promotional_ad

ব্যাটে-বলে বিবর্ণ বাংলাদেশ, ৪৯ বল হাতে রেখে ভারতের বিশাল জয়

promotional_ad

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||


টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রভাব বিস্তার করে সিরিজ জিতেছে ভারত। টি-টোয়েন্টিতে পোশাক ও দল বদলে গেলেও ভারতের প্রভাবে কোনো ভাঁটা পড়েনি। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বোলারদের তুলোধোনা করে ৭ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে ভারত। স্বাগতিকদের এই বিশাল জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান সাঞ্জু স্যামসন ও সূর্যকুমার যাদবের।


যদিও দুই ব্যাটারই ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। সূর্যকুমার ১৪ বলে ২৯ ও স্যামসন ১৯ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলেছেন। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুজন ২১ বলে ৪০ রানের জুটিই ভারতের বড় জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছে। এই দুই সেট ব্যাটার ফিরে যাওয়ার পর নীতিশ রেড্ডিকে নিয়ে ভারতকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। রেড্ডি ১৬ ও হার্দিক মাত্র ১৬ বলে ৩৯ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৪৯ বল হাতে রেখেই ভারতকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন।


বাংলাদেশের দেয়া মাঝারি লক্ষ্যে খেলতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় ভারত। শরিফুল ইসলামের প্রথম ওভারেই তারা তুলে নেয় ১০ রান। বাংলাদেশের এই পেসারকে দুই বাউন্ডারি হাঁকান সাঞ্জু স্যামসন। ওভারের চতুর্থ বলে স্ট্রেইট ড্রাইভ করে চার মারেন স্যামসন। এক বল পর ড্রাইভ করে মিড অফ দিয়ে আরেকটি চার হাঁকান এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।


পরের ওভারে অভিষেক শর্মার তোপের মুখে পড়েন তাসকিন আহমেদ। প্রথম বলেই লং অফ দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা মারেন অভিষেক। পরের বলে এজ হয়ে বল চলে যায় থার্ড ম্যান অঞ্চলে। বল পেরিয়ে যায় বাউন্ডারি। চতুর্থ বলে তাসকিনকে আরেকটি চার মারেন অভিষেক।


অবশ্য ওভারের শেষ বলে স্যামসনের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফেরেন অভিষেক। স্যামসন তাসকিনের ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন। বল চলে গিয়েছিল মিড উইকেটে। অভিষেক রান নিতে এগিয়ে গিয়েছিলেন বেশ খানিকটা। তবে বল হাতে পেয়ে সরাসরি থ্রুতে স্টাম্প ভেঙে দেন তাওহীদ হৃদয়। ফলে ৭ বলে ১৬ রান করা এই ব্যাটারকে ফিরে যেতে হয়।


এক উইকেট হারিয়ে ফেললেও ভারতের ইনিংস টানছিলেন সূর্যকুমার ও স্যামসন। এই দুজনের ব্যাটে ৪.৪ ওভারেই ৫০ পেরিয়ে যায় ভারত। অবশ্য এই দুজনের জুটি আর বেশি বড় হতে দেননি মুস্তাফিজুর রহমান। ঠিক আগের বলেই ছয় মেরেছিলেন সূর্যকুমার। পরের বলেও মুস্তাফিজের ওপর চড়াও হয়েছিলেন ভারতীয় এই ব্যাটার। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি।


promotional_ad

বল চলে যায় ডিপ স্কয়ার লেগে দাঁড়িয়ে থাকা জাকের আলীর হাতে। সেখানে সহজ ক্যাচ মুঠোয় নিয়েছেন তিনি। ফলে ১৪ বলে ২৯ রানে ইনিংস থামে সূর্যকুমারের। এরপর মিরাজ আউট করেছেন ১৮ বলে ২৯ রান করা স্যামসনকে। অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে আসা মিরাজকে তুলে মারতে গিয়ে মিড উইকেটে রিশাদের হাতে ক্যাচ দেন এই ভারতীয় উইকেটরক্ষক। এরপর বাংলাদেশের বোলারদের আর কোনো সুযোগই দেননি হার্দিক ও রেড্ডি।


এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে আর্শদীপ সিংয়ের লেংথ ডেলিভারিতে প্রথম স্লিপ এবং থার্ডম্যানের মাঝ দিয়ে চার মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন দাস। বাঁহাতি পেসার বলের ডেলিভারিটা করেছিলেন একটু পেছনে শর্ট অব লেংথে। বাউন্ডারির আশায় অফ স্টাম্পের বাইরে গিয়ে মিড উইকেট দিয়ে খেলার চেষ্টা করেছিলেন লিটন। তবে টপ এজ হয়ে রিংকু সিংয়ের হাতে ক্যাচ দিতে হয়েছে বাংলাদেশের উইকেটকিপার ব্যাটারকে। তাতে এক চারেই শেষ হয়েছে লিটনের ইনিংস।


আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনও ফিরেছেন দ্রুতই। বছর দুয়েক পর বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা বাঁহাতি ওপেনার হার্দিক পান্ডিয়ার লেগ স্টাম্পে করা ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে ভালো শুরুর আভাসই দিয়েছিলেন। তবে ইমনকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি আর্শদীপ। বাঁহাতি পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন ৮ রান করা তরুণ এই ব্যাটার।


