হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

ছবি: সংগৃহীত

|| ডেস্ক রিপোর্ট ||
এশিয়া কাপ সেপ্টেম্বরে, ভারত-পাকিস্তান লড়াই দেখা যেতে পারে ৩ বার
২৭ ফেব্রুয়ারি ২৫
ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুশমান্থ চামিরারা না থাকায় খানিকটা দ্বিতীয় সারির বোলিং লাইন আপ নিয়েই খেলতে নামতে হয়েছে শ্রীলঙ্কাকে। তবুও মাথিশা পাথিরানা, মাহিশ থিকশানাদের সামনে নাজমুল হোসেন শান্ত ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে কেউই দাঁড়াতে পারেননি। ১৬৫ রান তাড়ায় শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ শুরুতেই দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে খানিকটা আশা দেখিয়েছিলেন। তবে সাদিরা সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালঙ্কার হাফ সেঞ্চুরি সব শেষ করে দিয়েছে বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত তাদের দুজনের হাফ সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা। তাতে হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করল বাংলাদেশ।
১৬৪ রানের পুঁজি নিয়ে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দিলেন বোলাররা। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে বাংলাদেশকে উইকেট এনে দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ডানহাতি এই পেসারের ফুলার লেংথ ডেলিভারি খানিকটা ভেতরে ঢুকছিল, বলের লাইন মিস করায় বোল্ড হয়েছেন দিমুথ করুনারত্নে। বাঁহাতি এই ব্যাটার আউট হয়েছেন মাত্র ১ রানে। এদিকে আরেক ওপেনার পাথুম নিশানকাকে ফিরিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।
বাঁহাতি এই পেসারের বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট চালিয়ে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন নিশানকা। ডানহাতি এই ওপেনার আউট হয়েছেন ১৪ রানে। তাতে মাত্র ১৫ রানেই শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিলেন বাংলাদেশের পেসাররা। এরপর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন কুশল মেন্ডিস এবং সাদিরা সামারাবিক্রমা। তাদের দুজনের জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান।
বাঁহাতি এই স্পিনারের আর্ম বলে বোল্ড হয়েছেন ভুগতে থাকা মেন্ডিস। তিনে নামা এই ব্যাটার এদিন আউট হয়েছেন ২১ বলে ৫ রান করে। এরপর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন সামারাবিক্রমা ও চারিথ আসালঙ্কা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে থাকেন তারা দুজন। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৫৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সামারাবিক্রমা। এদিকে উইকেটের খোঁজে ক্লান্ত বাংলাদেশ।
অবশেষে উইকেটের দেখা পেয়েছে সাকিবের দল। সামারাবিক্রমা ও আসালঙ্কার ৭৮ রানের জুটি ভাঙেন শেখ মাহেদি। ডানহাতি এই স্পিনারের বলে একটু এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে স্টাম্পিং হয়েছেন সামারাবিক্রমা। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটার আউট হয়েছেন ৫৪ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলে। সামারাবিক্রমাকে স্টাম্পিং করে চতুর্থ উইকেটকিপার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০ স্টাম্পিং করার কীর্তি গড়লেন মুশফিক।
এদিকে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে থিতু হতে দেননি সাকিব। বাংলাদেশের অধিনায়কের বলে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ২ রান করা এই ব্যাটার। এরপর শ্রীলঙ্কাকে আর কোন উইকেট হারাতে দেননি আসালঙ্কা ও দাসুন শানাকা। তারা দুজনে মিলে শ্রীলঙ্কার ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন। আসালঙ্কা অপরাজিত ছিলেন ৬২ রানের ইনিংস খেলে। বাংলাদেশের হয়ে দুটি উইকেট নিয়েছেন সাকিব। একটি করে উইকেট শিকার করেছেন মাহেদি, শরিফুল ও তাসকিন।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাকিব অবশ্য বেশ সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে দলের ব্যাটাররা সেটাকে ভুল প্রমাণ করেছেন। এদিন বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে তরুণ বাঁহাতি ব্যাটার তানজিদ হাসান তামিমের। যদিও অভিষেকে আলো ছড়াতে পারেননি তিনি। থিকশানার বলে শূন্য রানে এলবিডব্লিউ করে আউট হয়েছেন এই ওপেনার।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে জিসানের ব্যাটে আবাহনীর জয়
