মিরাজের ৫ উইকেটের পরও জিম্বাবুয়ের চাইতে পিছিয়ে বাংলাদেশ

ছবি: এখনও ২৫ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ, ক্রিকফ্রেঞ্জি

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমে আবারও ব্যর্থ হন সাদমান ইসলাম। ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্প তাক করা বলে খোঁচা মেরে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন সাদমান। ফেরার আগে ১০ বলে চার রান করেন এই ওপেনার। ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর আর কোনো বিপদ ঘটতে দেননি মাহমুদুল হাসান জয় ও মুমিনুল হক। জয় ২৮ এবং মুমিনুল ১৫ রানে অপরাজিত আছেন।
৩৫০-৪০০ রানে চোখ বাংলাদেশের
৫০ মিনিট আগে
এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করা জিম্বাবুয়ে প্রথম দিনেই তোলে বিনা উইকেটে ৬৮ রান। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে অবশ্য সুবিধা করতে পারেনি সফরকারীরা। অপরদিকে নাহিদের কল্যাণে শুরুটা ভালোই করেছে টাইগাররা। দিনের তৃতীয় ওভারে বেন কারেনকে ফিরিয়েছেন এই পেসার। তার বাউন্সারে শর্ট লেগে মুমিনুল হককে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন কারান। ফেরার আগে করেছেন ৫৫ বলে ১৮ রান। ওপেনিং জুটিতে জিম্বাবুয়ে তোলে ৬৯ রান।
বেন কারান ফিরলেও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিতে ভুল করেননি ব্রায়ান বেনেট। তবে হাফ সেঞ্চুরির পর তুলনামূলক আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলা এই ওপেনারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে ফের স্বস্তি এনে দেন নাহিদ। তার পঞ্চম স্টাম্প তাক করা গুড লেংথের বলে স্কয়ার বরাবর কাট করতে গিয়ে বলের গতির কাছে পরাস্ত হন বেনেট। বলটি তার ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক জাকের আলী অনিকের গ্লাভসে চলে যায়। ফেরার আগে ৬৪ বলে ৫৭ রান করেন বেনেট। দশটি চারে সাজানো ছিল তার ইনিংস।
৮৮ রানে বেনেট ফেরার পর তৃতীয় উইকেটটিও হারায় জিম্বাবুয়ে। নাহিদের সেই ওভারের পরের ওভারে ১২ বলে দুই রান করা নিক ওয়েলচকে দারুণ এক গুড লেংথের ইনসুইংয়ে বোল্ড করেন হাসান মাহমুদ। বলটি ওয়েলচের ব্যাট-প্যাডের মাঝ দিয়ে অফ স্টাম্প উড়িয়ে দেয়। একটু পর, ২৪.৫ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ করে জিম্বাবুয়ে।

বাংলাদেশে এমন গতিময় উইকেট আগে দেখেননি জিম্বাবুয়ের কোচ
২০ এপ্রিল ২৫
দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন শন উইলিয়ামস এবং ক্রেইগ আরভিন। দুজন মিলে ৯০ বলে ৪১ রানের জুটি গড়েন। এই জুটিও ভাঙেন নাহিদ। তার গুড লেংথের লাফিয়ে ওঠা বল না খেলে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন আরভিন। ব্যাট সরিয়েও যেন সরাতে পারেননি তিনি। জিম্বাবুয়ে অধিনায়কের ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষক জাকেরের গ্লাভসে চলে যায় বল। শুরুতে আবেদনের পর অবশ্য আউটটি দেননি আম্পায়ার। পরবর্তীতে বাংলাদেশ রিভিউ নিলে ইতিবাচক সাড়া পায় বাংলাদেশ। বল ব্যাটের কানায় লাগায় ফিরতে হয় আরভিনকে। এ দিন ৩৯ বলে আট রান আসে আরভিনের ব্যাটে। ১২৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে।
মধ্যাহ্নভোজ বিরতিতে যাওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে করে চার উইকেটে ১৩৩ রান। বিরতির পর ফিরে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন উইলিয়ামস। ৮৭ বলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্ট হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ব্যাটার। তবে উইলিয়ামস ও মাধেভেরের এই জুটির অর্ধশতক হতে দেননি খালেদ আহমেদ।
পেসারদের দাপটের ইনিংসে ৪৮ রানের এই জুটিটি ভাঙেন খালেদ। তার শর্ট লেংথের ডেলিভারিটি ছিল পঞ্চম স্টাম্প তাক করা। ব্যাকফুটে গিয়ে সেটিকে খেলতে দেরি করে ফেলেন মাধেভেরে। যার কারণে বলটি তার ব্যাটে লেগে স্টাম্পে আঘাত করে। ইনসাইড এজ হওয়ার আগে ৩৩ বলে ২৪ রান করেন মাধেভেরে। উইকেটরক্ষক নিয়াশা মায়াভোকে সঙ্গে নিয়ে জিম্বাবুয়েকে লিড এনে দেন শন উইলিয়ামস। যদিও দলীয় ১৯৩ রানে তাকে হারায় জিম্বাবুয়ে।
মেহেদী হাসান মিরাজকে লং অফের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারির কাছাকাছি ক্যাচ আউট হন উইলিয়ামস। আগ্রাসী শটে বিদায় নেয়ার আগে ১০৮ বলে ৫৯ রান করেন তিনি, ইনিংসটি সাজানো ছিল ছয়টি চার ও দুটি ছক্কায়। ক্যাচটি ধরেন মাহমুদুল হাসান জয়। ৫৮তম ওভারে দুইশ রান পার করে জিম্বাবুয়ে।
নিয়াশা মায়াভো এবং ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ব্যাটে এগিয়ে চলেছে জিম্বাবুয়ে। দলকে দুইশ পার করিয়ে সামনে এগিয়ে নেন তারা। চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে দলটি লিড পায় ২২ রানের। মাঠে ফিরে দুই ওভার পরই মিরাজের দ্বিতীয় শিকার হয় ফিরে যান মায়াভো। ৫৪ বলে ৩৫ রান করা উইকেটরক্ষক এই ব্যাটারকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। ৭৩.১ ওভারে ২৫০ রান স্পর্শ করে জিম্বাবুয়ে। রিচার্ড এনগারাভা ও ব্লেসিং মুজারাবানি ৩৬ রানের জুটি গড়েন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ (প্রথম ইনিংস)- ১৯১/১০ (৬১ ওভার) (মুমিনুল ৫৬, শান্ত ৪০; মাসাকাদজা ৩/২১, মুজারাবানি ৩/৫০)
জিম্বাবুয়ে (প্রথম ইনিংস)- ২৭৩/১০ (৮০.২ ওভার) (উইলিয়ামস ৫৯, বেনেট ৫৭, মায়াভো ৩৫; মিরাজ ৫/৫২)
বাংলাদেশ (দ্বিতীয় ইনিংস)- ৫৭/১ (১৩ ওভার) (সাদমান ৪, জয় ২৮*, মুমিনুল ১৫*)