দ্রুতই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে টেনে তোলার চেষ্টা করেছিলেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। তাদের দুজনের জুটি বড় হতে দেননি বরুণ চক্রবর্তী। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মায়াঙ্ক যাদবের গতির সামনে সুবিধা করতে পারেননি হৃদয়। ভারতের তৃতীয় পেসার হিসেবে অভিষেকেই মেইডেন নিয়েছেন তরুণ এই পেসার। আগের ওভার মেইডেন দেয়ায় বরুণের বিপক্ষে রান তোলার চেষ্টা করেন হৃদয়। অনেকটা চাপে পড়ে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় হার্দিকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন।


যদিও ব্যক্তিগত ৩ রানের সময় জীবন পেয়েছিলেন তিনি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে বরুণের গুগলিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছিলেন হৃদয়। তবে সহজ ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি নীতিশ কুমার রেড্ডি। তবে জীবন পেয়ে ১৮ বলে ১২ রানের বেশি করতে পারেননি তরুণ এই ব্যাটার। হৃদয় ফেরার পর শান্তর সঙ্গে জুটি গড়তে পাঁচে এসেছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মায়াঙ্কের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ ডেলিভারিতে তুলে মারতে গিয়ে ওয়াশিংটন সুন্দরকে ক্যাচ দিয়েছেন।


১ রান করা মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে টি-টোয়েন্টি অভিষেকে নিজের প্রথম উইকেটের দেখা পেয়েছেন মায়াঙ্ক। নীতিশের বলে ছক্কা মেরে খানিকটা চাপ কমানোর চেষ্টা করেছিলেন জাকের আলী অনিক। তবে সেই ছক্কার পর খুব বেশি কিছু করতে পারেননি তিনি। বরুণের দারুণ এক ডেলিভারিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হয়েছেন। মূলত ডিফেন্স করার চেষ্টায় থাকলেও ব্যাট ও প্যাডের মাঝে ফাঁকা থাকায় সেখান গিয়ে বল আঘাত হানে স্টাম্পে। জাকের ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন ৮ রানে।


বাংলাদেশের ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখেছিলেন শান্ত। খানিকটা দেখেশুনে খেলা বাঁহাতি ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন সুন্দর। ডানহাতি স্পিনারের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে সুন্দরের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ২৭ রান করা বাংলাদেশের অধিনায়ক। শান্ত ফেরার পর ব্যাটিংয়ে এসে শুরুটা ভালো করেছিলেন রিশাদ। গতির ঝড় তোলা মায়াঙ্কের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারিতে থার্ডম্যানের উপর দিয়ে ছক্কা মারার পরের বলে স্ট্রেইট ড্রাইভে চার মেরেছিলেন তিনি।


শুরুটা ভালো হলেও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। বরুণের লেংথ ডেলিভারিতে স্লগ সুইপে ছক্কা মারার চেষ্টায় হার্দিকের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ১১ রান করা রিশাদ। শেষ দিকে টেইলএন্ডার ব্যাটারদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশকে ১২৭ রানের পুঁজি এনে দিয়েছেন মিরাজ। ১৪ মাস পর একাদশে সুযোগ পাওয়া এই অলরাউন্ডার অপরাজিত ছিলেন ৩৫ রানে। ভারতের হয়ে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন আর্শদীপ ও বরুণ।


সংক্ষিপ্ত স্কোর:


বাংলাদেশ- ১২৭/১০ (১৯.৫ ওভার) (লিটন ৪, ইমন ৮, শান্ত ২৭, হৃদয় ১২, জাকের ৮, মাহমুদউল্লাহ ১, মিরাজ ৩৫*, রিশাদ ১১; আর্শদীপ ৩/১৪, বরুণ ৩/৩১)


ভারত- ১৩২/৩ (১১.৫ ওভার) (স্যামসন ২৯, অভিষেক ১৬, সূর্যকুমার ২৯, হার্দিক ৩৯*, নীতিশ ১৬*; মিরাজ ১/৭, মুস্তাফিজ ১/৩৬)



আরো খবর

সম্পাদক এবং প্রকাশক: মোঃ কামাল হোসেন

বাংলাদেশের ক্রিকেট জগতে এক অপার আস্থার নাম ক্রিকফ্রেঞ্জি। সুদীর্ঘ ১০ বছর ধরে ক্রিকেট বিষয়ক সকল সংবাদ পরম দায়িত্ববোধের সঙ্গে প্রকাশ করে আসছে ক্রিকফ্রেঞ্জি। প্রথমে শুধুমাত্র সংবাদ দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে ক্রিকফ্রেঞ্জি একটি পরিপূর্ণ অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম।

মেইল: cricfrenzy@gmail.com
ফোন: +880 1305-271894
ঠিকানা: ২য় তলা , হাউজ ১৮, রোড-২
মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,
মোহাম্মাদপুর, ঢাকা
নিয়োগ ও বিজ্ঞপ্তি
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ
নিয়ম ও শর্তাবলী
নীতিমালা
© ২০১৪-২০২৪ ক্রিকফ্রেঞ্জি । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
footer ball