৬ ঘন্টা আগে
তানজিদ ফেরার পর নাইম শেখ ও নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন। নাইম বেশ ভালো শুরুও করেছিলেন। ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে লেংথ বলে অ্যাক্রোস দ্য লাইন খেলতে গিয়ে পয়েন্টে পাথুম নিশাঙ্কাকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন। সাকিব এদিন চার নম্বরে নেমে থিতু হতে পারেননি। তিনি ৫ রান করে মাথিশা পাথিরানার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন।
অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট লেংথ ডেলিভারি কাট করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক কুশাল মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দেন সাকিব। দলীয় ৩৬ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে এরপর পথ দেখিয়েছেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়। দলীয় পঞ্চাশ পেরুতে খেলতে হয়েছে ১৩ ওভার পর্যন্ত। দুজনই দেখে শুনে বুঝে শট খেলেছেন। ৬৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন শান্ত।
শান্তর হাফ সেঞ্চুরির পরই আউট হয়েছেন হৃদয়। তিনি ৪১ বলে ২০ রান করে এলবিডব্লিউ হয়েছেন। শানাকার অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বল এগিয়ে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেছেন হৃদয়। শুরুতে তাকে আউট দেননি আম্পায়ার। শ্রীলঙ্কা রিভিউ নিলে দেখা যায় বলের ইম্পেক্ট ও হিটিং দুটোই লাইনের মধ্যে। ফলে থার্ড আম্পায়ার তাকে আউট করেন। এরপর মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে আরেকটি জুটি গড়েন শান্ত। তবে এই জুটিতে ভাঙন ধরিয়েছেন পাথিরানা।ৎ
এই লঙ্কান পেসারের করা ওয়াইড লেন্থের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ থার্ড ম্যান অঞ্চলে করুনারত্নের সহজ ক্যাচ হয়ে ফেরেন মুশফিক। তার ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ১৩ রান। এর আগেই একবার মুশফিকের ব্যাটে বল লেগে বল চলে গিয়েছিল উইকেটরক্ষকের হাতে। তবে আম্পায়ার ও লঙ্কান ফিল্ডারদের কেউই বুঝতে পারেননি। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে বল উইকেটরক্ষকের হাতে যাওয়ার আগে মুশফিকের ব্যাটে আলতো করে ছুঁয়ে গিয়েছিল।
বাংলাদেশ দলের আক্ষেপ বাড়িয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজের রান আউট। যদিও আউট হতে পারতেন দারুণ খেলতে থাকা শান্ত। তবে ভাগ্য জোরে বেঁছে যান তিনি। কাসুন রাজিথার করা লেংথ বলে স্কয়ার লেগে ঠেলে দিয়ে শান্তকে রানের জন্য কল দিয়েছিলে শান্ত। কল পেতে শান্ত ছুটেছেন স্ট্রাইকিং প্রান্তে। তবে খানিক বাদেই মিরাজ মতো বদলে স্ট্রাইকিং অ্যান্ড থেকে যান। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা বল হাতে নিয়েই ছুড়ে মারেন নন স্ট্রাইকিং প্রান্তে। ফলে যেকোনো এক ব্যাটারকে আউট হতে হতো।
টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় মিরাজের আগে শান্তই স্ট্রাইকিং প্রান্তে ঢুকে গেছেন। ফলে ১১ বলে ৫ রান করা মিরাজকে আউট হয়ে যেতে হয়। এরপর উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি প্রায় আড়াই বছর পর দলে ফেরা শেখ মেহেদী। ???িনি দুনিথ ওয়েলালাগের বলে আউট হন এলবিডব্লিউ হয়ে। ১৬ বলের ইনিংসে তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৬ রান। ১২১ বলে ৮৯ রান করে শান্ত হয়েছেন বোল্ড।
থিকশানার বলে বলের লাইন মিস করে ফিরতে হয়েছে তাকে। তাসকিন আহমেদ থিকশানার বলে পাথিরানাকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন কোনো রান না করেই। এরপর বেশিদূর এগোতে পারেনি বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমানকে এলবিডব্লিউ করে আউট করে বাংলাদেশের ইনিংস গুটিয়ে দেন পাথিরানা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ- ১৬৪/১০ (৪২.৪ ওভার) (তানজিদ ০, নাইম ১৬, সাকিব ৫, হৃদয় ২০, শান্ত ৮৯; পাথিরানা ৪/৩২, থিকশানা ২/১৯)
শ্রীলঙ্কা- ১৬৫/৫ ( ৩৯ ওভার) (নিশানকা ১৪, সামারাবিক্রমা ৫৪, আসালঙ্কা ৬২*; তাসকিন ১/৩৪, শরিফুল ১/২৩, সাকিব ২/২৯)