মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের আরও একটি হার
ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
জাতীয় দলের ছায়া কোচিং প্যানেল চান সুজন
৮ ঘন্টা আগে
৮১ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ কত বড় ব্যবধানে হারবে সেটাই যেন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কুইন্টন ডি ককের ১৭৪ এবং হেনরিখ ক্লাসেনের ঝড়ো ৯০ রানের ইনিংসে ৩৮২ রান করা সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে এমন আলোচনাই বোধহয় স্বাভাবিক ছিল। বাংলাদেশের সামনে তখন উঁকি দিচ্ছিল বিশ্বকাপ ও নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে পরাজয়। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে এসব সমীকরণ মিলতে দেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলের বিপর্যয়ে দারুণ সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের হারের ব্যবধান কমিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশকে ১৪৯ রানে হারিয়ে সেমিফাইনালের আরও কাছে সাউথ আফ্রিকা। এদিকে পাঁচ ম্যাচের চারটিতে হারা বাংলাদেশের সেমিফাইনালের স্বপ্ন শেষের পথে।
মুম্বাইয়ে ৩৮৩ রান তাড়ায় তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস খানিকটা দেখেশুনে ব্যাটিং করছিলেন। প্রথম ৬ ওভার টিকে গেলেও সপ্তম ওভারে এসে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মার্কো জেনসেন। বাঁহাতি এই পেসারের শর্ট বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে গেছেন ১২ রান করা তানজিদ। পরের বলে আউট হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। জেনসেনের লেগ সাইডের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে ক্লাসেনের গ্লাভসে ধরা পড়েছেন তিনি। ফলে গোল্ডেন ডাক মেরে ফিরে যেতে হয় শান্ত। পরের ওভারে লিজাড উইলিয়ামসকে উইকেট দিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
ডানহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছে ১ রান। দ্রুতই তিন উইকেট হারানোর পর মুশফিকুর রহিমের দায়িত্ব ছিল লিটনকে সঙ্গে নিয়ে বিপদ সামাল দেয়া। তবে সেটা করতে পারলেন না বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। জেরাল্ড কোয়েতজের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খেলতে গিয়ে ডিপ থার্ডম্যানে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৮ রান করা মুশফিক।
অভিজ্ঞ এই ব্যাটার ফেরার পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটনও। কাগিসো রাবাদার বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়েছেন ২২ রান করা এই ওপেনার। উইকেটে থিতু হলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। কেশভ মহারাজের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়েছেন ১১ রান করা এই ব্যাটার। এদিকে তিন চারে ১৯ বলে ১৯ রান করে আউট হয়েছেন নাসুম আহমেদ। ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে একপ্রান্ত আগলে রেখে হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা। রাবাদার বলে এক রান নিয়ে ৬৭ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন তিনি। মুস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সেঞ্চুরিও পূর্ণ করেছেন মাহমুদউল্লাহ। রাবাদার বলে এক রান নিয়ে ১০৪ বলে ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি। আগের দুটি করেছিলেন ২০১৫ বিশ্বকাপে। তবে সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। আউট হয়েছেন ১১১ রানের ইনিংস খেলে। মুস্তাফিজ ১১ রানে ফিরলে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশ।
দীর্ঘ সময় পর ইংল্যান্ডের ওয়ানডে একাদশে রুট
৬ ফেব্রুয়ারি ২৫
এর আগে দ্রুত দুই উইকেট হারালেও সাউথ আফ্রিকাকে পথ দেখান কুইন্টন ডি কক ও এইডেন মার্করাম। তাদের দুজনের শতরানের জুটিতে বড় রানের পথে হাঁটে প্রোটিয়ারা। সেখান থেকে সাউথ আফ্রিকার রান ৩৮২ রানে নিয়ে গেছেন ১৭৪ রান করা ডি কক এবং ৯০ রানের ইনিংস খেলা হেনরিখ ক্লাসেন। যদিও একটা সময় মনে হচ্ছিল অনায়াসে ৪০০ রান হয়ে যাবে। তবে সেটা শেষ পর্যন্ত হয়নি। এদিকে ম্যাচ জিততে বাংলাদেশকে করতে হবে ৩৮৩ রান।
টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে দেখেশুনেই ব্যাটিং শুরু করেছিলেন ডি কক ও রেজা হেনড্রিকস। তবে তাদের খানিকটা চাপে রেখেছিলেন শরিফুল ইসলাম ও মিরাজ। ইনিংসের সপ্তম ওভারে এসে বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন শরিফুল। বাঁঁহাতি এই পেসারে গুড লেংথ ডেলিভারিতে সোজা ব্যাটে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন হেনড্রিকস। আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা এই ব্যাটার এদিন আউট হয়েছেন ১২ রান করে।
পরের উইকেট পেতে বাংলাদেশকে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। মিরাজের স্কিড করা ডেলিভারিতে লেগ সাইডে পুশ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে লেগ বিফোর উইকেট হয়েছেন রাসি ভ্যান ডার ডাসেন। প্রোটিয়া এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে এসেছে ৭ বলে ১ রান। দ্রুতই দুই উইকেট হারানোর পর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন ডি কক ও মার্করাম। দেখেশুনে ব্যাটিং করা ডি কক হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৪৭ বলে। আরেক ব্যাটার মার্করামের হাফ সেঞ্চুরি পেতে খেলতে হয়েছে ৫৭ বল।
দুজনের জুটি একশ পার হওয়ার পর সাকিবের টসড আপ ডেলিভারিতে ডাউন দ্য উইকেটে এসে লং অফের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন মার্করাম। এদিন প্রোটিয়াদের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা মার্করাম আউট হয়েছেন ৬০ রানে। মার্করাম আউট হওয়ার পর ১০১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ডি কক। সেঞ্চুরি পাওয়ার পর ঝড় তোলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দিয়েছেন ক্লাসেন। ডানহাতি এই ব্যাটার হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৩৪ বলে।
সেঞ্চুরির পর সাকিবের এক ওভারেই দুই ছক্কা ও দুই চারে ডি কক নেন ২১। পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের ওপর চড়াও হন ক্লাসেন। সেই ওভার থেকে আসে আরও ১৭ রান। শেষদিকে ডি ককের ঝড় থামিয়েছেন হাসান মাহমুদ। হাসানের করা লো ফুল টস বলে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে নাসুম আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার। ডি কক আউট হয়েছেন ১৭৪ রানের ইনিংস খেলে। শেষ দিকে ক্লাসেন ৯০ এবং ডেভিড মিলার অপরাজিত ৩৪ রানের ক্যামিও খেললে সাউথ আফ্রিকা থামে ৩৮২ রানে। বাংলাদেশের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন হাসান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
সাউথ আফ্রিকা- ৩৮২/৫ (৫০ ওভার) (ডি কক ১৭৪, মার্করাম ৬০, ক্লাসেন ৯০, মিলার ৩৪*)
বাংলাদেশ- ২৩৩/১০ (৪৬.৪ ওভার) (তানজিদ ১২, লিটন ২২, মুশফিক ৮, মিরাজ ১১, মাহমুদউল্লাহ ১১১; কোয়েতজে ৩/৬২)