হোয়াইটওয়াশ হয়ে ‘গেম অ্যাওয়ারনেস’ নিয়ে আক্ষেপ করলেন জ্যোতি
ছবি: বিসিবি
উল্টো স্বর্ণা আক্তার ও রিতু মনির উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। মেডেন ওভার দেয়ায় জিততে থাকা ম্যাচটা বের করা কঠিন হয়ে পড়ে নিগার সুলতানা জ্যোতিদের জন্য। উদ্বোধনী জুটিতে ১০৩ রান তোলার পরও বাংলাদেশকে হারতে হয়েছে ১২ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করেছিলেন বোলাররা। ১৩৫ রান তাড়ায় ব্যাটারদের ব্যর্থতায় মাত্র ৮৭ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের মেয়েরা। শেষ ম্যাচেও জয়ের সুযোগ ছিল জ্যোতিদের সামনে।
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর মোক্ষম সুযোগ পেয়েও সেটা অবশ্য লুফে নিতে পারেনি স্বাগতিকরা। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে জিততে হলে শেষ ওভারে ১৫ রান প্রয়োজন ছিল আয়ারল্যান্ডের। স্বর্ণার প্রথম বলে আরলেনে ক্যালি ফিরলে ৫ বলে ১৪ রান করতে হতো তাদের। ফুলটস পেলেও ঠিকঠাক টাইমিং করতে পারেননি লরা ডেলানি। লং অফে সহজ ক্যাচ উঠলেও সেটা লুফে নিতে পারেননি রিতু। ২ বলে যখন ৪ রান প্রয়োজন তখন জান্নাতুল ফেরদৌসের কাছে ক্যাচ গেলেও বলের ফ্লাইট বুঝতে না পারায় সেটা ধরতে পারেননি তিনি।
সুযোগ মিসে শেষ পর্যন্ত সফরকারীদের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। লম্বা সময় ধরে টি-টোয়েন্টিতে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের মেয়েদের সবচেয়ে বড় সমস্যা ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী নিজদের মেলে ধরতে না পারা। ভালো শুরু পেলে মিডল অর্ডার ব্যর্থ আবার শুরুটা ভালো না হলেও হাল ধরেন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। আবার বোলাররা ভালো করলেও ম্যাচ জেতাতে ভূমিকা রাখতে পারেন না ব্যাটাররা। হোয়াইটওয়াশ হয়ে তাই স্কিলের চেয়ে মেয়েদের গেম অ্যাওয়ারনেস নিয়েই বেশি আক্ষেপ করলেন জ্যোতি।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, ‘ইনিংস কিভাবে লম্বা করতে হয় বা কোন সময়টাতে আমাদের বিল্ড করতে হয়, কোন সময়টাতে রোটেশনের দিকে মনোযোগ দিতে হয় এখন পর্যন্ত বোধহয় সেগুলো মানিয়ে নিতে পারছি না। বলব যে এটা আমাদের অনেক বড় ভুল, সমাধান করা উচিত। কারণ সামনে যখন আমরা আরও ভালো দলের বিপক্ষে খেলব তারা কিন্তু আমাদের এর থেকে বেশি এবং বড় বড় চ্যালেঞ্জ দেবে।’
ভিন্ন এক প্রশ্নে পুরো সিরিজের মূল্যায়ণে বাংলাদেশের অধিনায়ক বলেন, ‘দেখুন, এসব ক্রিকেট ম্যাচগুলোতে স্কিলের থেকে আপনার নলেজ (গেম অ্যাওয়ারনেস) ব্যবহার করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কোন পরিস্থিতিতে আমি নিজেকে কিভাবে অ্যাপ্লাই করব। প্রথম ম্যাচটা বলব আমাদের হাতেই ছিল। ১৭৯ রান তাড়া করতে যাচ্ছিলাম যেখানে আমাদের ওপেনাররা দারুণ একটা শুরু এনে দিয়েছিল। এরকম রান তাড়ায় ১৯তম ওভারে যদি আপনি মেইডেন দেন তাহলে কাজটা কঠিন। দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো বোলিং করেছি কিন্তু আমরা ব্যাটাররা কিছু করতে পারিনি। সবমিলিয়ে এসব মুহূর্তে দলের চাপ সামলাতে না পারা বড় সমস্যা।’
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পুরো টি-টোয়েন্টি সিরিজেই ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন জ্যোতি। দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটার হলেও আইরিশদের বিপক্ষে তিন ম্যাচে বাংলাদেশের অধিনায়ক করেছেন মাত্র ১৮ রান। একটি ম্যাচেও দুই অঙ্কের কোটা ছুঁতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটার। টপ অর্ডার ব্যাটার হিসেবে নিজে পারফর্ম করতে না পারায় ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে নিচ্ছেন তিনি।
জ্যোতি বলেন, ‘আমি পুরো টুর্নামেন্টে কোন রান করতে পারিনি। আমি বলব আমার দিক থেকে আমি ব্যর্থ। একজন টপ অর্ডার ব্যাটার হিসেবে সবাই আমার কাছ থেকে অনেক বেশি প্রত্যাশা করে। কিন্তু আমি কোনটাতেই অবদান রাখতে পারিনি। যেটার কারণে দল হয়ত অনেকখানি পিছিয়ে গেছে।’