‘যখনই কাউকে শাস্তি দিয়েছি, দেশের মানুষ আমাকে শেষ করে দিয়েছে’

ছবি: ক্রিকফ্রেঞ্জি

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
আফগানিস্তানকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের পরিকল্পনা বিসিবির
৫ ঘন্টা আগে
শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সাকিব আল হাসান, শাহাদাত হোসেন রাজিবদের মতো ক্রিকেটারদের শাস্তির আওতায় এনেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দোষী সাব্যস্ত হলেও সেই সময় বিসিবির দেয়া শাস্তির পক্ষে ছিল না দেশের বেশিরভাগ সমর্থক। সাকিব, শাহাদতদের শাস্তি দেয়ায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল নাজমুল হাসান পাপনকে। যা নিয়ে আক্ষেপ করে বিসিবি সভাপতি জানান, কাউকে শাস্তি দিলে মানুষ তার সমালোচনা করে শেষ করে দিতো।
২০১৪ সালের জুনে স্ত্রীকে উত্ত্যক্তকারী এক দর্শককে পিটিয়েছিলেন সাকিব। এ ছাড়া ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) খেলতে যাওয়া নিয়ে প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করেছিলেন তিনি। এমন আচরণের জন্য সাকিবকে ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি। যদিও পরবর্তীতে বহিষ্কারাদেশ তিন মাসে নামিয়ে আনা হয়। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সবধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ২০১৮ সালে।
শুধু তাই নয় ২০২১ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) একটি ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে না পেরে স্টাম্পে লাথি মারার সঙ্গে তুলে আছাড়ও মেরেছিলেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার। তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি ৫ লাখ টাকা জরিমানা দিতে হয়েছিল সাকিবকে। এদিকে সতীর্থ আরাফাত সানিকে পেটানোর দায়ে ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ নিয়েছিলেন পেসার শাহাদাত।

বিসিবি যখনই এমন কঠোরতা দেখিয়েছে তখনই দেশের সমর্থকরা তাদের বিপক্ষে গিয়েছে। নিজেদের পছন্দের খেলোয়াড়ের পাশে থাকতে বোর্ড সভাপতিকে ট্রল, গালিগালাজ কিংবা সমালোচনা করে ধুয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিসিবিকে নিয়ে কোনো গণমাধ্যম নেতিবাচক প্রতিবেদন করলে খুশির জোয়ারে ভাসতো সমর্থকদের একটি গোষ্ঠী। সেটা অবশ্য পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। এমন জাগরণের অপেক্ষায় ছিলেন বলে জানান বিসিবি সভাপতি।
মিরপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে পাপন বলেন, ‘যে কাউকে যখনই শাস্তি দিয়েছি, সারা দেশের মানুষ আমাকে শেষ করে দিয়েছে। মানুষ চায় না এসব, আমিতো এতদিন তাই জানতাম। কেউ কি আমাদের সাপোর্ট করেছে কখনো, কোনো একটা সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে। আমরা অপেক্ষা করছিলাম। এই জাগরণটা উঠুক।’
কদিন আগে পাপন নিজেই জানিয়েছিলেন, বিসিবিতে তিনি হয়ত আরও এক বছর থাকবেন। এই সময়ে দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে চান। সেটি করতে গেলে দেশের মানুষ তাকে ধুয়ে দেবে বলে মনে করেন পাপন। তবুও ক্রিকেটের স্বার্থে সেই সিদ্ধান্তগুলো নিতে চান তিনি।
পাপন বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি বলেছি দেখেন, ক্রিকেটের ভালো করতে হলে আমাকে কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেটা মানুষ পছন্দ করবে না। সহজ একটা হিসেব। আমি জানি আমাকে ধুয়ে ফেলবে সবাই, কিন্তু নিতে তো হবে।’
ডিসিপ্লিন নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন পাপন। সেই সঙ্গে এটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন এসব নিয়ে কাজ করলে বোর্ড কর্তারা ভাবেন তাদের পেছনে লাগা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘খালি একটা উদাহরণ দেই, ডিসিপ্লিন বলে কিছু আছে? এবার আমার মনে হয়নি। ডিসিপ্লিন ঠিক করতে হবে না? সে যেই হোক না কেন। এসব করতে গেলে আমার বোর্ডেরও অন্যরা ভাবে হায়রে আমার পেছনে লাগছে। এজন্য কেউ করে না।’
দেশের ক্রিকেটের পেছনে না লেগে সবাইকে পাশে থাকতে বলছেন বিসিবি সভাপতি। পাপন বলেন, ‘এরকম পেছনে লাগাটা বন্ধ করেন না, দেশকে ভালোবাসেন, ক্রিকেটকে ভালোবাসেন, সব ঠিক হয়ে যাবে। এটা কোনো ব্যাপারই না। আমাদের ভালো খেলোয়াড় আছে। এ ব্যাপারে আমার কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সাপোর্ট দরকার, বিসিবি কখনও সাপোর্ট পায় না।’