাসকিন আহমেদের দুই বলে টানা দুই ছক্কা মেরেও থামছিলেন না তিনি। পরের বলে আবারও বাউন্ডারির চেষ্টায় করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে জিসানকে ক্যাচ দিয়েছেন ১৩ বলে ২৬ রান করা মিরাজ। খুলনার হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ১ রানের বেশি করতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্স রস। ৬০ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন আফিফ ও উইলিয়াম বসিস্তো। দলের বিপর্যয় সামলে মার্ক দেয়ালকে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন আফিফ।
৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। তাসকিনের বলে ফেরার আগে ৪২ বলে ৫৬ রান করেছেন আফিফ। বসিস্তোর সঙ্গে ভাঙে তাদের দুজনের ১১৩ রানের জুটি। শেষ দিকে দারুণ এক ক্যামিও ইনিংস খেলেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ৪ ছক্কায় ১২ বলে ৩০ রান করে খুলনার রান দুইশ পার করেছেন ডানহাতি এই ব্যাটার। আফিফের মতো হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া বসিস্তো অপরাজিত ছিলেন ৫৫ রানের ইনিংস খেলে। খুলনার ২০৯ রানের পুঁজির দিনে ৩৬ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন রাজশাহীর তাসকিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
খুলনা টাইগার্স- ২০৯/৪ (২০ ওভার) (নাইম ২৭, মিরাজ ২৬, আফিফ ৫৩, রস ১, বসিস্তো ৫৫*, অঙ্কন ৩০*, তাসকিন ২/৩৬)
দুর্বার রাজশাহী- ২০২/৪ (২০ ওভার) (জিসান ৩০, হারিস ১৫, বিজয় ১০০*, ইয়াসির ২০, বার্ল ২৫; হাসান ২/২৫)